MLA inaugurates Kanupoyaryhat Bridge in Ramnagar: দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হলো অবশেষে। রামনগরের ভূঞাজিবাড় কানুপয়ড়্যাহাটে বহু প্রতীক্ষিত ব্রিজটির উদ্বোধনের দিন উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি। বছর বছর ধরে বাঁশের সাঁকো, কাদা, জল পেরিয়ে মানুষজন যাতায়াত করতেন এই রুটে। বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠত। রোগী পরিবহণে হতো দেরি, ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে পৌঁছতে হতো নানা কষ্টে, আর ব্যবসায়ীদের তো বাধ্য হয়েই অনেক ক্ষেত্রেই পণ্যে পচন ধরে যাওয়া সত্ত্বেও বাজারে পৌঁছাতে হতো। এমন কঠিন পরিস্থিতির অবসান ঘটিয়ে অবশেষে কানুপয়ড়্যাহাটে তৈরি হলো পাকা ব্রিজ, যা উপকৃত করবে চারটি পঞ্চায়েত—বাদলপুর, সাটিলাপুর, কাদুয়া ও মৈতনা। ব্রিজ উদ্বোধনের সময় এলাকার মানুষজন আবেগে ভাসলেন। কেউ হাতে চাল-ডাল নিয়ে এলেন, কেউ আবার বিধায়ককে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানালেন। প্রায় ৯৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৪.৫ মিটার প্রস্থের এই ব্রিজটি তৈরি হয়েছে রাজ্য সরকারের গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায়।
নির্মাণের কাজ করেছে একটি সরকারি অনুমোদিত সংস্থা এবং ব্রিজের স্থায়িত্ব বাড়াতে ব্যবহার করা হয়েছে কংক্রিট ফ্রেম ও স্টিলের মিশ্র স্ট্রাকচার। নির্মাণ প্রক্রিয়ায় বর্ষা, কাঁচামালের ঘাটতি ও শ্রমিক সমস্যা থাকলেও শেষমেশ সরকার ও প্রশাসনের উদ্যোগে কাজ শেষ হয়। প্রাক্তন মন্ত্রী অখিল গিরি উদ্বোধনের সময় বলেন, “মানুষের দাবি ছিল এই ব্রিজ। আমরা কথা দিয়েছিলাম, কথা রেখেছি। তৃণমূল সরকার মানুষের জন্য, উন্নয়নের জন্য।” স্থানীয় মানুষ যেমন খুশি, তেমনি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মুখেও হাঁসির ছাপ। কারণ এই ব্রিজ চালু হওয়ায় একাধিক স্কুল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছাতে সুবিধা হবে। হাইস্কুলে যাওয়া ছেলেমেয়েরা আর আর্থিক ও শারীরিক কষ্ট নিয়ে জল পেরোবে না, রোগী নিয়ে হুইলচেয়ার বা খাটিয়ায় ঝুঁকি নিয়ে যেতে হবে না। কৃষকরাও তাঁদের উৎপাদিত ধান, সবজি ও ফলমূল দ্রুত বাজারে পৌঁছে দিতে পারবেন। এখন স্থানীয় কৃষকরা পিকআপ ভ্যান কিংবা ট্র্যাক্টরে করে পণ্য পাঠাতে পারবেন বাজারে, যার ফলে দামও বেশি পাওয়া যাবে।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2024/08/Akhil-Giri-1.jpg)
এই ব্রিজকে ঘিরে বাড়বে ছোট ছোট ব্যবসা, তৈরি হবে কর্মসংস্থান। রাস্তাঘাট উন্নয়নের মাধ্যমে এই এলাকার অর্থনৈতিক প্রবাহ আরও সচল হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও উদ্বোধনের আনন্দ থাকলেও প্রশ্ন রয়ে যায় রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে। স্থানীয় পঞ্চায়েত জানিয়েছে, তারা একটি ব্রিজ রক্ষণাবেক্ষণ কমিটি গঠন করবে এবং সেখানে আলো, সিসিটিভি ও নিয়মিত সাফাইয়ের ব্যবস্থা রাখা হবে। কারণ ব্রিজ তৈরি মানেই দায়িত্ব শেষ নয়, সেটা ধরে রাখা ও সঠিকভাবে ব্যবহার করাও অত্যন্ত জরুরি। আজকের দিনে ব্রিজটি একটি প্রতীক—এটা কেবলমাত্র একটি যাতায়াতের মাধ্যম নয়, এটা উন্নয়নের, আশার এবং মানুষের সম্মিলিত প্রয়াসের প্রতীক। দীর্ঘ ৫০ বছরের অপেক্ষার পরে আজ রামনগরের মানুষের চোখে-মুখে যেন শুধুই একটাই কথা—”এবার আমরা সত্যিই এগিয়ে চলেছি।”