Kanthi Card Bank nominations begin:-কাঁথি অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট (কার্ড) ব্যাঙ্কের পরিচালন কমিটির নির্বাচনের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেস বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করছে, কারণ পূর্ববর্তী সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে মুখ্যমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল। এবার সেই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি এড়াতে তৃণমূল নেতৃত্ব আগাম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
মনোনয়ন পর্ব শুরুর আগে কাঁথিতে তৃণমূলের রাজ্য সমবায় সেলের ভাইস চেয়ারম্যান আশিষ চক্রবর্তী দলীয় নেতৃত্বদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি, যিনি এই নির্বাচনের দায়িত্বে রয়েছেন, এবং তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পীযূষ পন্ডা। বৈঠকে দলীয় নেতাদের ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করার নির্দেশ দেওয়া হয়, যাতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।কার্ড ব্যাঙ্কের ৭৬টি ডেলিগেট আসনের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ব্যাঙ্কের সদস্য সংখ্যা ৫৮,১৫৩ জন। ১৭ মার্চ সোমবার ছিল মনোনয়নপত্র তোলার দিন, এবং ১৮ মার্চের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। মনোনয়নপত্র তোলার সময় কোনো অশান্তি এড়াতে কড়া পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
স্থানীয় জনগণের মধ্যে এই নির্বাচন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকেই আশা করছেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যাঙ্কের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “আমরা চাই ব্যাঙ্কের পরিচালনায় এমন ব্যক্তিরা আসুক, যারা সত্যিই আমাদের সমস্যাগুলো বুঝবেন এবং সমাধান করবেন।”তবে, কিছু মানুষ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের পুনরাবৃত্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাদের মতে, যদি দলীয় কোন্দল আবারও প্রকাশ পায়, তাহলে ব্যাঙ্কের কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী মন্তব্য করেন, “পূর্বের অভিজ্ঞতা আমাদের শিখিয়েছে যে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে ব্যাঙ্কের সেবা প্রাপ্তিতে আমরা সমস্যায় পড়ি। এবার যেন তা না হয়।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নির্বাচন তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য একটি পরীক্ষা স্বরূপ। যদি তারা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়িয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে সক্ষম হয়, তাহলে দলের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও সংহতি প্রমাণিত হবে। অন্যথায়, দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা আগামী নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।এদিকে, বিরোধী দলগুলি এই নির্বাচনকে ঘিরে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোকে সামনে আনতে প্রস্তুত। তারা মনে করছেন, যদি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে, তাহলে তা তাদের রাজনৈতিক ফায়দা অর্জনে সহায়তা করবে। একজন বিরোধী নেতা বলেন, “তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল তাদের দুর্বলতা প্রকাশ করে। আমরা এই সুযোগকে কাজে লাগাবো।”
সামগ্রিকভাবে, কাঁথি কার্ড ব্যাঙ্কের এই নির্বাচন স্থানীয় জনগণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই ব্যাঙ্ক কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচিত হলে, ব্যাঙ্কের সেবা ও কার্যক্রমে উন্নতি হবে, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।তৃণমূল নেতৃত্বের সতর্কতা ও পূর্ব প্রস্তুতি দেখে মনে হচ্ছে, তারা এই নির্বাচনে কোনো ঝুঁকি নিতে চান না। দলের ঐক্য ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তারা বদ্ধপরিকর। এখন দেখার বিষয়, এই প্রচেষ্টা কতটা সফল হয় এবং নির্বাচনের ফলাফল কী হয়।