Tuesday, June 10, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্য তীব্র দাবদাহে স্বস্তি পেতে ভরসা তালশাঁস

 তীব্র দাবদাহে স্বস্তি পেতে ভরসা তালশাঁস

Hope for relief from intense heat with palm leaves:রাজ্যজুড়ে অস্বাভাবিক গরম, পাখা-এসি-ওআরএস—সব কিছুর পরেও যেন স্বস্তি আসছে না! সূর্য মাথার উপরে রাগ করে বসে আছে সকাল থেকে, আর শহরজুড়ে জলীয় বাষ্পে ভিজে-ভিজে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি, মালদা থেকে হাওড়া—রাজ্যের প্রায় সর্বত্রই একই চিত্র। দিনের শুরুতেই গরমে হাঁফিয়ে উঠছে রাস্তাঘাট, মানুষের বাইরে বের হওয়ার ইচ্ছেই হচ্ছে না। প্রায় ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে শহরের মানুষ। অথচ, এই গরমেও একটাই স্বস্তির খোঁজ—তালের শাঁস। হ্যাঁ, এই গরমে তালের শাঁস যেন পরিণত হয়েছে প্রকৃতির পক্ষ থেকে পাঠানো শীতল উপহারে।তালের শাঁস শুধু স্বাদের জন্য নয়, এর মধ্যেই রয়েছে অসাধারণ ঠান্ডা রাখার গুণ। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ এবং কর্মরত মানুষজনের জন্য তালের শাঁস একেবারে আদর্শ। এই শাঁসের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক জলীয় উপাদান শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে, আর তার সঙ্গে শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখে। শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে দেখা যাচ্ছে ছোট-ছোট দোকানে বা রাস্তার পাশেই বিক্রি হচ্ছে তালশাঁস।শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডের এক তালশাঁস বিক্রেতা মনোরঞ্জন ঘোষ জানালেন, “এবারের গরমে এত চাহিদা আগে দেখিনি। সকাল ৮টা থেকেই ক্রেতা আসে, দুপুর না হতেই সব শেষ।” কলকাতার ভবানীপুর এলাকার ফল বিক্রেতা জগন্নাথ দাস জানালেন, “এবারে আমরা মালদা ও বিহার থেকে তাল আনছি। তবে মালদার তালশাঁসের গন্ধ ও স্বাদ বেশি ভালো বলে সবাই খুঁজে খুঁজে সেটা চায়।”

এই তালের শাঁস বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে, অনেকেই সঙ্গে দিচ্ছেন একটু লবণ আর বরফ জলের স্পর্শ। খেটে খাওয়া মানুষ, রিকশাওয়ালা, দিনমজুর, পথচারী সকলেই একটু আরাম পেতে এই প্রাকৃতিক ঠান্ডার আশ্রয় নিচ্ছেন। চিকিৎসকরাও বলছেন, “গ্রীষ্মে শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য ও জলের অভাব পূরণের জন্য তালশাঁস অত্যন্ত কার্যকরী। এর মধ্যে থাকা পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, এবং বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান শরীরের জন্য খুব উপকারী।”গরমে হিটস্ট্রোকের আশঙ্কা যেমন বাড়ে, তেমনই ডিহাইড্রেশনও একটি বড় সমস্যা। তাই শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং স্কুলগুলোতেও অভিভাবকরা পরামর্শ পাচ্ছেন শিশুদের তালশাঁস খাওয়ানোর জন্য। কলকাতার এক পেডিয়াট্রিশিয়ান ডাঃ বর্ণালী চক্রবর্তী বলেন, “তালের শাঁস শিশুদের জন্য নিরাপদ ও উপকারী। গ্রীষ্মে ডায়রিয়া বা হিট র‍্যাশের সমস্যাও কমে।

images?q=tbn:ANd9GcRMBLPWrjVuj3ypFBGwyr7Mj os NN1WOQoiw&s

”অন্যদিকে তালশাঁসের জনপ্রিয়তায় লাভবান হচ্ছেন গ্রামের চাষিরাও। মালদা, নদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর এবং মুর্শিদাবাদের তালচাষিরা এখন ভালো দামে তাঁদের ফল বিক্রি করতে পারছেন। চাষি কৃষ্ণপদ মণ্ডল জানান, “আগে তাল গাছের দাম কেউ দিত না, এবার সবাই বলছে কেটে দিও না, তাল বিক্রি করো। এটা আমাদের জন্য বড় উৎসাহ।”শহরের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও এখন তালশাঁস বিতরণ করছে বাসস্ট্যান্ড, হাসপাতাল ও পুরসভা চত্বরে। বিভিন্ন পুরসভা যেমন উত্তর দমদম, বালিগঞ্জ এবং বেহালা পুরসভা ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে বিশেষ ক্যাম্প শুরু করেছে।এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও গরমে জনস্বাস্থ্য রক্ষা এবং প্রচারের অংশ হিসেবে তালশাঁসকে কেন্দ্র করে বিশেষ প্রচার শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, তালশাঁসের মতো প্রাকৃতিক খাদ্য শরীরের জন্য অনেক বেশি কার্যকরী এবং নিরাপদ।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments