...
Thursday, April 3, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যবিশ্বকে এবার সমুদ্রের নীচ দিয়ে জুড়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিল মেটা

বিশ্বকে এবার সমুদ্রের নীচ দিয়ে জুড়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিল মেটা

Meta takes on the responsibility of connecting the world under the sea : মার্ক জুকারবার্গের নেতৃত্বাধীন সংস্থা মেটা এবার পৃথিবীর অন্যতম সাহসী ডিজিটাল প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সংস্থাটি ঘোষণা করেছে ‘প্রোজেক্ট ওয়াটারওর্থ’, যা সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে বিশাল ফাইবার নেটওয়ার্ক স্থাপন করবে, সংযুক্ত করবে বিশ্বের একাধিক দেশকে। প্রায় ৫০,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নেটওয়ার্ক যুক্ত করবে আমেরিকা, ভারত, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা-সহ আরও বেশ কিছু দেশকে। এটি শুধু এক প্রযুক্তিগত বিপ্লব নয়, বরং একটি নতুন যুগের সূচনা যেখানে ইন্টারনেট সংযোগ আরও শক্তিশালী ও দ্রুততর হবে।এই প্রকল্পের সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি, শিল্প এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে। বর্তমানে ভারত ইতিমধ্যেই বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল ডিজিটাল অর্থনীতি, যেখানে ইন্টারনেট সংযোগের চাহিদা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ফাইবার নেটওয়ার্ক চালু হলে ভারতের গ্রামীণ এলাকাগুলিতেও সুপারফাস্ট ইন্টারনেট সহজলভ্য হবে, যা নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং ব্যবসার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।

ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, “এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডিজিটাল লেনদেন আরও মসৃণ হবে, ব্যবসা-বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে, এমনকি শিক্ষাখাতেও বড় পরিবর্তন আসবে।” অনেকেই মনে করছেন, এটি ভারতের ৫জি প্রযুক্তির বিস্তারে বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে।এই প্রকল্পে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে সমুদ্রের প্রায় ৭,০০০ মিটার গভীরে বসানো হচ্ছে ২৪ জোড়া ফাইবার অপটিক কেবল। এতদিন যেখানে শুধুমাত্র ৮ বা ১৬ জোড়া ফাইবার ব্যবহার করা হতো, সেখানে এবার এর দ্বিগুণেরও বেশি ফাইবার সংযুক্ত হচ্ছে। এর ফলে ইন্টারনেটের গতি যেমন বাড়বে, তেমনি সংযোগও হবে আরও নির্ভরযোগ্য।

9 20241201051206

শুধু ভারত নয়, এই প্রকল্পের কারণে ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলিও বিপুলভাবে উপকৃত হবে। বর্তমানে এই দেশগুলির বহু প্রত্যন্ত অঞ্চলে উচ্চ গতির ইন্টারনেট সংযোগের অভাব রয়েছে। এই নতুন নেটওয়ার্ক চালু হলে সেখানে নতুন শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এবং অনলাইন ব্যবসা গড়ে উঠতে পারবে।ব্রাজিলের এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “এই নেটওয়ার্কের সাহায্যে ব্রাজিলের প্রত্যন্ত এলাকায় ইন্টারনেট পৌঁছানো সম্ভব হবে, যা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন আনবে।”

বেশিরভাগ মানুষ প্রশ্ন করছেন, সমুদ্রের এত গভীরে এই ফাইবার বসানোর পরেও এটি কতটা নিরাপদ থাকবে? প্রকল্পের প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞদের মতে, ফাইবার কেবলসমূহকে এমনভাবে স্থাপন করা হবে, যাতে সেগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শূন্যের কাছাকাছি থাকে।তবে, সমুদ্রপথে চলাচলকারী বড় নৌযানের জন্য কিছু বাড়তি সতর্কতার প্রয়োজন হতে পারে। কারণ, জাহাজগুলোর অ্যাংকর বা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার সময় ব্যবহৃত ভারী নেট কখনো কখনো কেবল ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এজন্য সমুদ্রপথে বিশেষ নেভিগেশন সতর্কতা জারি থাকবে এবং কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলে জাহাজ চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আনা হতে পারে।

এই প্রকল্প শুধু প্রযুক্তিগত দিক থেকেই নয়, বিশ্ব রাজনীতির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগ উন্নত করার মাধ্যমে মেটা তার নিয়ন্ত্রণ আরও দৃঢ় করতে পারবে, যা ব্যবসায়িকভাবে গুগল ও আমাজনের মতো বড় সংস্থাগুলোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এগিয়ে রাখবে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “এই নেটওয়ার্ক তৈরি হলে মেটা ভবিষ্যতে ক্লাউড কম্পিউটিং, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এবং মেটাভার্স-ভিত্তিক পরিষেবাগুলিকে আরও উন্নত করতে পারবে, যা আগামী দশকের মধ্যে আমাদের ডিজিটাল জীবনে বিশাল পরিবর্তন আনতে পারে।”

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.