Friday, May 2, 2025
Google search engine
Homeরাজনীতিঅন্যানো রাজনীতিরাজস্থানে গ্রেফতার ISI গুপ্তচর পাঠান খান

রাজস্থানে গ্রেফতার ISI গুপ্তচর পাঠান খান

ISI spy Pathan Khan arrested in Rajasthan:রাজস্থানের মরুভূমি শহর জয়সলমেঢ়ে গোয়েন্দা সংস্থার হাতে গ্রেফতার হল পাকিস্তানের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা ISI-এর হয়ে কাজ করা এক ভারতীয় নাগরিক পাঠান খান, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে দীর্ঘদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভারতের সেনা সংক্রান্ত গোপন তথ্য ও সীমান্ত এলাকার স্পর্শকাতর ছবি পাকিস্তানে পাঠিয়ে দিচ্ছিল, যা দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এক গুরুতর হুমকি বলে মনে করা হচ্ছে; গত এক মাস আগে সন্দেহজনক কার্যকলাপের কারণে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছিল, অবশেষে অভিযোগের যথাযথ প্রমাণ পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে গ্রেফতার করা হয়; রাজস্থান পুলিশের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা যৌথভাবে এই অভিযান চালায়, আর এই ঘটনার পর থেকেই সীমান্তবর্তী অঞ্চলজুড়ে চরম সতর্কতা জারি হয়েছে।

পাঠান খানের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ—সে ভারতীয় সেনার গতিবিধি, রুটিন অপারেশন, সীমান্তের সেনাঘাঁটির ছবি এবং বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ভিডিও পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ISI-এর কাছে পাঠাতো, আর এই কাজের জন্য তাকে পাকিস্তান থেকে অর্থ এবং এমনকি ভারতীয় সিম কার্ডও সরবরাহ করা হয়েছিল, যাতে তার ভারতীয় নাগরিক সেজে দেশীয় ফোন নম্বর ব্যবহার করে তথ্য পাচার করতে সুবিধা হয়; এমনকি জানা গেছে, পাঠান খান তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে নকল পরিচয়ে সেনা-সম্পর্কিত বন্ধুত্ব তৈরি করে তথ্য সংগ্রহ করত এবং সেই তথ্য WhatsApp ও Signal-এর মতো এনক্রিপ্টেড প্ল্যাটফর্মে পাকিস্তানে পাঠাত।

rajasthan

এই ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটেছে, যখন জম্মু-কাশ্মীরে একের পর এক জঙ্গি হামলার পর NIA গোটা উপত্যকা জুড়ে চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে, এবং দেশের নানা প্রান্তেও গুপ্তচর বা স্লিপার সেলের খোঁজে নজরদারি চলছে; পাঠান খানের গ্রেফতারি সেই গোটা প্রক্রিয়ারই একটি বড় সাফল্য বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা, যদিও এর পাশাপাশি উঠে আসছে আরও বড় প্রশ্ন—দেশের ভিতরেই কীভাবে এরা এতটা সহজে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে পারছে?

রাজস্থানের জয়সলমেঢ় অঞ্চলের স্থানীয় প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, “এই অঞ্চলের ভৌগোলিক অবস্থান, সেনা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের কাছাকাছি হওয়া এবং পর্যটনের আড়ালে তথ্য পাচারের চেষ্টা নতুন কিছু নয়, তবে পাঠান খানের মতো ভারতীয় নাগরিক এই ধরনের কার্যকলাপে যুক্ত থাকা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়।”

সূত্র অনুযায়ী, পাঠান খানকে ধরা হয়েছিল আগে থেকেই চলতে থাকা এক সাইবার নজরদারি অভিযানের ভিত্তিতে, যেখানে বিভিন্ন সোশ্যাল অ্যাকাউন্টের কার্যকলাপ খতিয়ে দেখা হচ্ছিল, এবং তখনই তার বিরুদ্ধে প্রথম সন্দেহ তৈরি হয়; এরপর বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে দীর্ঘদিন ধরে তার গতিবিধি, মোবাইল ট্রাফিক, ইন্টারনেট ব্যবহার ও যোগাযোগের প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া যায়, সে একটি সক্রিয় আইএসআই এজেন্ট, যে নিজেই ছবি তোলে এবং মাঝেমধ্যে অন্যদের কাছ থেকেও তথ্য জোগাড় করে পাচার করে;

এই ঘটনার পর শুধু রাজস্থান নয়, গুজরাট, পাঞ্জাব, জম্মু-কাশ্মীর, এমনকি পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত এলাকায়ও গোয়েন্দা নজরদারি অনেক গুণ বাড়ানো হয়েছে বলে জানা গেছে; পাশাপাশি, সেনার তরফ থেকে বিশেষভাবে তাদের কর্মীদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নতুন করে কড়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে যাতে কোনওভাবেই সেনা সংক্রান্ত ছবি বা তথ্য সামাজিক মাধ্যমে আপলোড না করা হয়;

এই গ্রেফতারিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলেও প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে—প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, “দেশের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আপস নয়। যারা দেশের ভিতরে বসে শত্রুর হয়ে কাজ করবে, তাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে”; অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, “আমরা আশা করি সরকার এই ধরনের চক্র ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি, দেশের নাগরিকদের সচেতনতা বাড়ানোর দিকেও মন দেবে, যাতে কেউ সহজে এই ফাঁদে না পড়ে।”

fbf50644 e35b 11e7 b4c0 9346261494eb 1710769261113

এদিকে পাঠান খানের গ্রেফতারির পর তার মোবাইল, ল্যাপটপ, বিভিন্ন চ্যাট হিস্ট্রি ও আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখা হচ্ছে, এবং গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, সে কিছু সেনা ছাউনি ঘিরে গোপন চিত্র পাঠিয়েছে যা ভবিষ্যতের সম্ভাব্য হামলার জন্য ব্যবহৃত হতে পারত, আর তাই এই ধরনের গুপ্তচর কার্যকলাপ শুধু আইনত অপরাধ নয়, বরং একধরনের যুদ্ধপূর্ব প্রস্তুতির অংশ বলেই দেখা হচ্ছে।

সবশেষে বলা যায়, পাঠান খানের গ্রেফতারি শুধুমাত্র এক ব্যক্তিকে ধরা নয়, বরং এর মাধ্যমে গোটা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সামনে একটি বড় বার্তা—শত্রু এখন শুধু সীমান্তের ওপারে নয়, দেশের ভেতরেও স্লিপার সেল বা সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলের মাধ্যমে ঢুকে পড়ছে; তাই প্রয়োজনে শুধু প্রশাসন নয়, সাধারণ মানুষেরও চোখ-কান খোলা রাখতে হবে—কারণ দেশের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব সবার।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments