India-France sign Rs 63,000 crore deal for Rafale Marine fighter jets;২৮ এপ্রিল সোমবার, ভারতের প্রতিরক্ষা খাতে ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায় সূচিত হলো, যখন ভারত সরকার ও ফ্রান্সের মধ্যে ৬৩ হাজার কোটি টাকার বিশাল চুক্তিতে “রাফাল মেরিন” যুদ্ধবিমান কেনার জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো, যা দেশের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির পথে এক বিরাট মাইলফলক হয়ে রইল; এই চুক্তির আওতায় ২২টি একক আসনের রাফাল এম জেট এবং ৪টি দুই আসনবিশিষ্ট প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান কেনা হবে, সাথে থাকবে রক্ষণাবেক্ষণ, লজিস্টিক সাপোর্ট, কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং দেশীয় উৎপাদন সংক্রান্ত এক বিশাল প্যাকেজও, যাতে দেশের প্রতিরক্ষা শিল্পেও নতুন দিগন্ত খুলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা; এই রাফাল মেরিন যুদ্ধবিমান গুলি বিশেষভাবে নির্মিত হয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য এবং আইএনএস বিক্রান্ত — দেশের প্রথম স্বদেশী বিমানবাহী রণতরী — থেকে অপারেট করার জন্য উপযোগী করে বানানো হয়েছে, যেখানে বর্তমানে মিগ-২৯কে বহর কাজ করছে, তবে তাদের বয়সজনিত সীমাবদ্ধতার কারণে রাফাল মেরিনের অন্তর্ভুক্তি অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছিল;
উল্লেখযোগ্য যে, গত ৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সুরক্ষা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি (CCS) এই ২৬টি যুদ্ধবিমান কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে, এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধক্ষমতাকে বহুগুণে বাড়িয়ে তুলবে, কারণ রাফাল মেরিন, তার উন্নত রাডার সিস্টেম, অধিকতর যুদ্ধক্ষমতা, এবং বহুমুখী মিশন সক্ষমতার জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত; ফরাসি নির্মাতা ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশনের তৈরি এই বিমানগুলো একইসাথে আকাশ থেকে আকাশে, আকাশ থেকে ভূমিতে এবং ভূমি থেকে সমুদ্রে আক্রমণের জন্য সক্ষম, যা ভারত মহাসাগর অঞ্চলে ভারতের কৌশলগত অবস্থান আরও শক্তিশালী করবে; এই প্রসঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, “ভারতের জন্য এটি শুধু একটি যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি নয়, এটি আমাদের সমুদ্রপথ রক্ষার অঙ্গীকার এবং প্রতিরক্ষা শিল্পে আত্মনির্ভরতার দিশারী”, অন্যদিকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক বিবৃতিতে জানান,

“ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে এই প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব আমাদের কৌশলগত সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে এবং উভয় দেশের নিরাপত্তা ও প্রযুক্তি উন্নয়নে সহায়ক হবে”; ভারতের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশংসিত হয়েছে, বিশেষ করে এমন সময়ে যখন বিশ্ব রাজনীতিতে চীন ও পাকিস্তানের সক্রিয়তা দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে; স্থানীয় স্তরে রাফাল মেরিন কেনার সিদ্ধান্তে প্রতিরক্ষা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বহু সংস্থা আশাবাদী হয়ে উঠেছে, কারণ দেশীয় উৎপাদনের মাধ্যমে লক্ষাধিক কর্মসংস্থান তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে এবং মেক ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচির আওতায় দেশের প্রযুক্তিগত দক্ষতাও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে; যদিও সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির কারণে কিছু অর্থনীতিবিদ প্রশ্ন তুলেছেন, তবে সরকার মনে করে, বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ছাড়া দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা সম্ভব নয়; এর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও একটি আশার সঞ্চার হয়েছে যে, এই চুক্তি দেশের নিরাপত্তাকে আগামীর জন্য আরও দৃঢ় করবে; সব মিলিয়ে বলা যায়, ভারত-ফ্রান্সের এই রাফাল মেরিন চুক্তি ভারতের প্রতিরক্ষা শক্তির ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলো, যা দেশের সামরিক কৌশলগত অবস্থানকে বিশ্বমঞ্চে আরও সুদৃঢ় ও মর্যাদাপূর্ণ করে তুলবে।