Madhyamik candidates in uncertainty due to admit card outage আর কিছুদিন পরই মাধ্যমিক পরীক্ষা। ছাত্র-ছাত্রীদের প্রস্তুতি তুঙ্গে, অভিভাবকদের মধ্যেও উত্তেজনা। তবে এমন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সদর শহর তমলুকের রাজকুমারী শান্তনাময়ী গার্লস হাই স্কুলের এক ছাত্রী অ্যাডমিট কার্ড না পাওয়ায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অসতর্কতার কারণেই এই বিভ্রাট বলে জানা যাচ্ছে।জানা গেছে, এই স্কুলে স্বস্তিকা মাইতি নামে দুই ছাত্রী একসঙ্গে পড়াশোনা করত।
মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনের সময় দুজনের নাম একসঙ্গে নথিভুক্ত করা হলেও, পরে স্বস্তিকা মাইতি নামে এক ছাত্রী (যার বাবার নাম মানস মাইতি) স্কুল ছেড়ে চলে যায়। এই বছরই প্রথমবার মাধ্যমিক পরীক্ষার অনলাইন রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়। সেই সময় ভুলবশত স্কুল ছেড়ে দেওয়া স্বস্তিকা মাইতির নামেই ফরম পূরণ করে ফেলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এরপর যখন পরীক্ষার্থীদের স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়, তখন বর্তমান স্বস্তিকা মাইতি অভিভাবকের নাম ভুল থাকা সত্ত্বেও স্বাক্ষর করে দেয়। কেউই তখন গুরুত্ব দেয়নি বিষয়টিকে। কিন্তু সমস্যা প্রকট হয় গত ৩০শে জানুয়ারি ২০২৫, যখন স্কুলে পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড এসে পৌঁছায়। ৩১শে জানুয়ারি অ্যাডমিট কার্ড বিতরণের সময় দেখা যায়, স্কুলে উপস্থিত স্বস্তিকা মাইতির অ্যাডমিট কার্ডের অভিভাবকের নাম মানস মাইতি লেখা রয়েছে, অর্থাৎ যে ছাত্রী স্কুল ছেড়েছে তার নামেই এই অ্যাডমিট তৈরি হয়েছে।স্বস্তিকা মাইতি ও তার পরিবার এই পরিস্থিতিতে প্রবল উদ্বেগের মধ্যে পড়েছেন। মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার স্বপ্ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
মা-বাবা বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তারা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সমস্যার সমাধান চেয়েছেন, কিন্তু এখনো কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে ১লা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্ষদে যোগাযোগ করে। প্রধান শিক্ষিকা সহ দুই সহকারী শিক্ষিকা বিষয়টি পর্ষদের নজরে আনেন। প্রথমদিকে কিছুটা আশ্বাস দেওয়া হলেও, পরে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে প্রধান শিক্ষিকা পর্ষদে ই-মেইল পাঠিয়ে সমস্যার সমাধানের অনুরোধ করেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো সদুত্তর মেলেনি।এই ঘটনার পর শিক্ষামহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
শিক্ষাবিদদের মতে, অনলাইন রেজিস্ট্রেশন চালুর পরও এই ধরনের ভুল হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, রেজিস্ট্রেশনের সময় স্কুল কর্তৃপক্ষ কেন বাড়তি সতর্কতা নিল না? একই নামের দুই ছাত্রীর ক্ষেত্রে বাড়তি যাচাই করা উচিত ছিল।এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনও বিষয়টি নজরে এনেছে। অনেকেই বলছেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জন্য একজন পরীক্ষার্থীকে তার স্বপ্ন বিসর্জন দিতে হবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দ্রুত সমাধানের জন্য তারা পর্ষদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।এই ঘটনার পর অনেক বিদ্যালয়ই নিজেদের নথি পুনরায় যাচাই করছে, যাতে ভবিষ্যতে এমন সমস্যা আর না হয়। একইসঙ্গে, অভিভাবকদেরও সতর্ক হতে বলা হচ্ছে যাতে তারা রেজিস্ট্রেশন ও অন্যান্য নথি ভালোভাবে পরীক্ষা করে নেন।এখন প্রশ্ন একটাই—পরীক্ষার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি, এমন সময় স্বস্তিকা মাইতি কি তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে? পর্ষদ দ্রুত হস্তক্ষেপ করলে হয়তো সমাধান সম্ভব, কিন্তু যদি দেরি হয়ে যায়, তবে একটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অন্ধকারে তলিয়ে যাবে। এই ঘটনার পর শিক্ষা ব্যবস্থায় আরও স্বচ্ছতা ও দায়িত্বশীলতার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে।