Makar came to the bath and the two youths drowned in victory দুর্গাপুর থানার চাষিপাড়া সংলগ্ন টালিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা রাহুল রাই (১৫) এবং শুভম মণ্ডল (১৭) অজয় নদে মকরের পূর্ণস্নানে নেমে তলিয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার সাড়ে চারটের সময় এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। পূর্ণাথীদের স্নানের সময় ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনা এলাকায় শোক এবং ক্ষোভের সঞ্চার করেছে।
চার বন্ধু মিলে দুর্গাপুর থেকে অজয় নদে পূর্ণস্নানের উদ্দেশ্যে এসেছিলেন। তবে সাঁতার না জানার কারণে স্নানের সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাহুল এবং শুভম গভীর জলে তলিয়ে যায়। তাদের আরেক বন্ধু দেবাশীষ সান্যাল জানান, “আমাদের দামোদরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত বদলে আমরা জয়দেবের মেলায় আসি। স্নানের সময় হঠাৎ চিৎকার শুনি, কিন্তু সাঁতার না জানার কারণে কাউকে সাহায্য করতে পারিনি।
আমাদের দুই বন্ধু চোখের সামনে তলিয়ে গেল।”ঘটনার পরপরই কাঁকসা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু দ্রুত উদ্ধারকারী দল না পৌঁছানোয় পূর্ণাথীরা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের দাবি, দুর্ঘটনার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হলে হয়তো দুই কিশোরকে বাঁচানো যেত। স্থানীয় এক পূর্ণাথী বলেন, “প্রতিবছর এখানে মকরের সময় ভিড় হয়, কিন্তু উদ্ধারকারী দলের তৎপরতা একেবারেই নেই। যদি আগে থেকে উপযুক্ত ব্যবস্থা থাকত, তাহলে এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা এড়ানো যেত।”অজয় নদে মকর সংক্রান্তির সময় হাজার হাজার মানুষ পূর্ণস্নান করতে আসেন। কিন্তু প্রশাসনের তরফে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না বলেই অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।
সাঁতারের অদক্ষতার কারণে অনেক পূর্ণাথী এই ধরনের বিপদের মুখোমুখি হন, এবং নদীর গভীর জল অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে এত বড় সমাগমের সময় নিরাপত্তা এবং উদ্ধার ব্যবস্থার অভাব প্রশাসনের দায়িত্ব নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছে।তলিয়ে যাওয়া কিশোরদের বন্ধুরা এবং পরিবারের সদস্যরা শোকে ভেঙে পড়েছেন। তাদের বন্ধু দেবাশীষ বলেন, “আমি যদি সাঁতার জানতাম, তাহলে হয়তো ওদের বাঁচাতে পারতাম।

চোখের সামনে আমার দুই বন্ধু জলে হারিয়ে গেল, কিন্তু কিছু করতে পারিনি।”স্থানীয় বাসিন্দারা এবং পূর্ণাথীরা এই ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানোর দাবি তুলেছেন। তারা বলেছেন, “অজয় নদে পূর্ণস্নানের সময় নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত লাইফগার্ড এবং উদ্ধারকারী দল থাকা জরুরি। প্রশাসন যদি এই বিষয়ে তৎপর না হয়, তাহলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”এই দুর্ঘটনা স্থানীয় প্রশাসন এবং পূর্ণস্নান কমিটির জন্য এক বড় শিক্ষা। স্নান স্থলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং উদ্ধারকারী দল রাখার পাশাপাশি সাঁতার না জানলে নদীর গভীরে না যাওয়ার জন্য সচেতনতা প্রচার করা উচিত। মেলায় অংশ নেওয়া পূর্ণাথীদের জন্য লাইফজ্যাকেট এবং সাঁতার শেখানোর প্রাথমিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।মকরের পূর্ণস্নান এমন একটি পবিত্র অনুষ্ঠান যেখানে মানুষ ভক্তিভরে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু নিরাপত্তার অভাব এবং প্রশাসনিক গাফিলতির কারণে এই ধরনের দুর্ঘটনা মেলার আনন্দকে বিষাদে পরিণত করছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।