Friday, April 11, 2025
Google search engine
HomeUncategorisedমমতা অভিষেককে তীব্র নিশানা শুভেন্দু অধিকারীর

মমতা অভিষেককে তীব্র নিশানা শুভেন্দু অধিকারীর

Mamata Abhishek is fiercely targeted by Subhendu Adhikari:শনিবার নদীয়ার শান্তিপুরে এক ব্যতিক্রমী ঘটনার সাক্ষী রইল বাংলার মাটি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব—মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়—কে তীব্র আক্রমণ শানালেন। শুভেন্দুর বক্তব্যে উঠে এলো সীমান্ত নিরাপত্তা, ধর্মীয় বৈষম্য, এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতার অভিযোগ। তাঁর বক্তব্যের মধ্যে যে কড়া রাজনৈতিক বার্তা ছিল, তা শুধু মঞ্চে থেমে থাকেনি, বরং তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্যের প্রতিটি কোণে।

শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “ধর্মীয় উৎপিড়নের কারণে যে সমস্ত হিন্দুরা এখানে চলে আসছে, তাদের বেছে বেছে গ্রেফতার করে জেলে ভরছে পুলিশ। অথচ রোহিঙ্গা মুসলিমদের জায়গা দিচ্ছে তৃণমূল।” এর সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেন, “এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর ভাইপো বিএসএফদের কাজ করতে বাধা দিচ্ছে। অথচ সীমান্ত এলাকায় নকল আধার কার্ড ও ভোটার আইডি তৈরির মতো গুরুতর অপরাধে তৃণমূল নেতারা জড়িত। এটা অবিলম্বে এনআইএ-এর তদন্তের আওতায় আনা উচিত।”

9k=

এই উত্তাল বক্তৃতা হয় নদীয়ার শান্তিপুরে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ হ্যান্ডলুম টেকনোলজির নতুন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। এই প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ ছিল প্রায় ৮০ কোটি টাকা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী গিরিরাজ সিং, যিনি নিজেও মঞ্চ থেকে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যে এই অনুষ্ঠান রাজনৈতিক মঞ্চে পরিণত হয়।

শুভেন্দুর বক্তব্যে মূলত তিনটি বিষয় উঠে আসে:শুভেন্দু দাবি করেন, তৃণমূল সরকার ধর্মীয় কারণে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে। তিনি বলেন, “যাঁরা বাংলাদেশ থেকে নির্যাতিত হয়ে আসছেন, বিশেষত হিন্দু সম্প্রদায়, তাঁদের প্রতি সরকারের কোনো সহানুভূতি নেই। অথচ রোহিঙ্গাদের মতো বহিরাগতদের বসতি দেওয়া হচ্ছে।” শুভেন্দুর অভিযোগ, রাজ্যের সীমান্ত এলাকাগুলিতে বিএসএফদের কাজ করতে দিচ্ছে না তৃণমূল সরকার। “প্রায় ৬০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিএসএফ কাজ করতে পারছে না। এতে শুধুমাত্র নিরাপত্তার অভাব নয়, নকল আধার ও এপিক কার্ড তৈরির মাধ্যমে তৃণমূল নেতারা ভোট ব্যাঙ্ক তৈরির পরিকল্পনা করছে,” বলেন শুভেন্দু শুভেন্দুর মতে, বর্তমান তৃণমূল সরকার রাজ্যের কোটি কোটি মানুষের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। সীমান্ত এলাকাগুলির পরিস্থিতি, যেমন চোরাচালান, নকল পরিচয়পত্র তৈরি, এবং অনুপ্রবেশের মতো বিষয়গুলি তুলে ধরেন তিনি।

    শুভেন্দু শুধু তৃণমূল সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতাকে আক্রমণ করেই থামেননি। তিনি সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বলেন, “এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর ভাইপো শুধু বিভেদ নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা বিএসএফদের গালাগালি দিচ্ছেন, অথচ সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান ও অপরাধমূলক কাজকর্মের কোনো প্রতিকার নেই।”

    তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে শুভেন্দুর এই বক্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে দেরি হয়নি। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম শুভেন্দুর বক্তব্যকে ‘রাজনৈতিক নাটক’ বলে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, “শুভেন্দু নিজেই চোরাচালান ও দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন। এখন বিজেপির হয়ে রাজনীতি করছেন। রাজ্যের মানুষ সব বুঝে গেছেন।”নদীয়ার সাধারণ মানুষের মধ্যে এই বক্তব্য ঘিরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যে সীমান্ত এলাকার বাস্তব সমস্যাগুলি তুলে ধরা হয়েছে। অন্যদিকে, কিছু মানুষ শুভেন্দুর বক্তব্যকে সরাসরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন।

    2Q==

    এই বক্তব্যের মাধ্যমে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের অভিযোগগুলি সামনের নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে। সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা, ধর্মীয় বৈষম্য এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতার মতো বিষয়গুলি ভোটারদের মধ্যে বিতর্কিত হয়ে উঠতে পারে।শুভেন্দু অধিকারীর এই বক্তব্য শুধু রাজ্যের প্রশাসনকে আক্রমণ নয়, এটি কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজনকেও উসকে দিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এই তোপ, তৃণমূলের রাজনীতিতে বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারে। তবে রাজ্যের সাধারণ মানুষ এই রাজনৈতিক উত্তেজনার শেষ কোথায় দেখতে চান, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -
    Google search engine

    Most Popular

    Recent Comments