Is Rahul coming to KKR? Information leaked! : ২০২৬ সালের আইপিএল মরসুম যত এগিয়ে আসছে, ততই উত্তপ্ত হচ্ছে ক্রিকেট-বাজার। তারকাদের দলবদল, দল গঠনের পরিকল্পনা এবং নেতৃত্ব সংক্রান্ত কৌশল ঘিরে বাড়ছে জল্পনা-কল্পনার পারদ। আর এই আলোচনার কেন্দ্রে এখন একটাই নাম—কেএল রাহুল। ভারতীয় ক্রিকেটের এই স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান এবং প্রাক্তন অধিনায়ককে ঘিরে এখন রীতিমতো গুঞ্জনের ঝড় বইছে।
গোটা বিষয়টি ঘিরে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায় যখন বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের দল কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR)-এর সঙ্গে রাহুলের নাম জুড়ে যায়। ভারতের একটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’ জানিয়েছে, রাহুলকে দলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে কেকেআর ম্যানেজমেন্ট। এমনকি তাঁকে দলের অধিনায়কত্ব দেওয়ার প্রস্তাবও নাকি ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে।তথ্য অনুযায়ী, কেকেআর ইতিমধ্যেই দিল্লি ক্যাপিটালসের সঙ্গে যুক্ত থাকা কেএল রাহুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। শুধু যোগাযোগ করেই থেমে থাকেনি তারা, বরং রাহুলকে নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়ার প্রলোভনও দেখানো হয়েছে। এই খবর ফাঁস হতেই চর্চা আরও বেড়েছে—রাহুল কি তবে শ্রেয়স আইয়ারের পরে কেকেআরের নতুন নেতা হতে চলেছেন?২০২৪ সালের আইপিএল-এ শ্রেয়স আইয়ারের অধিনায়কত্বে ট্রফি জিতলেও, পরবর্তী মরসুমে তাঁকে ছেড়ে দেয় কেকেআর। তখন নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হয় আজিঙ্কা রাহানের হাতে। যদিও তাতে বিশেষ সাফল্য আসেনি, বরং দল লিগ পর্বও অতিক্রম করতে পারেনি। সেই ব্যর্থতার পর থেকেই কেকেআরের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ভেঙ্কটেশ আইয়ারকে ২৩.৭৫ কোটি টাকায় নেওয়া হলেও, তিনি অধিনায়কত্বের জন্য বিবেচিত হননি।এই প্রেক্ষিতে কেকেআরের থিঙ্কট্যাঙ্ক এমন একজন নেতার সন্ধানে, যিনি দলের মধ্যে স্থিতাবস্থা আনতে পারেন এবং মাঠে ব্যাট হাতে নেতৃত্ব দিতে পারেন। কেএল রাহুল ঠিক সেই ধরনের খেলোয়াড়, যিনি অভিজ্ঞতাও রাখেন, নেতৃত্বও দিতে জানেন এবং আগ্রাসী মানসিকতা বজায় রেখেই দলকে এগিয়ে নিতে পারেন। যদিও ২০২৩ সালটা তাঁর জন্য তেমন ভালো কাটেনি, তবে সামগ্রিকভাবে তিনি এখনও একজন নির্ভরযোগ্য পারফর্মার

অর্থে এখানে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (BCCI) বা আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিল থেকে এখনো এই সম্ভাব্য ট্রান্সফার নিয়ে কোনও বিবৃতি আসেনি। এই মুহূর্তে বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে ফ্র্যাঞ্চাইজি পর্যায়ের অভ্যন্তরীণ আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এক ক্রিকেটপ্রেমী, সল্টলেকের বাসিন্দা দীপঙ্কর দে বলেন, “রাহুল যদি কেকেআরে আসেন, সেটা হবে একটা বিশাল চমক। শ্রেয়স চলে যাওয়ার পর আমরা নতুন করে কাউকে অধিনায়ক হিসেবে দেখতে চাইছিলাম। রাহুল নিঃসন্দেহে সেই জায়গা নিতে পারেন।অন্যদিকে বারাসাতের কলেজ পড়ুয়া রৌপ্য মিত্রর কথায়, “আমি রাহুলকে পছন্দ করি, কিন্তু কেকেআরের সঙ্গে তাঁর টেম্পারামেন্ট মানাবে কিনা সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে। তবে অভিষেক নায়ারের উপস্থিতি একটা বড় ফ্যাক্টর হতে পারে।” দলে টানার ক্ষেত্রে কেকেআরের অন্যতম বড় অস্ত্র হল অভিষেক নায়ার। ভারতের প্রাক্তন সহকারী কোচ ও বর্তমানে কেকেআরের মেন্টর হিসেবে কাজ করা অভিষেক এবং রাহুল একসঙ্গে দীর্ঘদিন জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করেছেন। তাঁদের ব্যক্তিগত রসায়ন বেশ ভালো। আর সে কারণেই কেকেআরের থিঙ্কট্যাঙ্কে রাহুলের পক্ষে একটি বাড়তি জায়গা তৈরি হয়েছে।

তবে সমস্যা একটাই—ট্রেডটা কীভাবে সম্ভব? কেকেআরের হাতে এমন কোনও বড় নাম নেই, যাঁকে দিল্লি ক্যাপিটালসের সঙ্গে বিনিময় করে রাহুলকে আনা যেতে পারে। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক সূত্র জানিয়েছে, “দিল্লি এমন কোনও কেকেআর খেলোয়াড়ের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে না, যাঁর বদলে রাহুলকে ছাড়তে পারে।” এখানেই তৈরি হয়েছে সব থেকে বড় বাধা।রাহুলকে কেকেআরে আনতে গেলে হয়তো অন্য কোনও আর্থিক চুক্তি, ভবিষ্যতের প্লেয়ার পিক বা নতুন কোনও ‘ট্রেড স্ট্র্যাটেজি’ ভাবতে হবে কেকেআর ম্যানেজমেন্টকে। অন্যথায় এই আলোচনা কেবল জল্পনাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে। যেভাবে কেকেআর নতুন নেতৃত্ব খুঁজছে এবং নিজেদের আগের ব্যর্থতা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে, তাতে বোঝাই যাচ্ছে—এই ট্রান্সফার সফল হলে তা আইপিএলের অন্যতম বড় মোড় ঘোরানো ঘটনা হয়ে দাঁড়াতে পারে।যদি রাহুল সত্যিই কেকেআরের নেতৃত্ব পান, তাহলে সেটি শুধুই তার জন্য নয়, বরং গোটা দলের মডেল এবং পারফরম্যান্সের ধরন পাল্টে দিতে পারে। পাশাপাশি নতুন ব্যাটিং কোর, বোলিং রোটেশন এবং টিম কম্বিনেশনেও পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে।তবে কেবল আগ্রহ বা প্রস্তাব থাকলেই তো হবে না, বাস্তবায়নের পথটা অনেক বেশি কৌশলী। সেই কৌশলে কেকেআর সফল হয় কিনা, সেটাই এখন দেখার।
রাহুলকে নিয়ে কেকেআরের আগ্রহ আপাতত গুঞ্জনের পর্যায়েই থাকলেও, এতে আইপিএলপ্রেমী এবং কেকেআর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। অধিনায়কত্ব নিয়ে দলে যে একরকম অনিশ্চয়তা ছিল, তা এখন ধীরে ধীরে বদলাতে চলেছে। রাহুল আসবেন কি না, ট্রান্সফার আদৌ বাস্তবায়িত হবে কিনা—তা সময়ই বলবে। তবে এ কথা বলা যেতেই পারে, এই সম্ভাব্য চুক্তি যদি সফল হয়, তাহলে তা কেকেআরের জন্য এক নতুন যুগের সূচনা হতে চলেছে।