Saturday, April 12, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যমুড়িগঙ্গা নদীতে ডুবে থাকা জাহাজ সরানোর দাবি মৎস্যজীবীদের

মুড়িগঙ্গা নদীতে ডুবে থাকা জাহাজ সরানোর দাবি মৎস্যজীবীদের

Fishermen demand removal of sunken ship in Muriganga River:-১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘোড়ামারা দ্বীপের কাছে মুড়িগঙ্গা নদীতে একটি বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ দুর্ঘটনায় পড়ে। জাহাজটি নদীর চরে ধাক্কা লেগে দু’ভাগ হয়ে যায় এবং ক্রমশ ডুবতে শুরু করে। জাহাজটিতে বিপুল পরিমাণ ফ্লাই অ্যাশ বা ছাই ছিল, যা নদীর জলে মিশে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা জাহাজটি দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন, কারণ ছাই নদীর জলে মিশে গেলে জলজ প্রাণী ও মৎস্যসম্পদ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

Screenshot 2025 02 25 182301 1

ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারমেন অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মৎস্য দপ্তরে একটি দরখাস্ত জমা দেওয়া হয়েছে, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ডুবন্ত জাহাজ থেকে ছাই নদীতে মিশে গেলে জল দূষিত হবে এবং মাছের প্রজনন ও বৃদ্ধি ব্যাহত হবে। স্থানীয় মৎস্যজীবী সমীর মণ্ডল বলেন, “আমাদের জীবিকা সম্পূর্ণভাবে এই নদীর ওপর নির্ভরশীল। যদি ছাই নদীর জলে মিশে যায়, তাহলে মাছ মারা যাবে এবং আমরা বেকার হয়ে পড়ব।”

জানা গেছে, দুর্ঘটনার পর জাহাজের ১২ জন নাবিককে সাগর থানার পুলিশ উদ্ধার করে স্থানীয় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে আশ্রয় দিয়েছে। তবে জাহাজটি এখনও নদীতে ডুবে রয়েছে এবং ছাই নদীর জলে মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দা রমেশ হালদার বলেন, “প্রতিদিন আমরা দেখছি জাহাজটি আরও ডুবে যাচ্ছে। যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে আমাদের নদী দূষিত হয়ে যাবে।”

পরিবেশবিদদের মতে, ফ্লাই অ্যাশে আর্সেনিক, পারদ, ক্যাডমিয়াম এবং সীসার মতো ভারী ধাতু থাকে, যা জলজ প্রাণী ও মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ফ্লাই অ্যাশ নদীর জলে মিশে গেলে তা মাছের মাধ্যমে মানুষের খাদ্যশৃঙ্খলে প্রবেশ করতে পারে, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।”

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় পরিবেশ আদালত স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে। মামলায় রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের একাধিক দপ্তরকে যুক্ত করা হয়েছে, যাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে ডুবন্ত জাহাজ থেকে ছাই অপসারণ করা যায় এবং নদীর দূষণ রোধ করা যায়। সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, “যদি সত্যিই ফ্লাই অ্যাশ নদীতে ফেলা হয়, তা হলে তা অত্যন্ত বিপজ্জনক।”

Snapshot 899 1

স্থানীয় প্রশাসন ও কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত জাহাজটি সরানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মৎস্যজীবীরা আশঙ্কা করছেন, যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে তাদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে এবং স্থানীয় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এই পরিস্থিতিতে, স্থানীয় জনগণ ও মৎস্যজীবীরা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ ও কার্যকর পদক্ষেপের অপেক্ষায় রয়েছেন, যাতে মুড়িগঙ্গা নদীর পরিবেশ ও তাদের জীবিকা রক্ষা পায়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments