...
Thursday, April 3, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যবন্ধ পেনশন চালুর দাবিতে বিক্ষোভে ERMC

বন্ধ পেনশন চালুর দাবিতে বিক্ষোভে ERMC

ERMC protests demanding reinstatement of closed pensions: শনিবার রানীগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের সামনে ইস্টার্ন রেলওয়ে মেন্স কংগ্রেস (ERMC)-এর উদ্যোগে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কর্মরত রেল কর্মীরা দীর্ঘ ২০ বছর ধরে বন্ধ থাকা ওল্ড পেনশন স্কিম (OPS) পুনরায় চালুর দাবিতে এই বিক্ষোভে অংশ নেন। দুপুর তিনটে থেকে শুরু হওয়া এই প্রতিবাদ সভা প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে, যেখানে রেল কর্মচারীরা তাদের ক্ষোভ উগরে দেন। ২০০৪ সালে কেন্দ্রীয় সরকার ওল্ড পেনশন স্কিম বন্ধ করে নতুন পেনশন স্কিম (NPS) চালু করে। এই সিদ্ধান্তের ফলে কর্মচারীরা আর অবসরের পর স্থির মাসিক পেনশন সুবিধা পাচ্ছেন না, যা তাঁদের অবসরকালীন আর্থিক নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পুরোনো পেনশন স্কিমে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পেতেন, যা তাঁদের আর্থিক নিশ্চয়তা দিত। কিন্তু নতুন স্কিমে এই সুবিধা না থাকায় কর্মচারীদের মধ্যে গভীর অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। কর্মীদের দাবি, নতুন পেনশন স্কিমের তুলনায় পুরোনো পেনশন স্কিম ছিল অনেক বেশি নিরাপত্তামূলক এবং নির্ভরযোগ্য। ফলে তারা মনে করছেন, ওল্ড পেনশন স্কিম পুনরায় চালু না হলে ভবিষ্যতে তাঁদের অবসর জীবন আর্থিক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে। এই কারণেই তাঁরা ফের পুরোনো পেনশন স্কিম চালুর জন্য আন্দোলনে নেমেছেন।

বিক্ষোভকারীদের নেতৃত্বে ছিলেন ইস্টার্ন রেলওয়ে মেন্স কংগ্রেসের সভাপতি পিকে সিং এবং সংস্থার সি ও বি দশরথ ঠাকুর। বক্তৃতা দিতে গিয়ে পিকে সিং বলেন, “রেলওয়েতে কর্মরত কর্মচারীদের অধিকার হরণ করা হয়েছে। তাঁদের অবসরকালীন আর্থিক সুরক্ষা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। যদি পুরোনো পেনশন স্কিম দ্রুত পুনরায় চালু না হয়, তাহলে আমরা দেশজুড়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।” দশরথ ঠাকুরও একই সুরে জানান, কর্মীদের এই ন্যায্য দাবিকে উপেক্ষা করা হলে তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবেন। রানীগঞ্জ স্টেশনের সামনে এই বিক্ষোভে প্রায় শতাধিক রেল কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন। তাঁদের হাতে ছিল বিভিন্ন দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড, এবং তাঁরা “ওল্ড পেনশন স্কিম চাই” শীর্ষক নানা স্লোগান দিতে থাকেন। তবে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ ছিল এবং রেল পরিষেবায় কোনো প্রভাব পড়েনি।এই বিক্ষোভের সময় স্টেশন চত্বরে যাত্রীদের সাময়িক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা এবং যাত্রীরা এই বিক্ষোভের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা সুধাংশু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রেল কর্মচারীরা এত বছর ধরে নিরলস পরিশ্রম করেন। তাঁদের অবসরের পর নিশ্চিন্ত জীবন পাওয়ার অধিকার রয়েছে। সরকারকে অবশ্যই তাঁদের দাবিগুলি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত।” রেল কর্মচারী রমেশ ঘোষ বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছি। আমাদের জীবনের সিংহভাগ সময় রেল পরিষেবায় দিয়েছি। এখন অবসরের পর আমরা যদি পেনশন না পাই, তাহলে আমাদের অবস্থা কী হবে? সরকারকে আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে হবে।”অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরোনো পেনশন স্কিম পুনরায় চালু করা হলে সরকারের উপর বাড়তি আর্থিক চাপ পড়তে পারে। কারণ OPS-এর মাধ্যমে কর্মচারীরা অবসরের পর একটি স্থির পরিমাণ মাসিক পেনশন পান, যা সরকারের বাজেট থেকে মেটানো হয়। অন্যদিকে, নতুন পেনশন স্কিমে (NPS) কর্মচারীদের নিজস্ব সঞ্চয়ের উপর নির্ভর করতে হয়, যা বাজারের ওঠানামার উপর নির্ভরশীল। কিন্তু কর্মচারীরা মনে করছেন, OPS-এর মাধ্যমে তাঁরা তাঁদের ভবিষ্যতের জন্য আর্থিকভাবে বেশি নিরাপদ ছিলেন।

ezgif 38876a592d3d2c

ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ওল্ড পেনশন স্কিম পুনরায় চালুর দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছে। পাঞ্জাব, রাজস্থান, এবং ছত্তিশগড়ের মতো কিছু রাজ্যে ইতিমধ্যেই OPS পুনরায় চালু করা হয়েছে, যা অন্যান্য রাজ্যের কর্মীদেরও উৎসাহিত করেছে। রানীগঞ্জের এই বিক্ষোভ সেই বৃহত্তর আন্দোলনেরই একটি অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে রেল কর্মচারীরা তাঁদের ক্ষোভ এবং হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং সরকারকে তাঁদের দাবির গুরুত্ব বুঝতে বাধ্য করার চেষ্টা করছেন।রানীগঞ্জের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলনের ইঙ্গিতবাহী। কর্মচারীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের দাবি পূরণ না হলে তাঁরা পিছু হটবেন না এবং ভবিষ্যতে আরও বড় আন্দোলনে নামবেন। তাঁদের মতে, পুরোনো পেনশন স্কিম শুধু তাঁদের আর্থিক নিরাপত্তাই নয়, বরং তাঁদের প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতারও প্রতীক। তাই তাঁরা তাঁদের অধিকার ফিরে পেতে লড়াই চালিয়ে যাবেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.