Thursday, July 10, 2025
Google search engine
Homeটপ 10 নিউসদেশব্রাজিল ও নামিবিয়ার সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানে ভূষিত মোদি

ব্রাজিল ও নামিবিয়ার সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানে ভূষিত মোদি

Modi conferred with highest civilian honours of Brazil and Namibia : ভারতের বর্তমান রাজনীতির এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়ের নাম নরেন্দ্র মোদি। বিশ্বের নানা প্রান্তে তাঁর নেতৃত্ব ও কূটনৈতিক তৎপরতার স্বীকৃতি পাচ্ছেন তিনি বারবার। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল ব্রাজিল এবং নামিবিয়ার নাম, যেখানে দু’টি দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানে ভূষিত হলেন তিনি। ৬ ও ৭ জুলাই ব্রাজিলের রিও ডে জেনেইরো শহরে অনুষ্ঠিত ব্রিকস (BRICS) সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আর সেখানেই এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকল গোটা বিশ্ব, যখন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা তাঁকে সম্মানিত করলেন ‘দ্য গ্র্যান্ড কলার অফ দ্য ন্যাশনাল অর্ডার অফ দ্য সাউদার্ন ক্রস’ উপাধিতে। এটা ব্রাজিল সরকারের তরফে কোনও বিদেশি রাষ্ট্রনায়ককে দেওয়া সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান।

এই সম্মানের পিছনে ছিল ভারত-ব্রাজিল কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে মোদির অব্যাহত প্রচেষ্টা, দক্ষিণ গোলার্ধের উন্নয়নশীল দেশগুলির স্বার্থে তাঁর কণ্ঠস্বর, এবং জলবায়ু, কৃষি, প্রযুক্তি ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রগুলিতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর আন্তরিক চেষ্টার স্বীকৃতি। ব্রাজিল সরকারের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বে ভারত ও ব্রাজিলের মধ্যে বন্ধুত্ব, সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক সমস্যাগুলির সমাধানে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে।” পাশাপাশি এই বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে আগামী পাঁচ বছরে ২০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যিক লক্ষ্যমাত্রা স্থির হয়েছে, যা ভারত-ব্রাজিল সম্পর্ককে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। ব্রাজিল সফর শেষে মোদি পাড়ি দেন দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ নামিবিয়ায়। এটি ছিল তাঁর প্রথম নামিবিয়া সফর এবং একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হয়ে উঠল, যখন নামিবিয়ার প্রেসিডেন্ট নেতুম্বো নন্দি-নদাইতওয়া তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘অর্ডার অফ দ্য মোস্ট অ্যাসিয়েন্ট ওয়েলউইচিয়া মিরাবিলিস’ প্রদান করেন। এই সম্মান সেইসব বিদেশি নেতাদের দেওয়া হয়, যারা নামিবিয়ার সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্ব, সহযোগিতা এবং উন্নয়নমূলক কাজের ক্ষেত্র প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “নামিবিয়া ও ভারতের সম্পর্ক শুধু কূটনৈতিক নয়, বরং মানবিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে গভীর। এই সম্মান আমি ভারতের ১৪০ কোটির মানুষের তরফে গ্রহণ করলাম।” তিনি আরও জানান, এই সফরে দুই দেশের মধ্যে শক্তি, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি ও পশু সংরক্ষণ নিয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আফ্রিকান চিতার ভারতে প্রত্যাবর্তনের প্রসঙ্গটি। মোদির এই সম্মান প্রাপ্তি নিঃসন্দেহে তাঁর কূটনৈতিক দক্ষতা এবং ভারতের আন্তর্জাতিক অবস্থানকে আরও দৃঢ় করছে।

modi lula

তাঁর ঝুলিতে এখন ২৬টি আন্তর্জাতিক সম্মান, যা একজন রাষ্ট্রনায়কের পক্ষে এক বিরল রেকর্ড। এই সফর ভারতের বিদেশনীতি ও বিশ্ব মঞ্চে দৃষ্টিভঙ্গির যে কতটা পরিবর্তন এনেছে, তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদনে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক অশোক দাস বলেন, “মোদির এই সম্মান শুধুই ব্যক্তিগত কৃতিত্ব নয়, এটি ভারতের সoft power এবং উদীয়মান ভূ-রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভাবের প্রতীক।” আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মোদির এই উত্থান একদিকে যেমন ভারতের জন্য গৌরবের বিষয়, অন্যদিকে, আগামী দিনে আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার সঙ্গে আরও গভীর বাণিজ্যিক ও কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলার পথ প্রশস্ত করবে। আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে মোদি এখন এক ‘game changer’ নেতার প্রতীক। তাঁর এই সম্মানপ্রাপ্তি শুধুই রাজনীতিক কৌশলের ফল নয়, বরং একজন রাষ্ট্রনায়কের বহুমাত্রিক ভূমিকাকে আন্তর্জাতিক পরিসরে স্বীকৃতি দেওয়া। কূটনীতির এই নতুন অধ্যায়ে ভারত এখন শুধু অনুসরণকারী নয়, বরং সিদ্ধান্ত নির্মাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে – আর সেই গল্পের নেতৃত্বে রয়েছেন নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments