Wednesday, April 30, 2025
Google search engine
Homeটপ 10 নিউসজলশূন্য চিনাব, ভারতের 'ওয়াটার স্ট্রাইক'-এ হাহাকার পাকিস্তানে!

জলশূন্য চিনাব, ভারতের ‘ওয়াটার স্ট্রাইক’-এ হাহাকার পাকিস্তানে!

Indus Water Treaty: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে জলবণ্টন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিতর্ক এবার নতুন দিগন্তে প্রবাহিত হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার পর চরম স্নায়ুর অবস্থায় পাকিস্তান। ২০২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেন যে, সিন্ধু জল চুক্তি আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে। এর পরেই পাকিস্তানের রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সিন্ধু জল চুক্তি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যার মাধ্যমে চেনাব, সিন্ধু, ঝেলম, রবি, বিয়াস এবং сатলুজ নদীর পানি ভাগ করে নেওয়া হয়। এই চুক্তির আওতায়, পাকিস্তান পাঁচটি নদী থেকে পানি পেতে পারে, তবে পাকিস্তান চুক্তির শর্তাবলীর বিরুদ্ধে অনেকবার অভিযোগ তুলেছে, এবং ভারতও বিভিন্ন সময়ে চুক্তির শর্ত পুনরায় পর্যালোচনার কথা বলেছে।

গত কয়েক দিনে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ভারতের সেনাবাহিনী পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে শক্তি বৃদ্ধি করেছে এবং পাকিস্তানও তার সেনাবাহিনীর প্রস্তুতির দিকে মনোযোগ দিয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একটি নিরাপত্তা বৈঠকেও এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন, যেখানে ভারতীয় কূটনীতিকদের সঙ্গে পাকিস্তানের আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারত সরকার ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক সীমিত করে দিয়েছে। ওয়াঘা বর্ডার বন্ধ করা হয়েছে এবং পাকিস্তানিদের ভিসাও সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। ভারতীয় ভূখণ্ডে থাকা পাকিস্তানিদের দ্রুত তাদের দেশে ফিরে যেতে বলা হয়েছে।

Pak Satelite Image

এদিকে পাকিস্তানও এই অবস্থাকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক হিসেবে দেখছে। পাকিস্তানের প্রাক্তন মন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, “জল না পেলে, সিন্ধুতে ভারতীয়দের রক্ত বইবে।” পাকিস্তান সরকারও এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পদক্ষেপকে প্রতিহত করার জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে। পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেছেন, “গোপন সূত্রে আমরা খবর পেয়েছি, ভারত ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেনা অ্যাকশনে নামতে পারে।” এই অবস্থায় পাকিস্তান সেনা প্রস্তুতির দিকে মনোযোগ দিয়েছে, এবং দেশটির মিডিয়া এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ভারতের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে চিন্তিত।

ভারতের কাছে পাকিস্তানের চরম উদ্বেগের প্রধান কারণ হলো চেনাব নদীর জল প্রবাহে বিশাল পরিবর্তন। স্যাটেলাইট চিত্র থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে, ২৬ সেপ্টেম্বর যেখানে জল প্রবাহ দেখা যাচ্ছিল, সেখানে ২৯ সেপ্টেম্বর সেই একই জায়গায় একেবারে জলশূন্য চেনাব নদী। এই ছবি পাকিস্তানের জন্য একটি বড় সংকেত হয়ে উঠেছে, যা তাদের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ সম্পর্কে আরও চিন্তার সৃষ্টি করেছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই স্যাটেলাইট ইমেজ পাকিস্তান সরকারের স্নায়ু চাপ আরও বাড়িয়ে দেবে। পাকিস্তান এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে নিজেদের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে এবং সীমান্তে নজরদারি আরও তীব্র করেছে।

অন্যদিকে, ভারতের কূটনীতিকদের মতে, ভারত এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় চূড়ান্ত সন্ত্রাসী হামলা এবং সীমান্তের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি করার সম্ভাবনা সম্পর্কেও সতর্ক রয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, দেশ তাদের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

এই পরিস্থিতি যে পাকিস্তান সরকারের জন্য অস্বস্তির সৃষ্টি করেছে, তা স্পষ্টভাবেই বোঝা যাচ্ছে। পাকিস্তান সরকার কূটনৈতিক স্তরে ভারতের সঙ্গে আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু করার চেষ্টা করছে। যদিও ভারতের সরকার বলছে যে, তাদের পদক্ষেপ শুধুমাত্র পাকিস্তানের পক্ষে চলমান সন্ত্রাসী কার্যক্রম এবং যুদ্ধবিরোধী অবস্থান নেওয়ার বিরুদ্ধে।

এখন প্রশ্ন উঠছে, ভারত ও পাকিস্তানের এই ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা কেমন প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে? বিশেষ করে, পাকিস্তান যদি সেনা শক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়, তবে তা পুরো দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরো অস্থির করে তুলতে পারে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক মহলও ভারতের পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে, কারণ এই জলবণ্টন চুক্তি কোনো দেশের জন্যই অল্প সময়ের মধ্যে পরিবর্তিত হলে, তা বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।

ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সিন্ধু জল চুক্তির স্থগিত ঘোষণার পর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে, তা খুব দ্রুতই বিশ্ব রাজনীতির প্রধান বিষয় হয়ে উঠবে। যদি পাকিস্তান এই সংকট মোকাবিলা করার জন্য সামরিক পদক্ষেপ নেয়, তবে ভারতের সিদ্ধান্ত কী হতে পারে, তা আগামী দিনে বড় আঞ্চলিক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments