Jellyfish attack in Puri causes panic on the beach : পুরীর সমুদ্রসৈকত সাধারণত পর্যটকদের জন্য এক স্বপ্নের গন্তব্য, কিন্তু এবার সেই শান্ত, আনন্দের স্থানই হয়ে উঠেছে এক ভয়াবহ আতঙ্কের কেন্দ্রবিন্দু। দোলের ছুটির সময়ে যখন হাজার হাজার পর্যটক পুরীর সৈকতে ভিড় জমাচ্ছেন, ঠিক তখনই সমুদ্রে জেলিফিশের আক্রমণ নতুন বিপদের সংকেত বহন করছে। সৈকতের জলে নামতেই অনেক পর্যটক ভয়াবহ চুলকানি, জ্বালাপোড়া ও তীব্র ব্যথার শিকার হয়েছেন। গত এক মাসে অন্তত ৫০ জনের বেশি পর্যটক জেলিফিশের বিষাক্ত স্পর্শে আহত হয়েছেন, অনেককে স্থানীয় হাসপাতালে পর্যন্ত চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণে পর্যটকদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, এবং এর ফলে পুরীর পর্যটন শিল্প বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পুরীর সৈকতের জলে দেখা মিলছে প্রচুর পরিমাণে জেলিফিশের, বিশেষত নীল এবং বেগুনি রঙের কিছু বিষাক্ত প্রজাতির জেলিফিশের। সমুদ্রে নেমেই পর্যটকরা অনুভব করছেন তীব্র চুলকানি ও ব্যথা, যা কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফোস্কার মতো হয়ে উঠছে।
পর্যটক প্রিয়াঙ্কা দাস বলেন, “আমি জলে নামতেই হঠাৎ আমার পায়ে অসহ্য ব্যথা অনুভব করি, যেন কেউ গরম সূঁচ ফোটাচ্ছে! পরে দেখলাম, আমার গোড়ালির চারপাশ লাল হয়ে ফুলে গেছে।”স্থানীয় দোকানদার ও সমুদ্রতীরবর্তী হোটেল মালিকরাও এই ঘটনায় বেশ চিন্তিত। কারণ, প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটকের আনাগোনার ফলে পুরীর অর্থনীতি বেশিরভাগই পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। যদি জেলিফিশের আতঙ্ক আরও বাড়তে থাকে, তাহলে পর্যটকদের সংখ্যা কমতে পারে, যা ব্যবসার ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।জেলিফিশের আক্রমণের খবর ছড়িয়ে পড়তেই পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই সৈকতে নামতে ভয় পাচ্ছেন, কেউ কেউ বালি বা পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে সমুদ্র দেখেই ফিরে যাচ্ছেন। স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে, সৈকতের বিভিন্ন স্থানে “জেলিফিশ সতর্কতা” বোর্ড লাগানো হয়েছে।
পুরী সমুদ্র উপকূল রক্ষা কমিটির এক কর্মকর্তা জানান, “আমরা পর্যটকদের সতর্ক করছি এবং সৈকতের কিছু জায়গায় আপাতত স্নান না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, লাইফগার্ডদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারেন।”পুরী ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। বিশেষত দোল ও গ্রীষ্মের ছুটিতে বহু পর্যটক এখানে ঘুরতে আসেন, যার ফলে স্থানীয় ব্যবসা ও হোটেল শিল্প বিকশিত হয়। কিন্তু এই জেলিফিশ আতঙ্ক যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে পর্যটকদের সংখ্যা কমে যেতে পারে, যা এখানকার ব্যবসায়ীদের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াবে।
স্থানীয় হোটেল মালিকদের একজন বলেন, “পর্যটকরা এখনই সৈকতে নামতে ভয় পাচ্ছেন। যদি এই সমস্যা দীর্ঘদিন চলতে থাকে, তাহলে আমাদের ব্যবসায় মারাত্মক প্রভাব পড়বে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত কোনো সমাধান খুঁজে বের করা।”