Kiwis crushed by Varun’s ‘Chakrabhu’, India top group : আইসিসি ইভেন্টে নিউজিল্যান্ড মানেই ভারতের জন্য এক অস্বস্তিকর প্রতিপক্ষ। ২০০০ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল থেকে শুরু করে, ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল কিংবা ২০২১ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল—বারবার ভারতকে কাঁদিয়েছে ব্ল্যাক ক্যাপসরা। তবে এবার আর সেই সুযোগ দিল না রোহিত শর্মার ভারত। ২ মার্চ দুবাইয়ের ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডকে ৪৪ রানে হারিয়ে গ্রুপ শীর্ষে থেকে সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল ভারতীয় দল। আর এই জয়ে মূল ভূমিকা রাখলেন ভারতের ‘মিস্ট্রি স্পিনার’ বরুণ চক্রবর্তী, যিনি তাঁর জাদুকরী স্পিনে কিউই ব্যাটিং লাইনআপকে ধূলিসাৎ করে দিলেন।
নিউজিল্যান্ড টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায়। তবে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি ভারতের। ফর্মে থাকা শুভমান গিল, রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি তিনজনই দ্রুত সাজঘরে ফিরে যান। মাত্র ১০ ওভারেই ভারত ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে, যার ফলে চাপ বাড়তে থাকে। কিন্তু এরপরই হাল ধরেন শ্রেয়াস আইয়ার, অক্ষর প্যাটেল এবং হার্দিক পান্ডিয়া। তিন ব্যাটারের লড়াকু ইনিংসের ফলে ভারত ২৫০ রানের সম্মানজনক স্কোর দাঁড় করায়। বিশেষ করে অক্ষর প্যাটেলের ৪৫ বলে ৫২ রানের ইনিংসটি দলকে বিপদ থেকে বের করে আনে। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ম্যাট হেনরি ৩টি এবং ট্রেন্ট বোল্ট ২টি উইকেট নেন।
কিন্তু ম্যাচের আসল নাটকীয়তা শুরু হয় নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে। ২৫০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা মোটামুটি ভালোই করেছিল কিউইরা। ডেভন কনওয়ে ও উইল ইয়ং ৫০ রানের পার্টনারশিপ গড়েন, তবে তারপরই শুরু হয় বরুণ চক্রবর্তীর স্পিন-জাদু। ১০ ওভারে ৪২ রান খরচ করে ৫টি উইকেট তুলে নেন তিনি। তাঁর বলের সামনে একের পর এক কিউই ব্যাটার পরাস্ত হতে থাকেন। কনওয়ে (৩৮), কেন উইলিয়ামসন (২৯) ও গ্লেন ফিলিপস (৩৩) কিছুটা চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। পুরো দল ৪৫.৫ ওভারে ২০৫ রানেই গুটিয়ে যায়। বরুণ ছাড়াও, জাসপ্রিত বুমরাহ ২টি এবং কুলদীপ যাদব ও হার্দিক পান্ডিয়া ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
এই জয়ের ফলে ভারত গ্রুপ পর্বে অপরাজিত থেকে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে গেল। তিনটি ম্যাচের সবকটিতেই জয় পাওয়া একমাত্র দল ভারত। সেমিফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, যাদের বিরুদ্ধে ভারতের পুরনো শত্রুতা রয়েছে। ২০২৩ বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের ক্ষত এখনো টাটকা। এবার কি সেই পরাজয়ের বদলা নিতে পারবে রোহিত ব্রিগেড? ৪ মার্চ দুবাইয়ে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া মহারণের দিকে তাকিয়ে থাকবে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব।
ম্যাচ শেষে বরুণ চক্রবর্তী বলেন, “এই পারফরম্যান্স আমার কাছে খুব স্পেশাল। নিউজিল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে ৫ উইকেট নেওয়া বড় ব্যাপার। দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরে ভালো লাগছে।” ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেন, “শুরুতে চাপে পড়েছিলাম, কিন্তু ছেলেরা দারুণ প্রত্যাবর্তন করেছে। বরুণ অসাধারণ বোলিং করেছে, সেমিফাইনালের জন্য দল পুরোপুরি প্রস্তুত।”
ভারতের গ্রুপ শীর্ষে থাকার ফলে ফাইনালের স্বপ্ন এখন অনেকটাই উজ্জ্বল। তবে সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। এবার কি ভারত ২০২৩ বিশ্বকাপের প্রতিশোধ নিতে পারবে, নাকি আবারও আইসিসি ইভেন্টে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাস্ত হতে হবে? উত্তর দেবে সময়।