Kadam Danga ‘wins’ with Baban’s goal : শিল্পাঞ্চলের ফুটবলপ্রেমীদের জন্য ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ এক স্মরণীয় দিন হয়ে রইলো। শিশু বাগান অ্যাথলেটিক্স ক্লাব আয়োজিত নকআউট ফুটবল প্রতিযোগিতার অষ্টম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল কদম ডাঙ্গা এবং টেক ওভার। নির্ধারিত সময়ে উত্তেজনাপূর্ণ খেলা শেষে বাবনের অসাধারণ গোলে কদম ডাঙ্গা ১-০ ব্যবধানে জয়লাভ করে।
ফুটবলের এই প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র খেলোয়াড়দের দক্ষতার প্রদর্শন নয়, বরং শিল্পাঞ্চলের মানুষের হৃদয় জয় করার একটি মঞ্চ হয়ে উঠেছে। দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে যেন প্রাণপণ লড়াই চলছিল। শুরু থেকেই আক্রমণ এবং পাল্টা আক্রমণে জমজমাট ছিল খেলাটি। কদম ডাঙ্গা দলের অধিনায়ক বাবন শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। তবে প্রথমার্ধে গোলের সুযোগ তৈরি করেও টেক ওভার দলের রক্ষণভাগের দৃঢ়তায় গোল করতে ব্যর্থ হয় কদম ডাঙ্গা।
দ্বিতীয়ার্ধে বাবন যেন ভিন্ন রূপে আবির্ভূত হন। ম্যাচের ৭৫ মিনিটে, ডান প্রান্ত থেকে আসা একটি ক্রস শটকে দক্ষতায় গোলপোস্টে পরিণত করেন বাবন। রানীগঞ্জ রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের তত্ত্বাবধানে ম্যাচটি পরিচালনা হয়। রেফারিদের নিরপেক্ষ ও পেশাদার দৃষ্টিভঙ্গি খেলাটিকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্য করে। শিশু বাগান ময়দানে এই খেলার প্রতি স্থানীয় মানুষের যে উচ্ছ্বাস, তা চোখে পড়ার মতো।
গ্যালারি ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। রানীগঞ্জ, আসানসোল, দুর্গাপুরের ফুটবলপ্রেমীরা এই খেলাকে ঘিরে একত্রিত হয়েছিলেন। দর্শকদের মধ্য থেকে একজন প্রবীণ সমর্থক অরুণ হাজরা বলেন, “এই ধরনের টুর্নামেন্ট শুধু আমাদের ছোটদের জন্য উৎসাহ নয়, আমাদের শিল্পাঞ্চলের ঐতিহ্যকেও বাঁচিয়ে রাখছে।” জয়ের পর বাবন বলেন, “দলগত প্রচেষ্টাই আজকের জয়ের মূলমন্ত্র। এমন টানটান ম্যাচে নিজের দলকে জয় উপহার দিতে পেরে আমি গর্বিত।” দলের কোচ রতন ঘোষ বলেন, “আমাদের ছেলেরা অসাধারণ খেলেছে। প্রতিটি খেলোয়াড় নিজের সেরাটা দিয়েছে।
আশা করি, সামনের ম্যাচগুলোতেও এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।” এই টুর্নামেন্ট শুধু একটি খেলা নয়; এটি স্থানীয় প্রতিভাদের একটি মঞ্চ। এমন টুর্নামেন্ট শিল্পাঞ্চলের যুবকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস এবং দলের প্রতি দায়িত্ববোধ তৈরি করে। স্থানীয় কোচরা মনে করেন, এমন উদ্যোগ ভবিষ্যতে শিল্পাঞ্চল থেকে আরও প্রতিভাবান ফুটবলার তৈরি করবে। কদম ডাঙ্গার এই জয় তাদের পরবর্তী রাউন্ডে আত্মবিশ্বাসের জ্বালানি হিসেবে কাজ করবে। এই ধরনের প্রতিযোগিতা শুধু খেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি সমাজের ভিন্ন স্তরের মানুষদের একত্রিত করার একটি মঞ্চ।
শিশু বাগান অ্যাথলেটিক্স ক্লাবের সম্পাদক বলেন, “ফুটবল শুধু খেলা নয়, এটি আমাদের সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা চাই, প্রতিভা যেন আরও বিকশিত হয় এবং এই অঞ্চলের নাম দেশের মানচিত্রে উঠে আসে।” শিশু বাগান ময়দান এবং আশপাশের এলাকা এই টুর্নামেন্টের কারণে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে। প্রতিটি ম্যাচের দিন স্থানীয় দোকান, খাবারের স্টল এবং ছোট ব্যবসাগুলিতে বাড়তি ভিড় লক্ষ করা গেছে। বাবনের একমাত্র গোল শুধু কদম ডাঙ্গার জন্য জয় নয়, এটি স্থানীয় ফুটবলের প্রতি মানুষের আবেগ এবং ভালোবাসার উদাহরণ। শিল্পাঞ্চলের মানুষের জন্য এটি গর্বের মুহূর্ত। সামনের ম্যাচগুলোর জন্য এই জয় আরও বড় প্রেরণা হয়ে থাকবে।