Hospital worker arrested for allegedly molesting patient : ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার অন্তর্গত হাড়োয়া গ্রামীণ হাসপাতালে চাঞ্চল্যকর এক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে এক রোগীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালেরই এক কর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, শুক্রবার ভোর চারটে নাগাদ ওই রোগীকে প্রেসার মাপার নাম করে অভিযুক্ত কর্মী অশ্লীল আচরণ করে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই রোগীর পরিবারের সদস্যরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ক্রমেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যার ফলে হাসপাতালের পরিষেবা ব্যাহত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, “রোগী যখন একা ছিলেন, তখনই অভিযুক্ত ব্যক্তি সুযোগ নিয়ে তার সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ করে। রোগী চিৎকার করলে অন্যান্য রোগীরাও বিষয়টি জানতে পারেন। এরপরই খবর যায় পরিবারের কাছে।” ঘটনাস্থলে রোগীর আত্মীয়রা এসে অভিযুক্ত কর্মীর শাস্তির দাবি তোলেন এবং হাসপাতালের সামনের রাস্তা অবরোধ করেন। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, “হাসপাতালের মতো জায়গায় যদি রোগীরা নিরাপদ না থাকেন, তাহলে আমরা কোথায় যাবো?”খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছায় হাড়োয়া থানার পুলিশ। উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করেও প্রথমে ব্যর্থ হয় পুলিশ। স্থানীয়দের দাবি ছিল, অভিযুক্তকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে এবং হাসপাতালের সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করতে হবে। পরে, পুলিশের আশ্বাসে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত হাসপাতাল কর্মীকে আটক করা হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে।
এই ঘটনার পর হাসপাতালের অন্যান্য রোগী ও তাদের পরিবারের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, “হাসপাতাল এমন একটা জায়গা যেখানে রোগীরা সুস্থ হতে আসেন, কিন্তু সেখানে যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে, তাহলে আর নিরাপদ কোথায়?” স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং দোষী সাব্যস্ত হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ধরনের ঘটনা হাসপাতালের সার্বিক নিরাপত্তার ঘাটতিকে সামনে আনছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত প্রতিটি কর্মীর অতীত রেকর্ড খতিয়ে দেখা, রোগীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং হাসপাতালে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো। পাশাপাশি, রোগীদের সাথে নারী স্বাস্থ্যকর্মীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা দরকার, বিশেষত রাতের শিফটে।
এদিকে, সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, “নারী রোগীরা কি আর হাসপাতালে নিরাপদ নন?” কেউ কেউ আবার কড়া শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন।এই ঘটনা শুধুমাত্র একজন রোগী বা হাসপাতালের নয়, গোটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। প্রশাসনের তরফ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে এই ধরনের ঘটনা আরও বাড়তে পারে, যা মানুষের মধ্যে হাসপাতালের প্রতি ভরসা নষ্ট করবে। এখন দেখার বিষয়, তদন্ত কতটা স্বচ্ছ হয় এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি আদৌ কঠোর শাস্তি পায় কি না।