...
Friday, July 4, 2025
Google search engine
Homeটপ 10 নিউসদক্ষিণেশ্বরে কালীমায়ের চরণে বলিউডের কাজল

দক্ষিণেশ্বরে কালীমায়ের চরণে বলিউডের কাজল

Kajol visited dakshineswar temple: মায়ের কাছে সন্তানের জন্য মঙ্গল কামনা তো সব মা-ই করে, তবে এ এক ব্যতিক্রম দৃশ্য। এখানে মা নিজেই এসেছেন ‘মা’-এর সাফল্য কামনায়। বলিউডের প্রথম সারির অভিনেত্রী কাজল, যিনি একাধারে মা, অভিনেত্রী ও নারী শক্তির প্রতীক, তিনি এবার তাঁর আসন্ন সিনেমা ‘মা’-এর মুক্তির আগে হাজির হলেন দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরে। হাতে ফুল, মনভরা বিশ্বাস আর চোখে একরাশ শ্রদ্ধা নিয়ে কালীমায়ের আশীর্বাদ প্রার্থনা করলেন। বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণেশ্বর মন্দির চত্বরে যেন তিল ধারণের জায়গা ছিল না—সকলেই একঝলক দেখতে চেয়েছেন তাঁদের প্রিয় অভিনেত্রীকে, যিনি পিচ রঙা শাড়িতে কালীমন্দিরের পরিবেশকে যেন আরও দেবীময় করে তুলেছিলেন। ‘মা’ সিনেমাটি আগামী ২৭ মে মুক্তি পেতে চলেছে, বিশাল ফুরিয়া পরিচালিত এই মাইথোলজিকাল হরর ছবিতে কাজলের অভিনয় ঘিরে ইতিমধ্যেই কৌতূহল তুঙ্গে। ছবিতে রনিত রায়, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, গোপাল সিং ও জিতিন গুলাটির মতো গুণী অভিনেতারাও আছেন, তবে কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন কাজল নিজেই। এটি শুধু একটি সিনেমা নয়, একটি আধ্যাত্মিক অনুভব—সেই বার্তাই যেন পৌঁছে দিতে চাইলেন কাজল, পুজো সেরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বললেন, “কলকাতায় এলেই মনে হয় বাপের বাড়ি ফিরে এসেছি। মা কালীর আশীর্বাদে ভরসা করি, বিশ্বাস করি যে তিনি আমার সঙ্গে থাকবেন। তাই সিনেমার প্রমোশন শুরু হওয়ার আগে কালীমায়ের চরণে মাথা নত করে এলাম।” মন্দিরে উপস্থিত এক ভক্ত, শর্মিষ্ঠা দে বললেন, “কাজলদির চোখেমুখে যে ভক্তি দেখলাম, সেটা শুধু একজন তারকা নয়, একজন মেয়ে, একজন মায়ের পক্ষেও দারুণ উদাহরণ।” এই সিনেমা নিয়ে কাজল বলেন, “এই চরিত্রটা একটা শক্তিশালী নারীচরিত্র। আধ্যাত্মিক ও ভৌতিক দুই দিক মিলিয়ে গল্পটা তৈরি হয়েছে, সিনেমা দেখে দর্শক কেবল ভয় পাবেন না, বরং ভাবতে বাধ্য হবেন।

kajal 6fcfdf475502528c108fdc5d5ff9e49b.jpeg?q=80&w=480&dpr=2

এটা এমন এক গল্প যা সিনেমা হল ছাড়ার পরেও মাথায় গেঁথে থাকবে।” ছবির এক গুরুত্বপূর্ণ দিক হল ‘অপারেশন সিঁদুর’ প্রসঙ্গ, যার মাধ্যমে ভারতীয় সেনার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে কাজল বলেন, “সীমান্তে যারা আমাদের নিরাপত্তার জন্য জীবন বাজি রাখেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার ভাষা নেই। প্রত্যেক সেনাকে আমার স্যালুট।” এই ছবির আরেক বিশেষ আকর্ষণ হল ছোট্ট রূপকথা চক্রবর্তী, যাকে দেখা যাবে ভূতের চরিত্রে। জানা গেছে, কাজলের চরিত্রের সাথে ঘনিষ্ঠ এই ভূতের চরিত্রে অভিনয় করার পাশাপাশি, বাংলা ভাষা শেখাতেও কাজলকে সাহায্য করেছে এই খুদে অভিনেত্রী। কাজল নিজে জানিয়েছেন, রূপকথার মা প্রথম দিনের মেকআপ দেখে এতটাই ভয় পেয়েছিলেন যে শুটিং বন্ধ করে দিতে হয়েছিল কিছুক্ষণের জন্য। সিনেমার শুটিং চলাকালীন কাজলের সঙ্গে ছোট্ট রূপকথার সম্পর্ক হয়ে ওঠে মায়ের মতোই—হাতে ধরে বাংলা শেখানো, সংলাপ বুঝিয়ে দেওয়া—সবটাই করেছেন নিজে।

ছবিতে দেখানো হয়েছে, কিভাবে এক মা নিজের সন্তানের জন্য অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেন। ‘মা’ সিনেমার এই বিষয়বস্তু আজকের সমাজে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক, যেখানে নারী শক্তি, মাতৃত্ব আর আত্মিক সাহস একজোট হয়ে দাঁড়ায় বিপদের বিরুদ্ধে। কাজল, যিনি ১৯৯২ সালে বলিউডে পা রাখেন ‘বেখুদি’ সিনেমার মাধ্যমে, এরপর একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন—‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে যায়েঙ্গে’, ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’, ‘ফানাহ’, ‘মাই নেম ইজ খান’—সবখানেই তাঁর অভিনয়ের ছাপ স্পষ্ট। ২০১১ সালে তিনি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত হন। ব্যক্তিগত জীবনেও কাজল একজন দায়িত্ববান মা ও স্ত্রী—অজয় দেবগনের স্ত্রী, দুই সন্তানের মা। কিন্তু আজকের কাজল শুধুই একজন অভিনেত্রী নয়, তিনি যেন এক ‘মা’-এর প্রতিচ্ছবি, যিনি তাঁর সন্তানের মুক্তির আগে মায়ের কৃপা চাইতে এসেছেন। দক্ষিণেশ্বর মন্দির কমিটির তরফে এক সদস্য বলেন, “এরকম অনেক তারকা আসেন, কিন্তু কাজলদির মধ্যে এক বিশেষ আন্তরিকতা আমরা দেখেছি। কোনও অহংকার নেই, একেবারে ঘরের মেয়ে।” দক্ষিণেশ্বরের এক ফুলবিক্রেতা অনিমেষ বললেন, “আমরা জানতাম না কাজল আসবেন। হঠাৎ এত ভিড় দেখে অবাক হয়ে গেলাম। কিন্তু এক ঝলক দেখে মনে হল যেন সিনেমার পর্দা থেকে কোনও চরিত্র নেমে এসেছে।” এই মুহূর্তে বলিউড এমন এক পর্যায়ে দাঁড়িয়ে, যেখানে কন্টেন্টই রাজা, আর সেই কন্টেন্ট যদি হয় বিশ্বাস, আধ্যাত্মিকতা, হরর আর নারী শক্তির মিশেল—তবে সেটা যে দর্শকদের মনে দাগ কাটবে, তা বলাই বাহুল্য। কাজলের এই সফর শুধুই সিনেমার প্রমোশন নয়, বরং এটা তাঁর এক আত্মিক যাত্রা, যেখানে তিনি একজন মা হিসেবে আর এক ‘মা’-এর আশীর্বাদে ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে চলেছেন। ‘মা’ শুধু সিনেমা নয়, এটা আজকের সময়ের এক প্রতিচ্ছবি—যেখানে মায়েরা শুধুই সন্তান মানুষ করেন না, সময় এলে শত্রুর মুখোমুখিও হন। আর সেই মায়ের প্রতিচ্ছবিকে বড়পর্দায় তুলে আনছেন কাজল, যিনি নিজেই একজন নারী শক্তির প্রতীক। দক্ষিণেশ্বরের এই মুহূর্ত তাই শুধু সংবাদ নয়, এ এক যুগান্তকারী অনুভূতির সাক্ষী।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.