‘I ran away in fear’ says arrested Bablu in Panagarh case:-পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার পানাগড়ে ঘটে যাওয়া নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ দিনের মাথায় গ্রেপ্তার হলেন প্রধান সন্দেহভাজন বাবলু যাদব। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। শুক্রবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বাবলু নিজের মুখ খুলে জানায়, ঘটনার পর সে আতঙ্কে পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পুলিশের নজরদারি এড়াতে পারেনি। কাঁকসা থানার পুলিশ এখন তদন্তের গতি বাড়াতে বাবলুকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে, যাতে এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা, তা স্পষ্ট করা যায়।
গত সপ্তাহে পানাগড়ের এক নির্জন এলাকায় উদ্ধার হয় সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায় নামে এক মহিলার মৃতদেহ। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, সাদা রঙের একটি গাড়িতে করে তাঁকে ঘটনাস্থলে আনা হয়েছিল, এরপরই তাঁকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর থেকেই সেই সাদা গাড়িটি পুলিশের সন্দেহের তালিকায় ছিল। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে, গাড়িটির মালিক বাবলু যাদব, যিনি ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা ছিলেন।
শুক্রবার আদালতে তোলার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাবলু জানায়, “আমি ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিলাম। জানতাম না কী হবে, তাই আত্মগোপন করেছিলাম।” পুলিশের দাবি, এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত ছিল এবং বাবলু ছাড়া আরও কয়েকজন এতে জড়িত থাকতে পারে। তবে বাবলু এখনও পুরো সত্য প্রকাশ করেনি।
কাঁকসা থানার পুলিশ এখন চেষ্টা করছে, বাবলুর মোবাইল কল লিস্ট ও আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখতে। পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, “প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তবে আরও তথ্য জানার জন্য বাবলুকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।” পুলিশের ধারণা, হত্যার পেছনে ব্যক্তিগত শত্রুতা বা আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত কোনও বিষয় থাকতে পারে।
পানাগড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় এক দোকানদার বলেন, “এমন ঘটনা আমাদের এলাকায় আগে কখনও ঘটেনি। আমরা আতঙ্কে আছি।” অনেকে আবার পুলিশের তদন্তের গতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “পাঁচ দিন পর একজনকে ধরা হলো, কিন্তু ঘটনার আসল কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। আমরা চাই পুলিশ পুরো সত্য সামনে আনুক।”
এই ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি তুলছেন। বিশেষ করে পানাগড়ের নির্জন এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়ানোর কথা বলছেন সকলে। রাজনৈতিক মহল থেকেও তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিরোধীরা বলছেন, পুলিশের ভূমিকা যথেষ্ট সন্দেহজনক, কারণ ঘটনার পর এতদিনেও মূল পরিকল্পনাকারী ধরা পড়েনি।
পুলিশ এখন চেষ্টা করছে, বাবলুর স্বীকারোক্তি থেকে আরও তথ্য বের করে আনতে। পাশাপাশি, সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাবলুর কী সম্পর্ক ছিল, কেন তাকে হত্যা করা হলো, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কাঁকসা থানার তদন্তকারীদের মতে, খুব শীঘ্রই আরও কিছু গ্রেপ্তার হতে পারে।
এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়ালেও, সকলে চাইছে দোষীরা উপযুক্ত শাস্তি পাক এবং পানাগড়ে শান্তি ফিরুক।