New tender for Rupnarayanpur Toll Plaza পশ্চিম বর্ধমান জেলার সালানপুর ব্লকের রূপনারায়ণপুর টোল প্লাজার নতুন টেন্ডারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে। বহুদিন ধরেই পুরনো টেন্ডারে চলছিল এই টোল প্লাজা, যা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। অবশেষে জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউরী ঘোষণা করেছেন, আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই নতুন টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। দীর্ঘদিন ধরে নতুন টেন্ডার না হওয়ায় স্থানীয় মানুষজন এবং রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, কেন এখনো পর্যন্ত পুরনো ঠিকাদারি সংস্থাই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
একাধিকবার অভিযোগ উঠেছিল, পুরনো সংস্থার কার্যকলাপ এবং কর্মীদের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে কোনো নজরদারি নেই। এমনকি, টোল প্লাজায় কাজ করা শ্রমিকদের অভিযোগ, তাঁরা নিয়মিত বেতন পেলেও পিএফ ও ইএসআই-এর মতো প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধাগুলি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। ফলে নতুন টেন্ডার হলে এই বিষয়গুলোর দিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। টোল প্লাজার কর্মীদের দাবি, “নতুন ঠিকাদার সংস্থা যদি আসে, তাহলে আমাদের সঠিক সুবিধা দিতে হবে। শুধুমাত্র বেতন পেলেই হবে না, শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা এবং ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে পিএফ ও ইএসআই চালু করা উচিত।”
স্থানীয় এক বাসিন্দার মতে, “এই টোল প্লাজার টেন্ডার নিয়ে অনেকদিন ধরেই দুর্নীতি চলছে। নতুন টেন্ডার হলে, সেটা যেন স্বচ্ছভাবে হয়।” জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, নতুন টেন্ডার হলে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হতে পারে। বর্তমানে রূপনারায়ণপুর টোল প্লাজার ব্যবস্থাপনা কেমন, আদৌ কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে। পুরনো ঠিকাদারি সংস্থা যদি নতুন টেন্ডারে অংশগ্রহণ করতে চায়, তবে তাদের কাজের স্বচ্ছতা ও কর্মীদের সুরক্ষার দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নতুন টেন্ডার হলে টোল প্লাজার আয়, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং যানবাহন চলাচলের গতিবিধির উপরেও নজর দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। স্থানীয় প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, “জেলা পরিষদের তরফ থেকে টোল প্লাজার আয়ের হিসাব এবং কর্মীদের সুবিধা নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ এসেছে। নতুন টেন্ডার হলে, এসব বিষয়ের সমাধান করার দায়িত্ব নতুন ঠিকাদারি সংস্থার থাকবে।” রূপনারায়ণপুর টোল প্লাজার দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানের আশায় রয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষও। তাঁরা চান, টোল প্লাজার ব্যবস্থাপনা আরও স্বচ্ছ হোক এবং যান চলাচল সহজতর হোক।

বিশেষত, বড় গাড়িগুলোর যাতায়াতের সময় যাতে অযথা যানজট না হয়, সেই দিকটিতেও নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন অনেকে। এছাড়াও, টোল প্লাজার আধুনিকীকরণের দাবি তুলেছেন কিছু পরিবহন সংস্থা। তাঁরা চান, এখানে স্বয়ংক্রিয় টোল সংগ্রহ ব্যবস্থা চালু করা হোক, যাতে টোল আদায় আরও দ্রুত এবং ডিজিটাল মাধ্যমে হয়। প্রসঙ্গত, পশ্চিম বর্ধমান জেলা ২০১৭ সালে তৈরি হলেও, রূপনারায়ণপুর টোল প্লাজার টেন্ডার নতুন করে ডাকা হয়নি, যা নিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতেও সরগরম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। জেলা পরিষদের সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষ আশাবাদী যে, নতুন টেন্ডারের মাধ্যমে টোল প্লাজার ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত হবে এবং শ্রমিকদের সমস্যাগুলি দূর হবে। তবে নতুন ঠিকাদারি সংস্থা আসার পরেও এই পরিবর্তন বাস্তবে কতটা কার্যকর হয়, সেটাই দেখার বিষয়।