Go back slogans surround Jitendra Tiwari in Jamuria : আসানসোলের জামুড়িয়া এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে উঠল শুক্রবার। দরবারডাঙা বালিঘাটে হঠাৎ করেই বিজেপি নেতা ও প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা, এবং স্থানীয়রা একযোগে “গো ব্যাক” স্লোগান দিতে থাকেন। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে জামুড়িয়া থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে কী কারণে এমন তীব্র প্রতিক্রিয়া?
বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি অভিযোগ করেছেন যে দরবারডাঙা বালিঘাট থেকে অবৈধভাবে বালি তোলা হচ্ছে, যা একদিকে পরিবেশের ক্ষতি করছে, অন্যদিকে এলাকায় পানীয় জলের সংকট তৈরি করতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই জানিয়েছেন, এই বালিঘাট থেকে দীর্ঘদিন ধরে বেআইনি বালি উত্তোলন চলছে, যার ফলে ভূগর্ভস্থ জলস্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এরই প্রতিবাদে শুক্রবার জিতেন্দ্র তিওয়ারি বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বদের সঙ্গে ওই এলাকা পরিদর্শনে যান। কিন্তু পরিস্থিতি তখনই হাতের বাইরে চলে যায়, যখন কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তাঁদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এবং “গো ব্যাক” স্লোগান তোলেন।এই ঘটনার পরেই রাজনৈতিক মহলে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। জিতেন্দ্র তিওয়ারি দাবি করেছেন, “এটি পরিকল্পিত হামলা। কিছু রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি অবৈধ বালি খননের স্বার্থ বজায় রাখতে আমাকে বাধা দিতে চাইছে। পুলিশ প্রশাসন যদি চায়, তবে মুহূর্তের মধ্যেই এই বেআইনি কাজ বন্ধ হতে পারে। কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।”
অন্যদিকে, জামুড়িয়ার স্থানীয় কিছু বাসিন্দা এবং তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, “এটি রাজনৈতিক প্রচারের অংশ। দীর্ঘদিন ধরে এখানে বালি খাদানের কাজ চলছে, কিন্তু এই সময়ে এসে হঠাৎ কেন এই পরিদর্শন? বিজেপি শুধুমাত্র রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে।”বিক্ষোভের খবর পেয়ে জামুড়িয়া থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এই ঘটনার পেছনে কারা ছিল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।” পুলিশের তরফে আরও জানানো হয়েছে যে এলাকায় বেআইনি বালি খাদান বন্ধ করতে প্রশাসনের তরফে বেশ কয়েকবার অভিযান চালানো হয়েছে, এবং ভবিষ্যতেও এই ধরনের অভিযান চলবে।এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই বলেছেন, “আমাদের পানীয় জলের সমস্যা দিন দিন বাড়ছে, এইভাবে বালি তোলা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আরও বড় সমস্যার সৃষ্টি হবে।” আবার কিছু মানুষ মনে করছেন, “এটি শুধুই রাজনৈতিক লড়াই, সাধারণ মানুষের জীবনের বাস্তব সমস্যাগুলো উপেক্ষিত হচ্ছে।”
এই ঘটনার ফলে জামুড়িয়া ও আসানসোলের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে। সামনে লোকসভা নির্বাচন, তার আগে এই ধরনের ঘটনা রাজনৈতিক মেরুকরণ আরও তীব্র করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক লড়াই আরও বাড়বে, এবং পুলিশ-প্রশাসনের উপরও চাপ তৈরি হবে যাতে বেআইনি বালি খাদান বন্ধ করা হয়।পরিস্থিতি আপাতত শান্ত থাকলেও, এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। প্রশাসন যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তবে ভবিষ্যতে আরও বড় আন্দোলন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।