Saturday, April 19, 2025
Google search engine
Homeবিনোদনতারকাপ্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পথে মিঠুন অঞ্জনার নতুন ছবি

প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পথে মিঠুন অঞ্জনার নতুন ছবি

Mithun Anjana’s new film on its way to theaters:বাংলা চলচ্চিত্র প্রেমীদের জন্য আবারো সুখবর নিয়ে এসেছে টলিউড, কারণ শীঘ্রই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে চলেছে বিখ্যাত পরিচালক পথিকৃৎ বসুর নতুন ছবি “শ্রীমান v/s শ্রীমতি”। এই ছবিটি শুধু একটি ভালোবাসার গল্প নয়, এটি আমাদের সমাজে বর্তমান সম্পর্কের টানাপোড়েন, বিচ্ছেদের পরেও টিকে থাকা ভালোবাসার অনুভূতি এবং সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে তৈরি এক নতুন প্রয়াস। মূল চরিত্রে রয়েছেন আমাদের সবার প্রিয় মিঠুন চক্রবর্তী এবং অসাধারণ অভিনেত্রী অঞ্জনা বসু, যারা দীর্ঘদিন পরে আবার একসঙ্গে পর্দায় ফিরছেন। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, মধুমিতা সরকার, রোশমি ভট্টাচার্য এবং আরও অনেকে। ছবির মূল গল্প আবর্তিত হয়েছে এক দম্পতির বিচ্ছেদের পরে কীভাবে তাদের মধ্যে ভালোবাসা ধীরে ধীরে আবার গড়ে ওঠে — ঠিক যেন জীবনের বাস্তব এক প্রতিচ্ছবি।

article

পরিচালক পথিকৃৎ বসু বলেন, “আজকের সমাজে বিচ্ছেদ যেমন স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে, তেমনই ভালোবাসাও সহজে ফুরিয়ে যায় না। এই সিনেমার মাধ্যমে আমি বলতে চেয়েছি, ভালোবাসা সবসময় একটা সুযোগ চায়, আর মানুষ যদি চায়, তবে পুরনো সম্পর্কও নতুন করে শুরু হতে পারে।” বৃহস্পতিবার এই সিনেমার অন্যতম গান “আমি ফিরেছি ঘরে”-র উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় দক্ষিণ কলকাতার আশুতোষ কলেজে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী, অঞ্জনা বসু, পথিকৃৎ বসু, মধুমিতা সরকার সহ সিনেমার আরও কলাকুশলী ও ছাত্রছাত্রীরা। গানটি ইতিমধ্যেই ইউটিউবে ভাইরাল হয়ে উঠেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে এক ভীষণ সংবেদনশীল মুহূর্ত — বিচ্ছেদে ক্লান্ত দুজন মানুষ আবার ঘরে ফেরার চেষ্টা করছেন। অনুষ্ঠানে মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, “এই চরিত্রটা আমার জীবনের অনেকটা কাছাকাছি। অনেক সময় আমরা নিজেরাই বুঝতে পারি না কখন দূরত্ব তৈরি হয়, আর কখন সেটা ঘুচিয়ে নেওয়া যায়। এই ছবি সেই হারিয়ে যাওয়া সম্পর্ককে ফিরিয়ে আনার কথা বলে।” অঞ্জনা বসুও বলেন, “আমার অভিনয় জীবনে এমন চরিত্রে কাজ করতে পেরে আমি খুবই গর্বিত। নারী হিসেবে এই চরিত্রের ভাঙাগড়া, শক্তি, আবেগ — সবকিছু ফুটিয়ে তোলাটা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল।” বর্তমান সময়ে যখন OTT প্ল্যাটফর্ম ও ওয়েব সিরিজের ভিড়ে প্রেক্ষাগৃহে ছবি মুক্তি একপ্রকার ঝুঁকির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, ঠিক সেই সময়েই এই সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে চলেছে ২০২৫ সালের ১লা মে, যা একদিকে সাহসী পদক্ষেপ, অন্যদিকে বাংলা সিনেমার নতুন পথ দেখানো। প্রেক্ষাগৃহমুখী দর্শকদের জন্য এটি হতে পারে একটি আবেগঘন অভিজ্ঞতা, কারণ এই ছবি শুধুমাত্র বিনোদন নয়, জীবনের এক বাস্তব রূপও তুলে ধরে। সিনেমার গল্প, সংলাপ, আবহসংগীত — সব মিলিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ পারিবারিক ছবি হতে চলেছে “শ্রীমান v/s শ্রীমতি”। বাংলার সংস্কৃতিমনস্ক সমাজে এই সিনেমা নতুন করে ভাবতে শেখাবে সম্পর্ক, ভালোবাসা ও ক্ষমা নিয়ে।

