Earthquake shakes entire East Midnapore:সাত সকালে আচমকাই কেঁপে উঠল মাটি! যখন সবাই সবে দিনের শুরু করতে ব্যস্ত, তখনই মৃদু কম্পনে চমকে উঠলেন পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দারা। ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ৬টা ১০। কিছুক্ষণ আগেও সব ছিল স্বাভাবিক, কিন্তু এক মুহূর্তেই বদলে গেল পরিস্থিতি। দীঘা, রামনগর, কাঁথি সহ গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জুড়ে লোকজন আতঙ্কিত হয়ে ঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন। কেউ বুঝে উঠতে পারছিলেন না ঠিক কী ঘটছে।রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.৫, যা যথেষ্ট শক্তিশালী ভূমিকম্পের মধ্যে পড়ে। National Center for Seismology তাদের অফিসিয়াল পোস্টে জানায় যে, ভূমিকম্পের উৎসস্থল বঙ্গোপসাগরের গভীরে, প্রায় ৯১ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রবিন্দু ছিল ১৯.৫২ উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৮.৫৫ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে।আতঙ্ক ছড়ালো পূর্ব মেদিনীপুর জুড়েএমন ঘটনা আকস্মিক হওয়ায় দীঘা, রামনগর, কাঁথি, তমলুক-সহ বিভিন্ন জায়গায় মানুষ ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন। অনেকে মনে করেছিলেন, হয়তো বাড়ির ভিত কেঁপে উঠেছে কিংবা কোনো বড় যানবাহন দ্রুত গতিতে চলে যাওয়ার কারণে এই কম্পন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই বোঝা যায়, এটি ভূমিকম্প!
দীঘার এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “হঠাৎ করে মনে হলো ঘর দুলছে! প্রথমে ভেবেছিলাম মাথা ঘুরছে, কিন্তু পরে বুঝতে পারলাম মাটি কাঁপছে। আতঙ্কে বাইরে বেরিয়ে এলাম।” কাঁথির এক দোকানদার বলেন, “সকালবেলা দোকান খুলতে যাচ্ছিলাম, এমন সময় মনে হলো দোকানের শাটার যেন নিজে থেকেই কাঁপছে! তখনই বুঝলাম, ভূমিকম্প হয়েছে।”বাংলার পাশাপাশি ওড়িশা, কলকাতা ও বাংলাদেশেও কম্পনশুধু পূর্ব মেদিনীপুরই নয়, ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে কলকাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি ও পশ্চিম মেদিনীপুরেও। এছাড়াও ওড়িশার বিস্তীর্ণ অঞ্চল, এমনকি বাংলাদেশেও এর কম্পন অনুভূত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বঙ্গোপসাগরে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হওয়ার কারণে এটি উপকূলবর্তী অঞ্চলে বেশি প্রভাব ফেলেছে।কলকাতার এক বাসিন্দা জানান, “সকালবেলা কাজের ব্যস্ততার মাঝেই দেখি জানালার কাঁচ একটু কেঁপে উঠল, প্রথমে ভেবেছিলাম মনে ভুল হচ্ছে, কিন্তু পরে খবর শুনে বুঝলাম সত্যিই ভূমিকম্প হয়েছে।”বিশেষজ্ঞদের মতে, বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকাগুলি ইন্ডিয়ান টেকটোনিক প্লেট ও ইউরেশিয়ান প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই প্লেটগুলির সংঘর্ষের ফলে ভূমিকম্প ঘটে থাকে। সম্প্রতি ভারতীয় ভূখণ্ডে টেকটোনিক প্লেটের মুভমেন্ট বেশি হওয়ায় মাঝেমধ্যেই এমন মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হচ্ছে।ভূতাত্ত্বিক গবেষক দীপঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, “এই ধরনের মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প তেমন ক্ষতিকর নয়, তবে প্লেটের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাসও হতে পারে।”সৌভাগ্যের বিষয়, এই ভূমিকম্পে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি একই জায়গায় একাধিক বার কম্পন হয়, তবে এটি আগামী দিনে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ইঙ্গিত দিতে পারে। ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত শহরগুলিতে বিল্ডিং কোড মেনে ঘরবাড়ি বানানোর পরামর্শ দিয়েছেন