‘Lion’, the Indo-Bangladesh joint venture, roars in Tollywood in the new year:নতুন বছরে ‘Lion’ ছবির মাধ্যমে আবারও ভারত-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে নতুন এক মহাকাব্য অপেক্ষা করছে টলিউড দর্শকদের জন্য। এই ছবির শ্যুটিং ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে, এবং বিশেষ আকর্ষণীয় হল, ছবির প্রধান চরিত্রে দেখা যাবে ওপার বাংলার সুপারস্টার জিৎকে। পরিচালক রায়হান রাফি, যিনি বাংলাদেশে ‘তুফান’ এবং ‘সুড়ঙ্গ’ ছবির মাধ্যমে সুনাম অর্জন করেছেন, এবার আসছেন ‘Lion’ নামক ছবির মাধ্যমে ভারতীয় চলচ্চিত্রে আরো এক নতুন চমক নিয়ে।
‘Lion’ একটি ভারত-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হবে, এবং ছবির প্রযোজনার দায়িত্বে আছেন শ্যাম সুন্দর দে। ছবিটির বিষয়বস্তু নিয়ে রায়হান রাফি জানিয়েছেন, “এই ছবিতে শুরু করতে পেরে আমি খুব উচ্ছ্বসিত। জিৎ দা (জিৎ) একজন সুপারস্টার, আমাদের অনেক দিন ধরে আলোচনা হচ্ছিল, এবং এখন আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারছি। এটি এমন কিছু হতে চলেছে যা আগে জিৎ দা করেননি, এবং আমি চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি, ঠিক যেমন ‘সুড়ঙ্গ’, ‘তুফান’ এবং ‘পরাণ’-এর মতো ছবি ব্লকবাস্টার হয়েছে। আমি বাংলা ছবিকে নতুন মাত্রা দিতে চাই।” রাফির এই মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট যে, ‘Lion’ ছবিতে নতুন কিছু দেখার জন্য দর্শকদের প্রস্তুত থাকতে হবে।

এটা সত্যি যে, এই প্রকল্পটি টলিউডের জন্য একটি বড় অভ্যুত্থান হতে পারে। ভারতীয় চলচ্চিত্রের দর্শকরা যেভাবে জিৎকে ভালোবাসে, তেমনি বাংলাদেশেও তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। তার অভিনয়ের শক্তি এবং পর্দায় উপস্থিতি অনেকেরই কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে। এই ছবির মাধ্যমে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে বলে আশাবাদী চলচ্চিত্র প্রেমীরা। পরিচালক রায়হান রাফির কৃতিত্বের মধ্যে একটি বড় অংশ হলো তার সক্ষমতা, যা তিনি তার পূর্ববর্তী ছবিগুলির মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন। বিশেষত, ‘তুফান’ ছবিটি মুক্তির পর এটি ব্যাপক সাড়া ফেলে এবং তার দুটো গান ‘দুষ্টু কোকিল’ এবং ‘লাগে উরা ধুরা’ দর্শকদের মনে আজও বেজে চলে।
রাফি পরিচালিত ‘Lion’ ছবির গল্পের কাহিনী এখনো সেভাবে প্রকাশ করা হয়নি, তবে এটি যে এক থ্রিলিং অ্যাকশন ফিল্ম হতে চলেছে, তা সহজেই অনুমান করা যাচ্ছে। ছবির স্ক্রিপ্ট, চিত্রনাট্য এবং অভিনয়ের প্রতি গভীর মনোযোগ দিয়ে নির্মাণ করা হবে, যা সিনেমাপ্রেমীদের এক নতুন অভিজ্ঞতা উপহার দিতে সক্ষম হবে। শোনা যাচ্ছে, এই ছবিতে বেশ কিছু স্টান্ট সিকোয়েন্স এবং নাটকীয়তা থাকবে, যা সিনেমাটির আবেদনকে আরো বাড়িয়ে তুলবে।