অনেক দর্শক ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবির ট্রেলার ও গান দেখে আবেগে ভেসে গেছেন। অনেকে লিখেছেন, “মিঠুনদার মতো একজন কিংবদন্তিকে এমন একটি সংবেদনশীল চরিত্রে দেখে চোখে জল এসে গেল।” কেউ কেউ লিখেছেন, “এই ছবির সংলাপগুলো যেন নিজের জীবনের কথা মনে করিয়ে দেয়।” এই রকম প্রতিক্রিয়াগুলি প্রমাণ করে, মানুষের মন আজও ভালো গল্প চায়, সত্যি গল্প চায় — আর “শ্রীমান v/s শ্রীমতি” ঠিক সেটাই দিতে চলেছে। এই সিনেমার মাধ্যমে পরিচালক পথিকৃৎ বসু শুধু একটি প্রেমের গল্প বলেননি, বরং সমাজের একটা বড় অংশকে প্রশ্ন করেছেন — আমরা কি সত্যিই সম্পর্কের মর্ম বুঝি? নাকি সামান্য ভুল বোঝাবুঝিতেই ছেড়ে দিই সবকিছু? সিনেমার অন্যান্য চরিত্র যেমন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং মধুমিতা সরকারও এই গল্পে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন। তাদের অভিনয় দর্শকদের একদিকে যেমন হাসাবে, অন্যদিকে ভাবিয়েও তুলবে। সিনেমাটির চিত্রগ্রহণ, ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর, পোশাক — সবকিছুই দর্শকদের এক পরিপূর্ণ অভিজ্ঞতা দেবে।

SHREEMAN VS SHREEMATI 3e65f510 113a 11f0 ac8c 93d19273dc5b

আশুতোষ কলেজে গান প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ ও ভালবাসা ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেকেই বলছিলেন, “এই রকম সিনেমা আজকাল খুব কম দেখা যায়। আমরা খুবই অপেক্ষায় রয়েছি ১লা মে প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে এই ছবি দেখব।” এরকম একটি শক্তিশালী কাস্ট, গঠনমূলক গল্প এবং হৃদয়স্পর্শী আবহসঙ্গীত নিয়ে “শ্রীমান v/s শ্রীমতি” হতে চলেছে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন। এই সিনেমা যদি সাফল্য পায়, তবে ভবিষ্যতে আরও অনেক নির্মাতা সাহস পাবে প্রেক্ষাগৃহে আবেগঘন গল্প নিয়ে আসার। শুধু শহর নয়, জেলার প্রেক্ষাগৃহগুলোতেও এই ছবি দর্শক টানবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ছবিটির মুক্তির পর স্থানীয় ব্যবসাও চাঙ্গা হতে পারে, বিশেষত সেই সব অঞ্চলে যেখানে সিনেমা হলে দীর্ঘদিন দর্শক কমে গিয়েছিল। সেই হিসেবে এই সিনেমা কেবল বিনোদন নয়, এক ধরনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাবও ফেলতে পারে। সবমিলিয়ে, “শ্রীমান v/s শ্রীমতি” আমাদের শুধু ভালোবাসার গল্প বলবে না, আমাদের ভিতরের সম্পর্কগুলোকে নতুন করে ভাবতে শেখাবে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে হয়তো এমন কিছু মানুষ আছে, যাদের সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়া ভেঙে গেছে, অথচ সেই সম্পর্ক আজও কোথাও রয়ে গেছে। এই ছবি সেই সম্পর্কগুলোকে আবার নতুন করে দেখতে সাহায্য করবে। এখন শুধু অপেক্ষা ১লা মে’র, যখন আমরা সবাই মিলে প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে ফিরে দেখব — হারানো ভালোবাসা ফিরে পাওয়ার গল্প।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments