Golden opportunity for lifetime visa if you are Indian:সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর (UAE) দরজা এবার ভারতীয়দের জন্য আরও প্রশস্ত হচ্ছে। যে ভিসা এতদিন শুধুমাত্র কোটিপতিদের স্বপ্ন ছিল, সেটাই এখন হয়ে উঠেছে মধ্যবিত্ত ভারতীয়দের নাগালের মধ্যে। এককথায়, ভারতীয় নাগরিক হলেই আজীবন ভিসা পাওয়ার এক সুবর্ণ সুযোগ হাজির হয়েছে—আর সেটাও মাত্র ২৩ লক্ষ টাকার বিনিয়োগেই! এই যুগান্তকারী উদ্যোগটি নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর সরকার, এবং এটি বাস্তবায়ন করছে রায়দ গ্রুপ নামে একটি স্থানীয় সংস্থা, যারা ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে নাম করা রিয়েল এস্টেট এবং বাণিজ্যিক ক্ষেত্রের প্রবল প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান।আগে যেখানে গোল্ডেন ভিসা পেতে হলে কমপক্ষে ৪.৬৫ কোটি টাকার মতো বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করতে হত, সেখানে এখন বিনিয়োগের পরিমাণ এক ধাক্কায় অনেকটাই কমিয়ে আনা হয়েছে। আর সবচেয়ে বড় কথা, এখন এই বিনিয়োগ কোনও রিয়েল এস্টেট বা কমার্শিয়াল খাতে বাধ্যতামূলক নয়। এই ঘোষণা সামনে আসতেই ভারতের একাধিক বাণিজ্যিক সংস্থা, স্টার্টআপ উদ্যোক্তা এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষজন এই সুযোগকে জীবনের মোড় ঘোরানোর দিশা হিসেবে দেখছেন।
রায়দ গ্রুপের মুখপাত্র জানিয়েছেন, “এটি একটি পাইলট প্রোজেক্ট যা শুধুমাত্র ভারত ও বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য প্রথম পর্যায়ে চালু হচ্ছে। নিরাপত্তা, বৈধতা এবং সামাজিক প্রভাব খতিয়ে দেখার পর বেছে নেওয়া হবে উপযুক্ত প্রার্থীদের। আবেদনকারী ব্যক্তির ক্রাইম রেকর্ড, সামাজিক মাধ্যমে তাঁর কার্যকলাপ, এবং অতীত রেকর্ড খুঁটিয়ে দেখা হবে। সবদিক থেকে সন্তোষজনক মনে হলে তবেই তাঁকে গোল্ডেন ভিসার ছাড়পত্র দেওয়া হবে।”কলকাতার বাসিন্দা এবং প্রবাসী হতে ইচ্ছুক একজন ব্যবসায়ী বিক্রম গুহ বলেন, “আগে ইউএই-তে স্থায়ীভাবে থাকার জন্য যে পরিমাণ বিনিয়োগ লাগত, তা সাধারণ মধ্যবিত্তদের পক্ষে ভাবাই যেত না। কিন্তু এখন যেভাবে সরকার বিনিয়োগের অঙ্ক কমিয়ে এনেছে, তাতে এই ভিসা অনেকটা মানুষের সাধ্যের মধ্যে চলে এসেছে।”এই স্কিমটি বিশেষত তাঁদের জন্য যারা বিদেশে গিয়ে দীর্ঘমেয়াদি ভাবে বসবাস এবং ব্যবসা করতে চান, কিন্তু নাগরিকত্ব সংক্রান্ত জটিলতায় বা প্রচুর বিনিয়োগের ধাক্কায় সাহস পাচ্ছিলেন না। এমনকি আইটি সেক্টর, হেল্থ কেয়ার, ফিনটেক, টেকনোলজি স্টার্টআপ সহ একাধিক ক্ষেত্রে কাজ করা বহু তরুণ উদ্যোক্তা এই ভিসার আবেদন করার কথা ভাবছেন।

আন্তর্জাতিক পরিযায়ী গবেষণা সংস্থাগুলির মতে, গত পাঁচ বছরে ভারত থেকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে অভিবাসনের প্রবণতা প্রায় ২৫% বেড়েছে। এই গোল্ডেন ভিসা প্রকল্প সেই সংখ্যাটিকে আরও ত্বরান্বিত করবে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।অন্যদিকে, এই প্রকল্পের সামাজিক দিকটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। ইউএই সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, এই নতুন স্কিমে যেন কোনও অবৈধ কাজ বা নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি না তৈরি হয়, সেজন্য প্রত্যেক আবেদনকারীকে কঠোর ভেটিং প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে তাঁদের সামাজিক মিডিয়া, পেশাগত ব্যাকগ্রাউন্ড, রাজনৈতিক অবস্থান, এবং আগের যেকোনও অপরাধের রেকর্ড বিশ্লেষণ করা হবে।পাইলট প্রোজেক্টের সাফল্য অনুযায়ী এই স্কিম ভবিষ্যতে অন্যান্য দেশের নাগরিকদের জন্যও খোলা হতে পারে, তবে ভারতীয় ও বাংলাদেশি নাগরিকরা প্রাথমিকভাবে এই প্রকল্পের ‘প্রাইম বেনিফিশিয়ারি’ বলে ঘোষণা করেছে রায়দ গ্রুপ।