...
Friday, April 4, 2025
Google search engine
Homeটপ 10 নিউসমহাকাশে কেমন রয়েছেন সুনিতা উইলিয়ামস? জানিয়ে দিল NASA

মহাকাশে কেমন রয়েছেন সুনিতা উইলিয়ামস? জানিয়ে দিল NASA

How is Sunita Williams in space? NASA informed:দীর্ঘ সময় মহাকাশে কাটিয়ে এসেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস এবং তার সহকর্মী বুচ উইলমোর। তাদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে যখন জনমনে নানা গুঞ্জন চলছিল, ঠিক তখনই NASA স্পষ্ট জানিয়ে দিলো, মহাকাশে থাকা সমস্ত নভোচরই সুস্থ রয়েছেন। সুনীতা উইলিয়ামস, যিনি গত ৭ জুন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS) এ গিয়েছিলেন, তার ও বুচের স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো ধরনের উদ্বেগের কারণ নেই। NASA-র মুখপাত্র জিমি রাসেল জানিয়েছেন, ISS-এ থাকা সমস্ত নভোচর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্যেই রয়েছেন, এবং তাদের স্বাস্থ্যের কোন রকম অবনতি হয়নি।

গত কয়েক মাস ধরেই মহাকাশ স্টেশনে থাকা নভোচরদের একটি বিশেষ যান্ত্রিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। উৎক্ষেপণের পরপরই সুনীতা এবং বুচের মহাকাশযানে একাধিক যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এ ধরনের অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে কোনো রকম বিরতি না নিয়ে তারা নিজেরাই সেই সমস্যাগুলি মেরামতের চেষ্টা করেন। সমস্ত বাধা পার করে, তারা সফলভাবে মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছে যান। তবে এরপরে পুনরায় যান্ত্রিক ত্রুটির মুখোমুখি হন তারা। NASA প্রথমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্টারলাইনারকে সুনীতাদের ছাড়াই ফিরিয়ে আনা হবে। তবে পরে সেই পরিকল্পনায় পরিবর্তন আসায় তাদের এখনো মহাকাশেই থাকতে হচ্ছে।

এই সময়ে সুনীতা ও বুচের সুরক্ষার জন্য NASA সকল ব্যবস্থা নিয়েছে। NASA-র মুখপাত্র আরও জানিয়েছেন, “মহাকাশ স্টেশনে অক্সিজেন, খাবার, জল এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। পাশাপাশি কার্গো ফ্লাইটের মাধ্যমে নতুন করে সরঞ্জামও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। মহাকাশে খাদ্য সরবরাহে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না, কারণ নভোচররা তাদের নিজস্ব উদ্যোগে মহাশূন্যে সবজি ফলানোর কাজেও ব্যস্ত রয়েছেন।” এই মহাকাশ কৃষিকাজের মাধ্যমে সুনীতা এবং তার দল মহাশূন্যে খাদ্য উৎপাদনের বিষয়ে গবেষণা করছেন, যা ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মহাকাশে দীর্ঘ সময় ধরে থাকার ফলে নভোচরদের মানসিক ও শারীরিক অবস্থার উপর প্রভাব পড়তে পারে। তাই NASA নিয়মিত তাদের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। ISS-এ থাকা মহাকাশচারীদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতার ব্যাপারটাও গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে, যেন তারা মহাশূন্যে থাকা অবস্থায় সুস্থ থাকতে পারেন এবং মানসিক স্থিতি বজায় রাখতে পারেন। নভোচররা প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ধরে শরীরচর্চা করেন, যা তাদের শরীরকে মহাকাশের বিশেষ পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে সহায়ক।

এই পরিস্থিতি সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মহাকাশে দীর্ঘ সময় থাকা ব্যক্তিদের উপর শূন্য-মাধ্যাকর্ষণ এবং মহাশূন্যের বিকিরণ প্রভাব ফেলে। শূন্য-মাধ্যাকর্ষণ অবস্থায় শরীরের পেশী এবং হাড়ের শক্তি হ্রাস পেতে পারে, ফলে তাদের জন্য মহাকাশে ব্যায়াম করা অত্যন্ত জরুরি। এছাড়াও মহাশূন্যে থাকা অবস্থায় মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ নয়। তবে সুনীতা ও তার সহকর্মীদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও NASA-র অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে তারা এই চ্যালেঞ্জগুলিকে সামলে নিচ্ছেন।

NASA-এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, মহাকাশযাত্রার সময় যান্ত্রিক সমস্যাগুলি একটি সাধারণ ব্যাপার, এবং এর জন্য মহাকাশচারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাই সুনীতা এবং বুচের জন্যও এই যান্ত্রিক ত্রুটিগুলির সমাধানে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছিল। NASA আরও জানিয়েছে, “আমাদের মহাকাশচারীরা অত্যন্ত অভিজ্ঞ এবং দক্ষ। তাদেরকে সবরকম যান্ত্রিক ত্রুটির সমাধানের জন্য প্রশিক্ষিত করা হয়েছে।”

মহাকাশে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারীর সাফল্য নিয়ে ভারতের মহাকাশপ্রেমীরা উচ্ছ্বসিত। স্থানীয়রা বলছেন, “সুনীতা আমাদের গর্ব। তিনি মহাকাশে দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। তার এই সাহসিকতার জন্য আমরা গর্বিত।” এই অভিযানের ফলে মহাকাশ গবেষণায় ভারতের অংশগ্রহণ এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। মহাকাশে যাত্রার চ্যালেঞ্জ এবং তার সাথে থাকা উত্তেজনার কথা শুনে অনেকেই উৎসাহিত হচ্ছেন এবং এই দুঃসাহসিক পদক্ষেপের জন্য সুনীতাকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন।

ezgif 2 c15069b398

NASA এই মুহূর্তে মহাকাশ স্টেশনে দীর্ঘ সময় ধরে নভোচরদের থাকার পরিণাম এবং তার ফলাফল নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও বেশি নভোচারীকে মহাকাশে পাঠানো এবং সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে অবস্থানের পরিকল্পনাও রয়েছে। এই গবেষণাগুলি মহাকাশ অভিযানের ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে এবং আরও সুদূর মহাকাশের দিকে মানুষকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

সুনীতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোরের এই অভিযান শুধুমাত্র মহাকাশে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা নয়, বরং বিজ্ঞান ও গবেষণার এক নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে। মহাকাশের কৃষিকাজ এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে নভোচারীরা প্রমাণ করেছেন যে মহাশূন্যে মানুষের জীবনযাত্রা সম্ভব, যা একদিন হয়তো আরও বড় মহাকাশ অভিযানের পথ প্রশস্ত করবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.