Fire breaks out at DPL unit 8, power shortage feared:দুর্গাপুরের বুকে আচমকা বিকট শব্দ, কালো ধোঁয়া আর আগুনের লেলিহান শিখা। গতকাল সন্ধ্যায় দুর্গাপুর প্রজেক্ট লিমিটেড (ডিপিএল)-এর ৮ নম্বর ইউনিটে ঘটে গেল এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। রাজ্য সরকারের অধীনস্থ এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ৮ নম্বর ইউনিটটি সম্পূর্ণরূপে অচল হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ। দুর্গাপুর শহর থেকে শুরু করে আশেপাশের অঞ্চলগুলোতে বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা বাড়ছে।দুর্গাপুরের বুকে আচমকা বিকট শব্দ, কালো ধোঁয়া আর আগুনের লেলিহান শিখা। গতকাল সন্ধ্যায় দুর্গাপুর প্রজেক্ট লিমিটেড (ডিপিএল)-এর ৮ নম্বর ইউনিটে ঘটে গেল এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। রাজ্য সরকারের অধীনস্থ এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ৮ নম্বর ইউনিটটি সম্পূর্ণরূপে অচল হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ। দুর্গাপুর শহর থেকে শুরু করে আশেপাশের অঞ্চলগুলোতে বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা বাড়ছে।স্থানীয় সময় অনুযায়ী সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ ডিপিএলের ৮ নম্বর ইউনিটের ট্রান্সফরমার স্টেশনে একটি বিকট শব্দ শোনা যায়। তারপরেই আগুন লেগে যায় ৬.৬ কেভি ট্রান্সফরমার বাসে। বিদ্যুৎ সাপ্লাই ব্রেকারেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
মুহূর্তের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। কারখানার কর্মী সুনীল ঘোষ জানালেন, “আগে একটা ছোট্ট স্পার্ক দেখা গিয়েছিল। তারপরেই হঠাৎ বিস্ফোরণ। আমরা সবাই দ্রুত সরে যাই। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।’’আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, অতিরিক্ত তাপমাত্রা বা যান্ত্রিক ত্রুটি থেকেই এই আগুন লেগেছে।ডিপিএলের ৮ নম্বর ইউনিটটি ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করত। এই ইউনিটটি ২০১৪ সালের ১ অক্টোবর থেকে চালু হয়। এটি নির্মাণ করেছিল ভারতীয় সংস্থা ভেল (BHEL)। আট নম্বর ইউনিটটির বন্ধ হয়ে যাওয়া মানে বড় ধাক্কা রাজ্যের বিদ্যুৎ সরবরাহে। কারণ বর্তমানে দুর্গাপুর প্রজেক্ট লিমিটেডে শুধুমাত্র ৭ নম্বর ইউনিটটিই চালু রয়েছে।৭ নম্বর ইউনিটটি ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। এটি চালু হয়েছিল ২০০৮ সালের ৩০ এপ্রিল। কিন্তু এখন সেই ৭ নম্বর ইউনিটের উপরই পুরোপুরি নির্ভর করতে হচ্ছে ডিপিএল কর্তৃপক্ষকে। যদি সেই ইউনিটেও কোনও সমস্যা হয়, তবে রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি আরও সঙ্কটজনক হয়ে উঠতে পারে।দুর্ঘটনার পর দুর্গাপুর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা শুরু হয়েছে।

ডিপিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। তবে মেরামত শেষ হতে কতদিন লাগবে, সে বিষয়ে এখনো কোনও সুনির্দিষ্ট সময়সীমা জানানো হয়নি।ডিপিএলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র জানিয়েছেন, “আমরা দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু করেছি। কেন এই আগুন লাগল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বিদ্যুৎ ঘাটতি হলে গ্রীষ্মের এই তীব্র গরমে মানুষকে ভুগতে হবে। দুর্গাপুরের এক ব্যবসায়ী বলেন, “এই গরমে বিদ্যুৎ না থাকলে কীভাবে দোকানপাট চালাব? আমরা তো বিদ্যুতের উপর নির্ভর করেই ব্যবসা করি।’’দুর্ঘটনার পর থেকেই দুর্গাপুরের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। এলাকার এক গৃহবধূ মিতা রায় বলেন, “আমাদের বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। এসি, ফ্যান কিছুই চলছে না। ছোট বাচ্চাটারও কষ্ট হচ্ছে। কবে ঠিক হবে কেউ বলতে পারছে না।’’ডিপিএল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। ডিপিএলের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, “এই ধরনের বড় ইউনিটে আগুন লাগা খুবই উদ্বেগজনক। আমরা দেখছি, সুরক্ষা ব্যবস্থা ঠিকমতো রক্ষিত হচ্ছিল কি না।’’দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দুর্গাপুর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের মেয়র রোহিত বসু ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি বলেন, “এই আগুন আমাদের সতর্ক করল। বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে নিয়মিত নজরদারি প্রয়োজন। এখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে।’’