Food poisoning, ill 22 students:সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক দুঃখজনক ঘটনায়, পশ্চিমবঙ্গের একটি সরকারি স্কুলে ২২ জন পড়ুয়া খাদ্য বিষক্রিয়ার শিকার হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে স্কুলের মধ্যাহ্নভোজের মান নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে, যা শুধুমাত্র স্কুল প্রশাসন নয়, বরং সমগ্র এলাকার মানুষের মধ্যে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। পড়ুয়াদের দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের অবস্থা স্থিতিশীল হলেও এই ঘটনার গভীরে লুকিয়ে থাকা সমস্যাগুলি নিয়ে সমাজে আলোচনা শুরু হয়েছে।এই ঘটনাটি ঘটেছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, যেখানে পড়ুয়ারা প্রতিদিনের মতো মধ্যাহ্নভোজ করছিল। খাবারের মধ্যে ছিল ভাত, ডাল, সবজি ও ডিম। কিন্তু খাওয়া শেষ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই বেশ কয়েকজন পড়ুয়া পেটব্যথা, বমি এবং মাথা ঘোরা অনুভব করতে শুরু করে। স্কুলের শিক্ষকরা তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং অসুস্থ পড়ুয়াদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
চিকিৎসকরা জানান, প্রাথমিক পরীক্ষা করে বোঝা যায় যে এটি খাদ্য বিষক্রিয়ার একটি ঘটনা।পড়ুয়াদের স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে চিকিৎসকরা দ্রুত তাদের চিকিৎসা শুরু করেন। একাধিক ছাত্র-ছাত্রী পেটের ব্যথা ও বমি করার উপসর্গ দেখাচ্ছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তারা সম্ভবত বিষাক্ত খাবার গ্রহণের ফলে এই সমস্যায় ভুগছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ২২ জনের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর হলেও প্রাথমিক চিকিৎসার পর তারা স্থিতিশীল আছে। তবে, চিকিৎসকরা আরও পর্যবেক্ষণের জন্য তাদের হাসপাতালে রেখে দিয়েছেন।এই ঘটনার পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন,
“আমরা এই ঘটনার জন্য অত্যন্ত দুঃখিত এবং শীঘ্রই এর কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। আমরা সব সময় শিক্ষার্থীদের জন্য সুরক্ষিত ও পুষ্টিকর খাবার সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকি, কিন্তু এই ধরনের ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।” স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে তারা খাদ্যের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করার জন্য পাঠিয়েছে এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের মতে, স্কুলে মধ্যাহ্নভোজের মানের বিষয়ে আগে থেকেই অভিযোগ উঠছিল, কিন্তু এই ধরনের একটি বিপজ্জনক ঘটনা ঘটবে তা কল্পনাতীত ছিল। এক অভিভাবক বলেন, “আমাদের সন্তানেরা প্রতিদিন এই খাবার খায়, কিন্তু আজকের ঘটনার পরে আমরা খুবই চিন্তিত। আমরা চাই ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক এবং যারা দায়ী, তাদের শাস্তি দেওয়া হোক।”স্বাস্থ্য বিভাগও এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা স্কুলের খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা শুরু করেছে এবং প্রাথমিকভাবে খাদ্যের দূষণ বা খাদ্য সংরক্ষণ পদ্ধতিতে গাফিলতির সন্দেহ করছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, “আমরা সব দিক থেকে এই ঘটনার তদন্ত করছি। আমাদের প্রথম লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের সুস্থতা নিশ্চিত করা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধ করা।
“এই ধরনের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক হতে হবে। খাবারের মান নিয়মিত পরীক্ষা করা এবং নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করা একান্ত প্রয়োজনীয়। একইসঙ্গে, শিক্ষকদেরও বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত যাতে তারা তাত্ক্ষণিকভাবে সমস্যাটি চিনতে পারে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারে।এই ঘটনার পর থেকে স্কুলের অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ এবং সুষ্ঠু খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব, এবং এ বিষয়ে যে কোনও রকম গাফিলতি ভবিষ্যতে বড় সমস্যার কারণ হতে পারে।খাদ্য বিষক্রিয়ার এই ঘটনাটি আমাদের সামনে স্কুলে খাবার সরবরাহ এবং তার নিরাপত্তার বিষয়টিকে নতুন করে উন্মোচন করেছে। পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। এই ধরনের ঘটনাগুলি এড়াতে প্রশাসনকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়মিত তদারকি করতে হবে যাতে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য কোনওভাবেই ক্ষতির সম্মুখীন না হয়।