Wednesday, May 14, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যঅপরাধের খবরবদ্রিনাথে রহস্য মৃত্যু দুর্গাপুরের যুবকের

বদ্রিনাথে রহস্য মৃত্যু দুর্গাপুরের যুবকের

Durgapur youth dies mysteriously in Badrinath:বদ্রিনাথের নির্জন পাইন বনের গায়ে হঠাৎই হাওয়ার মতো উড়ে এলো এক দুঃসংবাদ, দুর্গাপুরের এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু। নাম প্রীতম মজুমদার, বয়স মাত্র ২৭। প্রীতম থাকতেন দুর্গাপুরের বি-জোনের এডিশনে তাঁর মামার বাড়িতে। পরিবারের সূত্রে জানা যায়, ৪ তারিখে চাকরির ইন্টারভিউয়ের কথা বলে কলকাতায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। এরপর ১১ তারিখে মামা অতনু দাসের সঙ্গে শেষবারের মতো কথা হয় তাঁর। তারপর থেকেই নিখোঁজ প্রীতম।

বদ্রিনাথে রহস্য মৃত্যু দুর্গাপুরের যুবকের

১৩ তারিখ হঠাৎই আসে সেই ভয়াবহ ফোন, উত্তরাখণ্ডের জোশিমঠ থানার পুলিশ জানায় বদ্রিনাথের কাঞ্চনানালার পাইন গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে প্রীতমের নিথর দেহ। সঙ্গে পাওয়া গেছে কিছু নথিপত্র ও পরিচয়পত্র, যার মাধ্যমে তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হয়। এই খবরে স্তব্ধ দুর্গাপুরবাসী, এডিশনের গলিতে শুরু হয় কান্নার রোল। এলাকাবাসীর একাংশ বলছেন, প্রীতম ছিলেন শান্ত স্বভাবের, লেখাপড়া করে জীবনে কিছু একটা করার চেষ্টা করছিলেন।

তাঁর এমন রহস্যময় মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই। মামা অতনু দাস সংবাদমাধ্যমকে জানান, “ও বলেছিল চাকরির ব্যাপারে কথা বলতে কলকাতায় যাচ্ছে, কিন্তু কোথায় গেল, কীভাবে বদ্রিনাথ পৌঁছাল, আমরা কিছুই জানি না। ১১ তারিখ কথা বলার পর থেকেই ওর ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল, তারপরেই এমন খবর আসবে ভাবিনি। আমি নিজে জোশিমঠ যাচ্ছি, মৃত্যুর আসল কারণ খুঁজে বের করতেই হবে।” স্থানীয়দের মতে, উত্তরাখণ্ডের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে প্রীতমের গমন নিজের ইচ্ছায় না কি কেউ ঠকিয়ে নিয়ে গেছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান আত্মহত্যা হলেও, পরিবারের পক্ষ থেকে তা মানা হচ্ছে না।

তাঁরা চাইছেন, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক। স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দেহের পাশে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি, ফলে রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে। অনেকের মতে, প্রীতম হয়তো কোনও বিপদের মুখে পড়ে এমন পরিণতির শিকার হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে জোশিমঠ থানার এক আধিকারিক। ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। দুর্গাপুরের বহু যুবক-যুবতী যারা চাকরির সন্ধানে ঘুরে বেড়ান, তাঁদের মধ্যে তৈরি হয়েছে একধরনের আতঙ্ক। অনেকেই বলছেন, চাকরির নাম করে কোনও অজানা স্থানে যাওয়ার আগে সাবধান হওয়া উচিত।

Z

এই ঘটনা রাজ্যের বাইরে কর্মসংস্থান খোঁজা যুবসমাজের মধ্যে নতুন করে ভয়ের সঞ্চার করেছে। স্থানীয় কাউন্সিলর এবং সামাজিক সংগঠনগুলি চাইছে বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হোক। এদিকে প্রীতমের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা, তাঁরা সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং রিপোর্ট হাতে এলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এমন এক রহস্যময় মৃত্যু শুধুমাত্র দুর্গাপুর নয়, বরং গোটা রাজ্যের মানুষের মনে প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে—একটা তরতাজা প্রাণ কেন, কীভাবে ঝরে গেল পাহাড়ের কোলে? যতক্ষণ না প্রমাণিত হচ্ছে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ, ততক্ষণ এই গল্প থেমে থাকবে না। সমাজ, প্রশাসন এবং পুলিশের উচিত যৌথভাবে এমন মৃত্যুর পেছনের অন্ধকারটুকু দূর করে পরিবারকে স্বস্তি দেওয়া।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments