MLA visits Salanpur to bring transparency in SIR form:-সালানপুর ব্লকের মহিষামুড়া আর জেমারী—দুটি সাধারণ গ্রাম, কিন্তু আজকের সকালটা যেন একেবারে অন্যরকম। মানে, সেই ভোরবেলা থেকেই গ্রামের পথঘাটে একটা কৌতূহলের হাওয়া বইছিল। ছোট ছোট দলে দাঁড়িয়ে মানুষ কথা বলছে, কেউ মোবাইলে খবর দেখছে, কেউ আবার দূর থেকে রাস্তা চেয়ে আছে। কারণও বড়—আজ বারাবনি বিধায়ক তথা আসানসোল পৌর নিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায় সরাসরি গ্রামে এসে যাচ্ছেন। উদ্দেশ্য একটাই—‘Sir’ স্কিমের ফর্ম ফিলআপ, যাচাই ও জমা দেওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটাকে নিজের চোখে দেখে স্বচ্ছতা বজায় রাখা, যাতে মানুষ পরিষেবা পেতে কোনও সমস্যায় না পড়ে।

মহিষামুড়ায় পৌঁছেই বিধায়ককে ঘিরে ধরলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কারো মুখে আশা, কারো মনে কিছু উদ্বেগ। দুপুরের রোদ মাথার ওপর, কিন্তু তার মাঝেই মাঠের ধারে দাঁড়িয়ে একে একে সাধারণ মানুষের মতামত শুনলেন বিধায়ক। খুব সহজ ভাষায় জিজ্ঞেস করলেন—স্থানীয় বাসিন্দা গিরিশ বারিক, যিনি বয়সে পঞ্চাশ পেরিয়েছেন, ধীর গলায় বললেন, “মশাই, আগে এসব কাজে কত দৌড়ঝাঁপ করতে হত, কিন্তু এবার ফর্মটা হাতে পেয়েছি ঠিকঠাক। তবে বানাতে গিয়ে একটু ভুল করেছিলাম, সেটাই বুঝতে পারছিলাম না।”
তখনই বিধায়ক পাশে থাকা ব্লক কর্মীদের ডেকে বললেন, “মানুষের সুবিধাটা আগে দেখতে হবে। ভুল থাকলে ঠিক করে দাও, কাউকে যেন ফেরত পাঠানো না হয়।”এমন প্রত্যক্ষ তদারকি মানুষকে শুধু স্বস্তিই দেয়নি, বরং একটা আস্থার জায়গাও তৈরি করেছে। কারণ “Sir” স্কিম—যা মূলত মানুষের সামাজিক ও নানান পরিষেবা পাওয়ার প্রক্রিয়াকে সহজ করার জন্য চালু হয়েছে—গ্রামে গ্রামে পৌঁছচ্ছে ঠিকমতো কি না, সেটাই এখন প্রশাসনের কাছে সবচেয়ে বড় বিষয়।

মহিষামুড়া থেকে জেমারীতে পৌঁছতেই পরিবেশ আরও সরগরম। গ্রামের মোড়ে, দোকানের সামনেই দল বেঁধে মানুষ দাঁড়িয়ে ছিল। তাঁরা জানতেন—আজ মেয়র সাহেব আসছেন। তাঁর আগমনের গুরুত্বও আলাদা। কারণ একদিকে প্রশাসনের প্রধান প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর দায়িত্ব, অন্যদিকে জনতার কাছে একজন সহজ-সরল মানুষের মতো তাঁর গ্রহণযোগ্যতা।দোকানের সামনে দাঁড়ানো মলিনা দেউত, যিনি স্বামীকে হারিয়ে একাই সংসার চালান, বললেন, “আমি ভেবেছিলাম ফর্মটা পাব না। কিন্তু সকালের দিকেই আমাদের বাড়িতে তৃণমূলের ছেলেরা ফর্ম দিয়ে গেল। এখন শুনলাম মেয়র সাহেব নিজে এসে দেখছেন। এটা তো আমাদের জন্য খুবই ভালো।”বিধায়কের কথায় তখনও একই সুর—“যে পরিবারই সরকারি পরিষেবার আওতায় আসবে, তারা যেন ফর্ম পায়। কেউ বাদ পড়লে সেটা আমার কাছে সরাসরি অভিযোগ হিসেবে আসবে।”



