Durgapur Subdivision’s annual sports competition held in Panagarh: পানাগড় বাজারের এক ক্লাবের ফুটবল ময়দানে অনুষ্ঠিত হলো ৪০তম দুর্গাপুর মহকুমা স্তরীয় বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। এবারের প্রতিযোগিতাটি হয়ে উঠেছিল এক আনন্দঘন উৎসব, যেখানে ছোটো থেকে বড়ো, সাধারণ মানুষ থেকে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা সবাই মেতে উঠেছিলেন ক্রীড়ার জয়ে। দুর্গাপুর মহকুমার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে, আর তাদের মধ্যে খেলা নিয়ে প্রবল উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো।
প্রতিযোগিতার সূচনার সময় এক গর্বের মুহূর্ত তৈরি হয়, যখন প্রদীপ প্রজ্জ্বলন এবং বেলুন উড়িয়ে এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতার শুভ সূচনা করেন দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায়। পাশাপাশি জাতীয় পতাকা উত্তোলনের দায়িত্বে ছিলেন কাঁকসার বিডিও পর্ণা দে, জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধক্ষ বৈশাখী বন্দোপাধ্যায়, কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভবানী ভট্টাচার্য, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউড়ি এবং গলসির বিধায়ক নেপাল ঘরুই। বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মর্যাদা আরও বেড়ে যায় এবং খুদে প্রতিযোগীদের উৎসাহ ছিল তুঙ্গে।সারা দিনব্যাপী চলা এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় দৌড়, উচ্চ লাফ, দীর্ঘ লাফ, বল ছোড়া, বিস্কুট দৌড়, মাটির হাঁড়ি ভাঙা, সাঁতার, ব্যাটমিন্টন সহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা নিজের সর্বোচ্চ সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে, আর তাদের জয়ের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে গোটা মাঠ। শিক্ষক-শিক্ষিকারা তো বটেই, অভিভাবকরাও উপস্থিত থেকে শিশুদের উৎসাহিত করেন।
প্রতিযোগিতা সম্পর্কে জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধক্ষ বৈশাখী বন্দোপাধ্যায় বলেন, “এমন আয়োজন শুধু ক্রীড়ার জন্যই নয়, এটি শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকের দিনটি শিশুদের জন্য আনন্দের, আর আমরা চাই তারা ভবিষ্যতে আরও বড়ো প্ল্যাটফর্মে নিজেদের প্রতিভার পরিচয় দিক।”অন্যদিকে, মহকুমা শাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলোও সমান গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের ছোটোবেলা থেকেই শারীরিক কসরতের দিকে নজর দিতে হবে। এই ধরনের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা তাদের ভবিষ্যতে আরো বড়ো স্বপ্ন দেখতে সাহায্য করবে।”পানাগড়ের স্থানীয় বাসিন্দারাও এমন আয়োজন দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। তাদের মধ্যে একজন প্রবীণ ব্যক্তি বললেন, “আগে এতো বড়ো করে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হত না। এখন আমাদের ছেলেমেয়েরা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে, এটা গর্বের বিষয়।”
খুদে পড়ুয়ারা প্রতিযোগিতার বিভিন্ন বিভাগে অংশগ্রহণ করে নিজেদের প্রতিভা প্রমাণ করেছে। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় এবং সবাই খুশি মনে বাড়ি ফিরে যায়। তবে শুধু যারা পুরস্কার পেল তারাই নয়, অংশগ্রহণ করা প্রতিটি শিশু নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েছে এবং আগামী দিনে আরও ভালো করার সংকল্প করেছে।মহকুমার বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা যে শুধু এক দিনের খেলা নয়, বরং এটি শিশুদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর এবং তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের এক বড়ো ক্ষেত্র, তা আরও একবার প্রমাণিত হলো। আগামী বছরও এই প্রতিযোগিতাটি আরও বড়ো আকারে আয়োজন করা হবে, এমনটাই আশা করছেন আয়োজকরা।