Monkeys hit the limit with thrilling boundary draws : রবিবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে এক উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে মোহনবাগান এবং ওডিশা এফসি মুখোমুখি হয়েছিল, এবং শেষ পর্যন্ত স্কোরলাইন দাঁড়িয়েছিল ১-১। আইএসএল-এর এই ম্যাচটি ছিল খুবই আকর্ষণীয় এবং উদ্দীপনাপূর্ণ, যেখানে মোহনবাগান পিছিয়ে থেকেও এক অসাধারণ ড্র এনে খেলাটি শেষ করেছে। এই ম্যাচটি আবারো দেখিয়ে দিল, কলকাতা ফুটবলের ঐতিহ্য এবং রোমাঞ্চ এখনও হারিয়ে যায়নি এবং সমর্থকদের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো কিছু মুহূর্ত এখনও বাকি রয়েছে।
ওডিশা এফসি-এর বিরুদ্ধে ম্যাচের শুরুর দিক থেকেই মোহনবাগান দলটি তাদের গতিময় ফুটবল এবং শক্তিশালী প্রতিরোধের পরিচয় দেয়। তবে প্রথমার্ধের এক ভুলের জন্যই সবুজ মেরুনকে গোল হজম করতে হয়। ম্যাচের ৩৭তম মিনিটে, সিকিমের প্রতিভাবান ডিফেন্ডার আশিষ রায় একটি ব্যাক পাস দেন, যা গোলরক্ষক বিশাল কাইত ধরে ফেলতে বাধ্য হন। সেই পাস থেকে ওডিশা এফসি একটি ইনডাইরেক্ট ফ্রিকিক পায় এবং সেখান থেকেই তারা এক গোলে এগিয়ে যায়। আশিষের এই ভুলটি অনেককেই স্মরণ করিয়ে দিল সেই ঐতিহাসিক ঘটনার কথা, যখন ৮০-র দশকে ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্ডার চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়ের ব্যাক পাস থেকে মোহনবাগান স্ট্রাইকার মানস ভট্টাচার্য গোল করেছিলেন।
যদিও আশিষ রায়ের ভুলের জন্য ওডিশা এফসি এগিয়ে যায়, তবুও মোহনবাগান দল পিছিয়ে পড়েও দৃঢ় মনোবল নিয়ে খেলায় ফিরে আসে। দ্বিতীয়ার্ধে সবুজ মেরুন ব্রিগেড তাদের আক্রমণের গতি আরও বাড়িয়ে দেয় এবং ওডিশার প্রতিরোধ ভেঙে ফেলার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চালায়। অবশেষে ম্যাচের ৭৮তম মিনিটে, মোহনবাগানের গুরুত্বপূর্ণ স্ট্রাইকাররা এক অসাধারণ সমন্বয়ের মাধ্যমে সমতা ফিরিয়ে আনেন। এই গোলটি সমর্থকদের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং খেলার গতি অনেকটা বেড়ে যায়।
মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনা ম্যাচ শেষে বলেন, “এইরকম ভুলে খুশি হওয়া যায় না, তবে দলের খেলোয়াড়রা যেভাবে লড়াই করেছে, তা আমাকে অনেকটাই স্বস্তি দিয়েছে। পিছিয়ে পড়েও তারা নিজেদের সামর্থ্য দেখিয়েছে।” মোলিনার কথায় বোঝা যায়, তিনি দলের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট, যদিও এই ধরনের ভুল তাদের জন্য হতাশাজনক ছিল।
এই ম্যাচে মোহনবাগান তাদের টানা তিনটি ক্লিন চিটের রেকর্ড হারায়, যা দলের মনোবলকে সামান্য হলেও নাড়া দিয়েছে। তবে খেলার শেষে দেখা যায়, সমর্থকরা তাদের প্রিয় দলের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট এবং তারা বিশ্বাস করে যে এই দলটি ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
এই ম্যাচটি কেবল মোহনবাগানের জন্য নয়, বরং সমগ্র ভারতীয় ফুটবল সম্প্রদায়ের জন্য এক বড় প্রভাব ফেলেছে। কলকাতার মানুষ, বিশেষ করে সবুজ-মেরুনের ভক্তরা, এই ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছেন এবং এটি প্রমাণ করে দিয়েছে যে কলকাতা ফুটবলে এখনও প্রাণের ছোঁয়া রয়েছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের ম্যাচগুলি কলকাতার ফুটবল পরিবেশকে আরও রোমাঞ্চিত করবে এবং নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করবে।

মোহনবাগানের এই ম্যাচে পাওয়া অভিজ্ঞতা দলটির ভবিষ্যৎ ম্যাচগুলিতে কাজে আসবে। আশিষ রায়ের ভুলের জন্য দলকে গোল হজম করতে হলেও, এর থেকে শিক্ষা নিয়ে তারা আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবে। সমর্থকরা আশা করছেন, এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে দল আগামী ম্যাচগুলোতে আরও প্রস্তুত হয়ে মাঠে নামবে এবং তাদের লড়াইয়ে আরও জোরদার পারফরম্যান্স দেখাবে।
এই উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচটি প্রমাণ করে দিল, কলকাতার ফুটবল শুধু অতীতের গৌরব নয়, বরং বর্তমানেও সমানভাবে জীবিত। সবুজ মেরুনের এই ড্রটি দলকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হতে সহায়ক হবে এবং তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস যোগাবে।