এই ছবির মুক্তি শুধু টলিউড কিংবা বাংলাদেশে নয়, বরং দুই দেশের চলচ্চিত্র প্রেমী শ্রেণীতে এক নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করবে। বিশেষ করে, দুই দেশের শিল্পী ও নির্মাতাদের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি হবে, যা ভবিষ্যতে আরো অনেক যৌথ প্রজেক্টের সূচনা করতে পারে। এপার বাংলা এবং ওপার বাংলার মধ্যে যে সাংস্কৃতিক যোগসূত্র রয়েছে, তা এই ধরনের চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আরও দৃঢ় হতে চলেছে। ‘Lion’ ছবির মুক্তির সাথে সাথে, টলিউডের আন্তর্জাতিক মান আরো একধাপ এগিয়ে যাবে, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই ছবির প্রযোজক শ্যাম সুন্দর দে জানিয়েছেন, “এটি একটি যুগান্তকারী ছবি হতে চলেছে। জিৎ দা এবং রায়হান রাফির টিমওয়ার্ক দর্শকদের জন্য কিছু ভিন্ন উপহার নিয়ে আসবে। ‘Lion’ ছবিটি টলিউডের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়বে বলে আমাদের বিশ্বাস।” শ্যাম সুন্দরের কথাগুলো থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে, এটি শুধুমাত্র একটি সিনেমা নয়, বরং একটি নতুন যুগের সূচনা হতে পারে।
‘Lion’ ছবিটি যে এতটা গুরুত্ব পাচ্ছে, তার মূল কারণ হল যে, এটি নির্মিত হচ্ছে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে। অনেকদিন ধরেই এই দুই দেশের চলচ্চিত্র শিল্প একে অপরের কাছাকাছি আসার চেষ্টা করছে। তবে ‘Lion’ ছবির মাধ্যমে এবার তাদের সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে চলেছে। শুধুমাত্র ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বরং সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও এই ধরনের প্রজেক্ট দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্কের বন্ধন আরও দৃঢ় করবে।
এবার আসা যাক, এই সিনেমার মুক্তি থেকে স্থানীয় কমিউনিটির উপকারিতা কী হতে পারে। প্রথমত, এই ধরনের একটি বড় প্রজেক্ট স্থানীয় শিল্পী এবং টেকনিক্যাল স্টাফদের জন্য কাজের সুযোগ সৃষ্টি করবে। পরিচালক রায়হান রাফি একাধিকবার বলেছেন, “বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে অনেক সুপ্ত প্রতিভা রয়েছে। তারা আন্তর্জাতিক মানের ছবির জন্যও প্রস্তুত। ‘Lion’-এর মতো প্রজেক্ট তাদের জন্য এক বিরাট সুযোগ হতে পারে।” এই ধরনের বড় বাজেটের ছবির শ্যুটিংয়ে স্থানীয় শিল্পীদের জন্য নতুন প্রশিক্ষণ, অভিজ্ঞতা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এর ফলে স্থানীয় অর্থনীতিতেও কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
তবে এই ছবির মধ্যে অনেক চ্যালেঞ্জও থাকতে পারে। প্রথমত, দুটি দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক পার্থক্য এবং পরিচালনা শৈলীতে বিভিন্নতা থেকে কোনো না কোনো সমস্যা হতে পারে। কিন্তু রায়হান রাফির মতো অভিজ্ঞ পরিচালক এবং জিৎ এর মতো খ্যাতনামা অভিনেতার উপস্থিতি আশা করা যায়, যে কারণে এই চ্যালেঞ্জগুলো সহজেই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
সবশেষে, ‘Lion’ ছবির মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশের চলচ্চিত্র মহলের মধ্যে এক নতুন যুগের সূচনা হতে চলেছে। এটি শুধুমাত্র একটি বিনোদনমূলক কাজ নয়, বরং এটি দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্ব এবং সমঝোতারও এক নতুন দৃষ্টান্ত হতে পারে।