Massive fire breaks out at Darjeeling tourist spot:দার্জিলিংয়ের অপূর্ব সৌন্দর্যের মাঝে আচমকাই এক ভয়াবহ বিপর্যয়! পর্যটকদের স্বর্গ বলে পরিচিত এই পাহাড়ি শহর এবার দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী থাকল। সোমবার রাতে দার্জিলিংয়ের পুলবাজার বিজনবাড়ি ব্লকের অধীনে মেগিটারের কাছে কাইলাজয় জঙ্গলে ভয়াবহ আগুন লাগে। রাতের অন্ধকারে আচমকা আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, চারদিক ছেয়ে যায় ধোঁয়ায়। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে ধোঁয়ার গন্ধ পান, তারপর চোখে পড়ে ভয়ানক লাল আগুনের আঁচ। ঠিক কীভাবে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়, তবে ধারণা করা হচ্ছে, শুকনো আবহাওয়ার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই অঞ্চলে তেমন জনবসতি নেই, তাই কোনো প্রাণহানির খবর এখনো পাওয়া যায়নি। কিন্তু এর প্রভাব পড়েছে প্রকৃতির ওপর। জঙ্গলের বিশাল অংশ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, বহু শতবর্ষ পুরোনো গাছ ভস্মীভূত হয়েছে, এবং সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হল—এই দাবানলে বেশ কিছু বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও সঠিক পরিসংখ্যান এখনও জানা যায়নি, তবে পরিবেশবিদদের আশঙ্কা, জঙ্গলের বাস্তুতন্ত্রের উপর বড়সড় প্রভাব ফেলবে এই আগুন।স্থানীয় পরিবেশবিদ সোমনাথ দত্ত বলেন, “এই জঙ্গল বহু পশুপাখির আবাসস্থল। আগুনের ভয়ানক তাপে অনেক পশু হয়তো দিকভ্রান্ত হয়ে পালিয়ে গেছে, কেউ হয়তো আগুনে পুড়ে মারা গেছে। যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে দার্জিলিংয়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবে।”অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েই পুলবাজার-বিজনবাড়ি অগ্নি নির্বাপন কেন্দ্র থেকে দমকলের একাধিক ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা শুরু হয়, তবে পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় দমকল কর্মীদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। শুকনো পাতা, ডালপালা ও গাছের কারণে আগুন ভয়াবহ রূপ নেয়, সঙ্গে দমকা হাওয়া আগুনের লেলিহান শিখাকে আরও দ্রুত ছড়িয়ে দেয়।এক দমকলকর্মী বলেন, “আমরা রাতভর চেষ্টা চালিয়েছি।

আগুন পুরোপুরি নেভানো যায়নি, তবে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। এই এলাকায় জলের সরবরাহও একটা সমস্যা, তাই আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের বেশ কষ্ট হচ্ছে।”এছাড়াও, ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে স্থানীয় পুলবাজার থানার পুলিশ, যাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ না হয়। নিরাপত্তার কারণে বেশ কিছু এলাকাকে ঘিরে দেওয়া হয়েছে।এই অগ্নিকাণ্ড নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। দার্জিলিং এমনিতেই পর্যটন নির্ভর অর্থনীতির উপর দাঁড়িয়ে আছে। যদি এই আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে পর্যটকদের সংখ্যা কমতে পারে, যা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জন্য বড়সড় ধাক্কা হবে।স্থানীয় বাসিন্দা রবি থাপা বলেন, “এই এলাকা আমাদের জীবিকা নির্ভরশীল। পর্যটকরা যদি এই ধরনের ঘটনায় ভয় পেয়ে আসা বন্ধ করে দেন, তাহলে আমরা বড় সমস্যায় পড়ে যাব।”এই অগ্নিকাণ্ডের প্রভাব শুধু পরিবেশ নয়, অর্থনীতির উপরেও পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে, আগুনের প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখা হবে এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা এড়ানো যায়, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।