Fire price market before brother drops:বাজারের অবস্থা এখন সত্যিই অগ্নিমূল্যের মতো। ভাইফোঁটা উৎসবের আগে থেকেই শাকসবজি, ফলমূল, মিষ্টি, এবং বিশেষ করে মাছের দামের উপর বাড়তি চাপ পড়েছে। বিগত কয়েক মাস ধরে মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা যেন সাধারণ মানুষের গৃহস্থালির উপর পড়েছে। বাজারে সবজির দাম এতটাই বেড়ে গেছে যে সাধারণ মানুষের পক্ষে প্রতিদিনের বাজার করা রীতিমতো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে আলু, পেঁয়াজ, টমেটোসহ বিভিন্ন শাকসবজির দাম আকাশছোঁয়া।
ভাইফোঁটার আগে যে দামের বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে তা মিষ্টির দোকানগুলোতেও স্পষ্ট। মিষ্টি কেনার হিড়িক পড়েছে, কারণ ভাইফোঁটার দিন ভাই-বোনেরা একে অপরকে মিষ্টিমুখ করানো এবং শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য উপহার দেন। স্থানীয় মিষ্টি ব্যবসায়ী সুব্রত ঘোষ জানালেন, “ভাইফোঁটার সময় মিষ্টির চাহিদা বাড়ে, কিন্তু কাঁচামালের দামের উর্ধ্বগতির কারণে আমরা কিছুটা সমস্যার মধ্যে রয়েছি। তবে এই বিশেষ উৎসবে মানুষ মিষ্টি কিনতে চায় এবং চাহিদা পূরণে আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হচ্ছে।”

শুধু মিষ্টিই নয়, মাছের বাজারেও বিশেষ কদর লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভাইফোঁটাতে বেশিরভাগ পরিবারে ইলিশ, চিংড়ি, পমফ্রেটসহ অন্যান্য মাছের চাহিদা থাকে। শনিবার পর্যন্ত মাছের দাম ছিল কিছুটা নিয়ন্ত্রণে, কিন্তু রবিবার অর্থাৎ ভাইফোঁটার দিন দামের আরও বাড়তি চাপ আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মাছ বিক্রেতা রমেন মল্লিক বলেন, “ভাইফোঁটার আগে মাছের চাহিদা বাড়ছে, তবে এই সময় মাছ সংগ্রহেও কিছুটা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। তবু আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি চাহিদা মেটানোর।”
এ অবস্থায় সাধারণ ক্রেতারা যথেষ্ট চিন্তিত। বাজারে ভিড় রয়েছে প্রচুর, কিন্তু অনেকেই পণ্য কিনতে আসলেও দাম শুনে খানিকটা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এক গৃহিণী, মল্লিকা রায় বলেন, “প্রতিদিন বাজারে এসে দেখি সবকিছুর দামই বাড়ছে। এবার ভাইফোঁটার জন্য কিছু কেনাকাটা করতে এসেছিলাম, কিন্তু যে দামে সব বিক্রি হচ্ছে তা সত্যিই চিন্তার বিষয়। এভাবে যদি দামের বাড়তি চাপ থাকে, তাহলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের অবস্থা কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে।”
ভাইফোঁটার আগে বাজারের এই অগ্নিমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অনেকের মতে, উৎপাদন খরচ, পরিবহন, এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের লাভের কারণে এমন দামের চাপ পড়েছে। তাছাড়া শীতের শুরুতে অনেক সবজির সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে, যা দামের উপর প্রভাব ফেলেছে। বিশেষজ্ঞ মৃণাল সেন বলেন, “বাজারে যে মূল্যবৃদ্ধি চলছে তা উৎসবের চাহিদা এবং সীমিত সরবরাহের কারণে আরও বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ভাইফোঁটার সময় মানুষ কিছুটা অতিরিক্ত ব্যয় করে, ফলে এই সময় বাজারের উপর আরও চাপ সৃষ্টি হয়।”
এভাবে বাজারের এই অগ্নিমূল্য পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপ সৃষ্টি করছে। ভাইফোঁটার আগে এই মূল্যবৃদ্ধি তাদের মধ্যে আশঙ্কা ও উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে। যদিও এই উৎসব ঘিরে মানুষের ভিড় ও কেনাকাটার আবেগ রয়েছে, তবু এই দামের চাপে সাধারণ মানুষ অতিরিক্ত চাপের মধ্যে পড়ছে। এখন প্রশ্ন ওঠে, ভবিষ্যতে এই মূল্যবৃদ্ধি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে এবং কিভাবে সাধারণ মানুষের উপর এর প্রভাব কমানো যাবে।

বাজার পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে উৎসবের সময় বাজার নিয়ন্ত্রণে রেখে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা উচিত। তবে একইসঙ্গে জনসাধারণের দায়িত্বও রয়েছে, যাতে তারা বাজারে সঠিক জিনিস এবং ন্যায্য দামে কেনাকাটা করে এবং অপ্রয়োজনীয় ভিড় তৈরি না করেন।