Gandhi Mor PCBL Rotary 4 Lane by Adda’s business venture : দুর্গাপুরের মানুষের বহুদিনের স্বপ্ন এবার পূরণ হতে চলেছে। দুর্গাপুরের গান্ধী মোড় থেকে বিধাননগরের পিসিবিএল রোটারি পর্যন্ত ফোর-লেন রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে, যা দুর্গাপুরবাসীর দৈনন্দিন যাতায়াতকে করবে অনেকটাই সহজ এবং স্বাচ্ছন্দ্যময়। এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগটির পিছনে রয়েছেন আড্ডা (আসানসোল দুর্গাপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি)-র চেয়ারম্যান কবি দত্ত। আজ শুক্রবার, এই পথের শুভ শিলান্যাস করলেন রাজ্যের কৃষি ও গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ও আড্ডার চেয়ারম্যান কবি দত্ত।
কবি দত্ত জানিয়েছেন, “এই নতুন রাস্তা দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের যানবাহনের চাপে কিছুটা হলেও হালকা করবে। পাশাপাশি শহরের ভিতরের মানুষের সুবিধার্থে এই ফোর-লেন রাস্তা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল। জাতীয় সড়কের পাশাপাশি সিটি সেন্টার থেকে বিধাননগর পর্যন্ত এই রাস্তাটি চওড়া হলে দুর্গাপুরবাসীর যাতায়াতে অনেকটাই সুবিধা হবে।” তিনি আরও বলেন, “রাস্তার সৌন্দর্য এবং পরিবেশ সুরক্ষার জন্য রাস্তার মাঝখানে গাছ গাছালি লাগানো হবে এবং রাস্তার ধারে থাকবে কিয়স্ক, যা দুর্গাপুরের রাস্তাগুলির মধ্যে বিশেষ বৈশিষ্ট্য আনবে।”

দুর্গাপুরের এই গান্ধী মোর সংলগ্ন রাস্তাটি সিটি সেন্টার থেকে ডিভিসি মোড় পর্যন্ত শহরের অন্যতম ব্যস্ততম রাস্তা। মহকুমা শাসকের বাংলোর পাশ দিয়ে এই রাস্তা ডিভিসি মোড়কে ছুঁয়ে যাবে, যা ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত হবে। পথচারীদের জন্য থাকছে আধুনিক পথবাতি, যা রাতের বেলায় রাস্তার দুই ধারে আলোকিত করবে এবং শহরকে আরও সুরক্ষিত করে তুলবে।
মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার জানান, “এডিডিএ এবং ডিএমসি (দুর্গাপুর মিউনিসিপাল কর্পোরেশন) মিলে শহরের উন্নয়নে নিরন্তর চেষ্টা করছে। এই উদ্যোগ দুর্গাপুরের মানুষের জন্য অনেকটাই সহায়ক হবে। এই ধরনের আধুনিক পরিকাঠামো তৈরি হলে শহরের মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা আরও উন্নত হবে।” তিনি বলেন, “আড্ডার চেয়ারম্যানের এই প্রচেষ্টা শহরের পরিবহন ব্যবস্থাকে আরও গতিশীল করবে এবং শিল্পাঞ্চলের জন্য সুবিধাজনক প্রমাণিত হবে।”
এই রাস্তার বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে স্থানীয় মানুষজনের মধ্যে এক ধরনের উৎসাহ ও আশাবাদ লক্ষ্য করা গেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ফোর-লেন রাস্তার উন্নয়নের ফলে এলাকার অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। ব্যবসায়ীরা মনে করেন, রাস্তা প্রশস্ত হওয়ার পর এই এলাকায় ব্যবসার সুযোগ আরও বাড়বে। এছাড়া, নতুন এই রাস্তায় বিশেষ নজর দেওয়া হবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ওপর, যাতে দুর্ঘটনার হার কমানো যায়। ট্রাফিক আইন মেনে চলার বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনও সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
আড্ডা চেয়ারম্যান কবি দত্ত জানিয়েছেন, প্রথম পর্যায়ের এই রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পটি আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে। তীব্র গতিতে কাজ চলছে এবং দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে আড্ডা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রাস্তা নির্মাণ শেষ হওয়ার পর, এই পথ দুর্গাপুরের শিল্পাঞ্চল ও জাতীয় সড়কের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল হয়ে উঠবে, যা দুর্গাপুরের বাসিন্দা থেকে শুরু করে পর্যটকদের জন্যও সুবিধাজনক হবে। এই নতুন রাস্তা দুর্গাপুরের ট্রাফিক সমস্যাকে অনেকটাই সমাধান করবে বলে স্থানীয়রা আশাবাদী।

এই প্রকল্পটি দুর্গাপুর শহরের আঞ্চলিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ এবং মানুষের জীবনের মানোন্নয়ন করবে। দুর্গাপুরের মানুষের বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে এই ফোর-লেন রাস্তার মাধ্যমে। শহরের আধুনিকীকরণে এই ধরনের পদক্ষেপ আগামী দিনে দুর্গাপুরকে আরও সমৃদ্ধশালী করবে।