Monsoon forecast for South Bengal:শেষ পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার আগমন ঘণ্টা বাজিয়ে দিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। গত কয়েকদিন ধরে যে গরম আর অস্বস্তি রাজ্যজুড়ে মানুষকে হাঁসফাঁস করাচ্ছিল, এবার তার অবসান ঘটতে চলেছে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দারা ইতিমধ্যেই কালো মেঘের ছায়ায় আবদ্ধ আকাশ, মাঝে মাঝে হালকা বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন। শনিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি হতে শুরু করেছে বলে জানানো হয়েছে। বিশেষ করে মঙ্গল ও বুধবারের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, দক্ষিণবঙ্গে আগামী দু-তিন ঘণ্টার মধ্যে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আবহাওয়াবিদ মৃণাল কান্তি দাস জানিয়েছেন, “বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এটি শক্তি সঞ্চয় করলে বর্ষার আগমনের পথ তৈরি হবে দক্ষিণবঙ্গে।” ফলে কৃষক, জলবায়ু নির্ভরশীল শ্রমজীবীরা এবং বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল ব্যবসায়ীদের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খবর।
এদিকে বৃষ্টির পূর্বাভাস শোনার পর থেকেই কৃষিজীবীরা নেমে পড়েছেন মাঠে। অনেকেই বীজতলা প্রস্তুতের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুরের একজন কৃষক, গণেশ পাত্র বলেন, “বর্ষা ঠিক সময়ে এলে ধানচাষ ভালো হবে। গত বছর খুব দেরিতে বর্ষা এসেছিল, তাই উৎপাদন কম হয়েছিল। এবছর আশা করছি ভালো ফলন হবে।” পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলাগুলিতে প্রবল দুর্যোগের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে সপ্তাহান্তে। পাহাড়ি এলাকায় ধস নামার ঝুঁকি এড়াতে প্রশাসনকে আগে থেকেই সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলায় আপাতত ভ্যাপসা গরম ও আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থাকবে বলেই অনুমান করা হচ্ছে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৫৮ থেকে ৯০ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে, যা দিনে দিনে আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।

শনিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আগামী ২৪ ঘণ্টায় তা ২৮ থেকে ৩৪ ডিগ্রির মধ্যে থাকবে বলে জানা গিয়েছে। ফলে অস্বস্তি থেকে তাৎক্ষণিক স্বস্তি না মিললেও বৃষ্টির আগমন দক্ষিণবঙ্গের বাতাসে কিছুটা আরাম আনবে বলেই আশা।স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। বৃষ্টি শুরু হলে কোথাও জল জমে না যায়, তার জন্য আগেভাগেই শহরের নিকাশি ব্যবস্থা পরিদর্শন শুরু করেছে পুরসভা। কলকাতা পুরসভার এক কর্মী জানিয়েছেন, “বৃষ্টির জেরে যদি জল জমে যায়, তবে রাস্তাঘাটে যানজট ও জনজীবন ব্যাহত হতে পারে। তাই আমরা আগে থেকেই প্রস্তুত থাকছি।” একইসঙ্গে দুর্যোগ মোকাবিলায় বিপর্যয় মোকাবিলা দল ও দমকল বিভাগকেও সতর্ক রাখা হয়েছে।