Even though the low pressure has moved west, rain is likely to continue in Bengal : বর্ষাকালের আবহাওয়া মানেই বাংলায় অস্থিরতা। কখনও টানা বৃষ্টি, কখনও আবার দাবদাহের রেশ—এই নিয়েই আবহাওয়ার খেলায় বিভ্রান্ত জনজীবন। গত কয়েকদিন ধরেই গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গজুড়ে নিম্নচাপের প্রভাবে আকাশ ছিল মেঘলা, বৃষ্টি ছিল কোথাও টানা তো কোথাও থেমে থেমে। অনেকেই মনে করেছিলেন এবার বুঝি সেই নিম্নচাপ কেটে গেল, শান্তির নিঃশ্বাস ফেলা যাবে। কিন্তু বাস্তবতা হল, নিম্নচাপ পশ্চিমে সরে গেলেও বাংলার বৃষ্টির পর্ব এখানেই থেমে থাকছে না। মৌসুমী অক্ষরেখার সক্রিয় অবস্থান বজায় থাকায় রাজ্যের উপর আকাশ এখনও ভারী, বৃষ্টির সম্ভাবনাও তেমনই রয়েছে। জনজীবনে তারই প্রভাব পড়ছে চোখে পড়ার মতো করে।আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, নিম্নচাপ বর্তমানে ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশার দিকে সরে গিয়েছে। তবে এটি আর ততটা শক্তিশালী নয়। গভীর নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে শক্তি হারিয়ে ফেলছে, ফলে এর তীব্রতা যেমন কমবে, তেমনি সরাসরি প্রভাব থেকেও কিছুটা স্বস্তি পাবে বাংলা। কিন্তু মৌসুমী অক্ষরেখা সক্রিয় থাকায় রাজ্যের বেশিরভাগ জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েই যাচ্ছে।
বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া—এই তিন জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই অঞ্চলে আকাশ থাকবে মেঘাচ্ছন্ন, সঙ্গে দমকা হাওয়া বইতে পারে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিমি গতিতে। এছাড়া বাকি দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে মেঘলা আকাশ এবং অনিয়মিত বৃষ্টিপাতেই দিন কেটেছে।উত্তরবঙ্গেও একই চিত্র। দার্জিলিং, কালিম্পং, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি—এই পাঁচ জেলায় প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এর ফলে পাহাড়ি এলাকায় ধসের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে, সেইসঙ্গে জল জমার কারণে জনজীবনও ব্যাহত হতে পারে।কলকাতার পরিস্থিতিও খুব আলাদা নয়। শনিবার শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ছিল ৯২ থেকে ১০০ শতাংশের মধ্যে, ফলে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি বেশ ভালোভাবেই টের পেয়েছেন কলকাতাবাসীরা। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করবে বলেই অনুমান করছেন আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়ার এই পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রশাসন। মৎস্যজীবীদের জন্য জারি করা হয়েছে বিশেষ নিষেধাজ্ঞা—তাদের মঙ্গলবার পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সমুদ্র উত্তাল থাকার সম্ভাবনা থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে আবহাওয়া দফতরের তরফ থেকে। এর পাশাপাশি জেলা প্রশাসনগুলি সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে ত্রাণ ও উদ্ধার বাহিনীকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছে।