Ganga festival begins in Shankarpur:-শঙ্করপুরে এই বছরের গঙ্গোৎসবের সূচনা হলো এক মহাসমারোহের মধ্য দিয়ে। মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই উৎসব শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি সমুদ্রতীরবর্তী এলাকার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতীক। এ বছর ৪২তম বর্ষে পদার্পণ করেছে এই গঙ্গোৎসব। শঙ্করপুর ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এবং রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরির উপস্থিতিতে এই উৎসব এক অন্য মাত্রা পেয়েছে। উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সুদৃশ্য প্রতিমা, মণ্ডপ, এবং আলোকসজ্জায় সেজে উঠেছে পুরো শঙ্করপুর।
দিঘা থেকে শুরু করে শৌলা, মন্দারমণি, জুনপুট, এবং খেজুরির রসুলপুর নদী পর্যন্ত সমুদ্রতীরের বিভিন্ন অঞ্চলে পুণ্যার্থীদের ঢল ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রথাগতভাবে মকর সংক্রান্তির স্নান করতে সমুদ্র তীরে ভিড় করেন হাজারো মানুষ। দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ এবং স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং সহায়তা শিবির স্থাপন করা হয়েছে। এখানে পুণ্যার্থীদের জন্য পানীয় জল, চিকিৎসা, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিষেবার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।
উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিল সি ফুড ফেস্টিভ্যাল। বিভিন্ন প্রকারের স্থানীয় সামুদ্রিক খাবার যেমন মাছের কারি, চিংড়ি মালাইকারি, এবং অন্যান্য সামুদ্রিক খাবারের সম্ভার মানুষকে আনন্দ দিয়েছে। আঞ্চলিক খাবারের এই প্রদর্শনী স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জন্য যেমন আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করেছে, তেমনই পর্যটকদের মন কেড়েছে।
উদ্বোধনী মঞ্চে অখিল গিরি বলেন, “পৌষ সংক্রান্তি আমাদের সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি আমাদের ধর্ম এবং ঐতিহ্যের অংশ। শঙ্করপুর একটি মৎস্য বন্দর, যা বহু মানুষের জীবিকার উৎস। আমি চাই এখানে আরও উন্নয়ন হোক। এ বছর আমি বিধায়ক তহবিল থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করব, এবং শঙ্করপুরে একটি স্থায়ী গঙ্গা মন্দির নির্মাণের প্রস্তাবও পাঠাবো।”

এই অনুষ্ঠানে স্থানীয় দুস্থ মানুষের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ এবং মেধাবী কিন্তু আর্থিকভাবে অসচ্ছল ছাত্রছাত্রীদের জন্য আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়। এই উদ্যোগ এলাকার মানুষের জীবনে এক ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। শঙ্করপুর ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক স্বদেশ রঞ্জন নায়ক বলেন, “উৎসব শুধু আনন্দের জন্য নয়, এটি মানুষের সেবার একটি মাধ্যম। আমরা চাই শঙ্করপুরের উন্নয়নের সঙ্গে এখানকার মানুষের জীবনমানও উন্নত হোক।”
উৎসবের সময় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং ভিড় সামলানোর জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। বিভিন্ন পরিবহন সংস্থা অতিরিক্ত বাস পরিষেবা চালু করায় ভ্রমণকারীরা সহজেই উৎসবে যোগ দিতে পেরেছেন।