Saturday, April 12, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যবাংলাদেশে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের মারধরের অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বেগ

বাংলাদেশে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের মারধরের অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বেগ

Mamata Banerjee: বাংলাদেশে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের ওপর মারধরের ঘটনা ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। সোমবার গঙ্গাসাগরের মঞ্চ থেকে এই বিষয়ে কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি প্রায় আড়াই মাস বাংলাদেশে বন্দি থাকার পর দেশে ফিরেছেন ৯৫ জন মৎস্যজীবী। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের শারীরিক অবস্থা দেখে উদ্বিগ্ন হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, “তাঁদের হাত-পা দড়ি দিয়ে বেঁধে মোটা লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে। কয়েকজন খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন। তাঁদের চোটের কথা পরে জানতে পারি।” এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোক এবং ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশি জলসীমায় ঢুকে পড়ার কারণে তাঁদের আটক করা হয়। আইনি প্রক্রিয়ার নাম করে তাঁদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হতে হয়। একজন মৎস্যজীবী বলেন, “আমাদের দড়ি দিয়ে বেঁধে মারা হয়। আমরা ভাবছিলাম, হয়তো বাড়ি ফিরতে পারব না।” মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের প্রত্যেককে আর্থিক সহায়তা হিসাবে ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন। যাঁর মৃত্যু হয়েছে, তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেন ২ লক্ষ টাকা।

1736160617 fisherman

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন স্পষ্ট জানান, দুই দেশের সম্পর্ক যেন মানবিকতার বন্ধনে আবদ্ধ থাকে। তিনি বলেন, “আমাদের মৎস্যজীবীরা যাতে সীমানা না-পার করেন, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। ঝড়-জলের মধ্যে অনেক সময় সীমানা নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়ে, কিন্তু জীবন আগে। মাছ উঠলে উঠবে, না উঠলেও চলবে। আগে জীবন বাঁচাতে হবে।” পাশাপাশি, তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশি একটি ট্রলারও ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়েছিল। তাঁদের যথাযথ চিকিৎসা এবং সাহায্য করার পর দেশে ফেরত পাঠানো হয়। মমতা বলেন, “আমি চাই, আমাদের সৌহার্দ্য বজায় থাকুক। তবে এভাবে মৎস্যজীবীদের ওপর অত্যাচার মেনে নেওয়া যায় না।”

মৎস্যজীবীদের সাহায্যের জন্য রাজ্য সরকার একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে। ‘সমুদ্রসাথী’ প্রকল্পে ঝড়-জলের মরসুমে মৎস্যজীবীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়া ‘মৎস্যজীবী বন্ধু’ প্রকল্পে মৃত্যুর পর পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। ষাটোর্ধ্ব মৎস্যজীবীদের মাসিক পেনশন এবং ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “জলাশয়গুলিকে কার্যকরভাবে ব্যবহারের জন্য পাঁচ লক্ষ পুকুর কাটা হয়েছে, যা রাজ্যের মাছের উৎপাদন বাড়িয়েছে।”

এই ঘটনাটি দুই দেশের সম্পর্কের নাজুক দিকটি তুলে ধরেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে স্পষ্ট যে, রাজ্য সরকার মানবিকতার মান বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। মৎস্যজীবীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি। এই ঘটনার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক এবং সীমানা সংক্রান্ত সমস্যা আরও গভীর আলোচনার দাবি রাখে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments