Many pilgrims are captivated by the beauty of Ganges while visiting the Ganges:কথায় আছে ‘সব তীর্থ বারবার গঙ্গাসাগর একবার’। সেই গঙ্গাসাগরে তীর্থ করতে যাওয়ার পথে শুক্রবার সকালে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে, যা সমগ্র এলাকাকে শোকাহত করেছে। মহারাষ্ট্রের প্রায় ৩৬ জন পুণ্যার্থী নিয়ে একটি বাস কচুবেড়িয়া বাস স্ট্যান্ড থেকে কপিলমুনি মন্দিরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। চৌরঙ্গী এলাকার কাছে হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি রাস্তার পাশে একটি খালে উল্টে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভাঙা জানালা দিয়ে আহত পুণ্যার্থীদের উদ্ধার করেন। আহতদের মধ্যে ৮-১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সাগর থানার পুলিশ এবং সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের সাগর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা এবং সাগরের বিডিও কানাইয়া কুমার রাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। গঙ্গাসাগর বকখালি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ভাইস চেয়ারম্যান সন্দীপ কুমার পাত্র জানান, “বাসে মোট ৩৬ জন যাত্রী ছিলেন, তাঁদের মধ্যে ৩৩ জন মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খালে পড়ে যায়।” ব্লক প্রশাসনের তরফে পুণ্যার্থীদের নিরাপদে বাড়ি ফেরার জন্য বিশেষ গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। মহারাষ্ট্রের পুণ্যার্থী লক্ষ্মণ যাদব বলেন, “গঙ্গাসাগরে পুণ্য স্নান করতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়। স্থানীয়রা দ্রুত আমাদের উদ্ধার করেন।” স্থানীয় বাসিন্দা শেখ জয়নাল আবুদিন বলেন, “সকালে দেখি একটি বাস খালে পড়ে রয়েছে।
আমরা দ্রুত যাত্রীদের উদ্ধার করি এবং প্রশাসনকে খবর দিই।” এই দুর্ঘটনা স্থানীয় সম্প্রদায়কে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। প্রতিবছর গঙ্গাসাগর মেলায় লক্ষাধিক পুণ্যার্থী আসেন, যা স্থানীয় অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই ধরনের দুর্ঘটনা পুণ্যার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারে এবং ভবিষ্যতে তীর্থযাত্রার সংখ্যা কমতে পারে। স্থানীয় প্রশাসন এবং বাস পরিষেবা প্রদানকারীদের উচিত যানবাহনের রক্ষণাবেক্ষণ এবং চালকদের প্রশিক্ষণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। এছাড়া, পুণ্যার্থীদের যাতায়াতের সময় সতর্ক থাকা এবং স্থানীয় নিয়ম-কানুন মেনে চলা উচিত।
গঙ্গাসাগর মেলায় অতীতে আরও দুর্ঘটনা ঘটেছে। মহালয়ার সময় গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নান করতে যাওয়ার পথে কাকদ্বীপে একটি দুর্ঘটনায় ১২ জন পুণ্যার্থী আহত হন। অন্যদিকে, ঘন কুয়াশার কারণে একটি ভেসেল মুড়িগঙ্গার চরে আটকে যায়, যা পুণ্যার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এই ধরনের ঘটনা পুণ্যার্থীদের জন্য ঝুঁকি বাড়ায় এবং প্রশাসনের জন্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে। স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে পুণ্যার্থীরা নিরাপদে তীর্থযাত্রা করতে পারেন এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের উপর নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।