Jagannath’s face is revealed by the tuli, housewives’ novel feat on potatoes: তুলির টানে ফুটে উঠেছে জগন্নাথের মুখ। মাটির মূর্তির ওপর নয় কিন্তু! চন্দ্রমুখী আলুর ওপর। সঙ্গে রয়েছেন বলরাম এবং সুভদ্রাও। রথযাত্রা উপলক্ষ্যে এমনই অভিনবভাবে তিন আরাধ্য দেবতার প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তুলেছেন নদিয়ার রানাঘাটের মহাপ্রভু পাড়ার এক গৃহবধূ। আর আলুর ওপর জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি দেখতে অনেকেই ভিড় করছেন ওই গৃহবধূর বাড়িতে।
রানাঘাটের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মহাপ্রভু পাড়ার বাসিন্দা শতাব্দী মণ্ডল। সংসারের কাজকর্ম সামলেই গত তিন বছর ধরে মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করছেন তিনি। পাশাপাশি কচিকাঁচাদের ছবি আঁকাও শেখান। বরাবরই অন্য কিছু তৈরির ওপর ঝোঁক শতাব্দীর। এর আগেও লাউয়ের ওপর দুর্গার মুখ এবং জীবন্ত কালী সাজিয়েও সমাজমাধ্যমে বেশ প্রশংসিত হয়েছিলেন তিনি। তবে এবার সবকিছু থেকে একেবারে আলাদা কীর্তি করেছেন। জগন্নাথ, বলভদ্র বা বলরামের ও সুভদ্রার মুখ ফুটিয়ে তুলতে বেছে নিয়েছেন প্রায় আড়াইশো গ্রাম ওজনের তিনটি আলু। সেগুলির ওপরেই রং ও তুলি এবং প্রসাধনীর নানা উপকরণ দিয়ে এঁকেছেন তিন দেব-দেবীকে। শুধু রঙের ছোঁয়ায় মুখের আদল তৈরি করাই নয়, সাজসজ্জার সরঞ্জাম দিয়েও সাজানো হয়েছে তাঁদের।
শতাব্দীর কথায়, “সংসারের সব কাজকর্ম সামলেই অভিনব কিছু করার ইচ্ছে থাকে সবসময়। সেজন্যই ভেবেছিলাম এবার রথযাত্রা উপলক্ষে জগন্নাথদেবকে নতুনভাবে ফুটিয়ে তুলব। ভালো লাগছে যে অনেকেই আমার এই ছোট্ট জগন্নাথকে দেখতে আসছেন।”
শতাব্দী মণ্ডলের বাড়িতে আলুর ওপর জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি দেখতে দলে দলে ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয় মানুষরা। খবর ছড়িয়ে পড়তে আশপাশের এলাকার লোকেরাও অপূর্ব এই কীর্তি দেখতেন আসছেন মহাপ্রভু পাড়ায়। তাঁদের মধ্যে অনেকেই এমন মূর্তি কখনও দেখেননি বলেও জানাচ্ছেন। প্রতিবেশীরাও খুশি এই মূর্তি দেখে।
এই অভিনব উদ্যোগের ফলে স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি নতুন চেতনার সৃষ্টি হয়েছে। মানুষজনের মধ্যে সৃষ্টিশীলতা এবং সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, “শতাব্দীর এই উদ্যোগ আমাদের গর্বিত করেছে। তার সৃষ্টিশীলতা এবং নিষ্ঠা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।”
এখন এই অভিনব কীর্তি নিয়ে সারা রাজ্যেই আলোচনা হচ্ছে। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমেও এটি নিয়ে চর্চা চলছে। শতাব্দীর এই উদ্যোগ তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও সৃষ্টিশীলতার প্রেরণা যোগাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শতাব্দীর সৃষ্টির এই অনন্য উদাহরণ সারা দেশের মানুষের কাছে পৌছে দিতে আমরা প্রস্তুত। এই ধরনের উদ্যোগ শুধু স্থানীয় শিল্পীদের নয়, বরং সারা দেশের মানুষের মধ্যে সৃষ্টিশীলতার চেতনাকে জাগিয়ে তুলবে।
আশা করা যায়, ভবিষ্যতে এমন আরো অনেক সৃষ্টিশীল উদ্যোগ দেখতে পাবো। শতাব্দী মণ্ডল প্রমাণ করেছেন যে, সৃষ্টিশীলতার কোনো সীমা নেই। আমরা তার এই উদ্যোগকে অভিনন্দন জানাই এবং আশা করি, তার সৃষ্টিশীলতা আরও অনেক দূর যাবে।