Mamta banerjee: দার্জিলিংয়ের সরস মেলার মঞ্চ থেকে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন। তিনদিনের দার্জিলিং সফরের দ্বিতীয় দিনে ম্যাল চৌরাস্তায় এই মেলার উদ্বোধন করেন তিনি, যেখানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় মানুষ এবং পর্যটকদের ভিড়। মুখ্যমন্ত্রী এদিন শুধু মেলার উদ্বোধনই করেননি, বরং একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা প্রদান করেন। তিনি মঞ্চ থেকে মহিলাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ভূয়সী প্রশংসা করেন, উল্লেখ করেন কীভাবে এই উদ্যোগ নারীদের স্বনির্ভর করে তুলছে। তার কথায়, “মহিলারা শুধু বাড়ির কাজেই আবদ্ধ থাকবে না, তারা হস্তশিল্পের মাধ্যমে নিজেরাই স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারবেন।”

মুখ্যমন্ত্রী দার্জিলিংয়ের চায়ের গুণগান করে আরও জানান যে, এই চা আন্তর্জাতিক মঞ্চেও জনপ্রিয়। আমেরিকায় একটি ওয়েটিং লাউঞ্জে ‘দার্জিলিং টি’ লেখা দেখে তার গর্ববোধ হয়েছিল। তবে তিনি এদিন দার্জিলিং চায়ের নামে কিছু ব্যবসায়ীর প্রতারণার কথাও উল্লেখ করেন, যারা ‘দার্জিলিং টি’ এর নাম ব্যবহার করে খারাপ মানের চা বিক্রি করছেন। এই সমস্যার সমাধানে তিনি একটি সিস্টেম তৈরি করার কথাও বলেন, যাতে দার্জিলিং চায়ের নামের বদনাম না হয়।
এদিনের বক্তব্যে তিনি কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে তার অসন্তোষ প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, কেন্দ্র পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য রাজ্যকে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করে না। পর্যটন এবং হোমস্টে প্রকল্পের প্রসঙ্গে তিনি জানান, দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় হোমস্টে স্থাপনের জন্য ১৪০০ জনকে ১২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকার বেশি ইনসেনটিভ দেওয়া হয়েছে, যা স্থানীয় মানুষদের অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করে তুলছে। তিনি বলেন, “আমি চাই, পাহাড়ের মানুষ ঘরে বসেই ব্যবসা করতে পারেন, বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না।”
এই সরস মেলাটি স্থানীয় হস্তশিল্প, খাদ্য সামগ্রী এবং শিল্পকর্মের প্রচার এবং বিক্রির একটি বড় মঞ্চ হিসেবে পরিচিত। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অংশগ্রহণে এই মেলা আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। স্থানীয়দের মতে, এই মেলা শুধু ব্যবসায়িক সুযোগই দেয় না, বরং মহিলাদের ক্ষমতায়নেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
মুখ্যমন্ত্রীর দার্জিলিং সফরের এই মেলার মঞ্চ থেকে তার কেন্দ্রের প্রতি এই বক্তব্য রাজনৈতিক মহলেও আলোড়ন তুলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বার্তা পাহাড়ের মানুষের জন্য নতুন দিশা হিসেবে কাজ করবে এবং রাজ্যের উন্নয়নকে আরও গতিশীল করবে।