Gunman attacks in America, 3 dead, many injured:আমেরিকায় আবারও বন্দুকবাজের তাণ্ডব। স্বাধীনতা দিবসের উৎসব শেষ হতেই হিংসার রক্তাক্ত ছাপ পড়ল ফিলাডেলফিয়ার রাজপথে। সোমবার রাতে ফিলাডেলফিয়ার গ্রেস ফেরি এলাকার এক জনবহুল রাস্তায় আচমকাই শুরু হয় এলোপাথাড়ি গুলি। উৎসব শেষে মানুষ তখনও রাস্তায়—হাসি, গল্প, ঘোরাফেরা—তারই মাঝে হঠাৎ এক বন্দুকধারীর গুলিচালনা নিমেষে উৎসবকে পরিণত করে আতঙ্কে। গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান ৩ জন, গুরুতর আহত হন কমপক্ষে ১০ জন। আতঙ্কে রাস্তায় পড়ে যায় ছোট-বড়, কেউ লুকোতে ব্যস্ত, কেউ চিৎকার করছে সাহায্যের আশায়।প্রত্যক্ষদর্শী এক নারী বলেন, “আমি আমার ছেলেকে নিয়ে রাস্তার অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে ছিলাম, হঠাৎ করেই দেখি সবাই দৌড়চ্ছে, কেউ একজন বন্দুক হাতে গুলি চালাচ্ছে। আমি ছেলেকে নিয়ে রাস্তার পাশের গাড়ির নিচে লুকিয়ে পড়ি।” এই হৃদয়বিদারক অভিজ্ঞতা শুধু তাঁর নয়—প্রায় প্রত্যেক বাসিন্দাই সেই রাতে মৃত্যুভয়কে খুব কাছ থেকে ছুঁয়ে এসেছেন।
ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ বাহিনী। গোটা এলাকা ঘিরে ফেলা হয়, আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা। পুলিশ ইতিমধ্যেই একজন সন্দেহভাজনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করেছে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি আধুনিক স্বয়ংক্রিয় রাইফেল ও একাধিক ম্যাগাজিন। তবে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, হামলাকারী একাই ছিল নাকি তার সঙ্গে আরও কেউ ছিল, তা এখনো নিশ্চিত নয়।এই ঘটনাটি এমন সময় ঘটল যখন আমেরিকা সদ্য উদযাপন করল তার ২৪৮তম স্বাধীনতা দিবস। একটি স্বাধীন দেশের গর্বের দিনে সাধারণ মানুষ যখন একসাথে এসেছে উৎসব পালন করতে, ঠিক তখনই এই রক্তাক্ত হামলা আবারও মনে করিয়ে দিল—আমেরিকায় বন্দুক নিয়ন্ত্রণ এখনো এক গুরুতর সমস্যা।

শুধু ফিলাডেলফিয়া নয়, এর দুদিন আগেই ইন্ডিয়ানাপলিসেও একই ধরনের বন্দুকবাজের হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটে। সেখানেও বেশ কয়েকজন নিহত হন এবং বহু মানুষ আহত হন। এই ধারাবাহিক বন্দুক হিংসার ফলে সারা দেশে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক এবং ক্ষোভ। একের পর এক গুলির ঘটনার মধ্যে পড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে—এত স্বাধীনতা কি নিরাপত্তার শেষ পরিণতি?বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরণের হামলা আমেরিকার অস্ত্র আইন নিয়ে প্রশ্ন তোলে। বন্দুক আইনের নিয়ম শিথিল হওয়ায় অপরাধীরা সহজেই আগ্নেয়াস্ত্র হাতে পেয়ে যাচ্ছে। ফিলাডেলফিয়ার পুলিশ কমিশনার ড্যানিয়েল আউটলো জানান, “এই ধরনের ঘটনাগুলি প্রতিরোধ করতে গেলে আমাদের আরও কড়া বন্দুক আইন দরকার। যতক্ষণ না আমরা বন্দুক কেনা ও ব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে পারছি, ততদিন এই হিংসা বন্ধ করা অসম্ভব।”