Dum Dum Anand Mela: স্বামী বিবেকানন্দের ১৬৩তম জন্মদিন উপলক্ষে দক্ষিণ দমদম পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ছয় দিনব্যাপী এক অনবদ্য আনন্দমেলার আয়োজন করা হয়েছে। এই মেলায় উপচে পড়া ভিড় এবং উৎসবের আবহ দমদমের মানুষদের জীবনে এক অন্য মাত্রা যোগ করেছে। মেলার মূল উদ্যোগে রয়েছেন পৌরপিতা সুকান্ত সেনশর্মা (রাজু), যাঁর নেতৃত্বে এই আয়োজন এলাকাবাসীর হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দমদমের সংসদ সৌগত রায় এবং রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা বিধায়ক ব্রাত্য বসু। তাঁদের উপস্থিতি এবং আনুষ্ঠানিক প্রদীপ প্রজ্বলন মেলার মাহাত্ম্য বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংসদ এবং বিধায়ককে উত্তরীয় পরিয়ে সম্মানিত করেন মেলার আহ্বায়ক সুকান্ত সেনশর্মা। এছাড়াও সদ্য সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড় নরহরি শ্রেষ্ঠাকে বিশেষভাবে সম্মান জানানো হয়। নরহরি এই ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা হওয়ায় তাঁর সম্মাননা এলাকাবাসীর জন্য গর্বের বিষয়। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “এমন উদ্যোগ শুধু মানুষকে বিনোদন দেয় না, এলাকার উন্নয়ন এবং ঐক্যবদ্ধতার দিকেও ইঙ্গিত করে।”
মেলা মানে এক আনন্দময় মিলনক্ষেত্র। বাঁশির সুরে মঞ্চে যখন সংগীত পরিবেশন হচ্ছিল, তখন উপস্থিত হাজারো মানুষের মুখে ফুটে ওঠা মুগ্ধতার ছাপ বলছিল, এই মেলা কেবলমাত্র বিনোদন নয়, এটি একটি আবেগ। এখানে আচার থেকে শুরু করে মোয়া, মোমো থেকে পিঠে—সবকিছুই রয়েছে। গ্রামীণ এবং শহুরে সংস্কৃতির এই মিশ্রণ মেলাকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে।কচিকাঁচাদের জন্য মেলার বিশেষ আকর্ষণ ছিল বিভিন্ন রকম রাইডস। নাগরদোলা থেকে বাউন্সি ক্যাসেল, প্রত্যেকটি স্টলে ছিলো শিশুদের হাসির ঝলকানি। এর সঙ্গে ছিল লটারি, বাউল গানের পরিবেশনা, এবং নানান হস্তশিল্প প্রদর্শনী, যা প্রত্যেক বয়সের মানুষের মন ছুঁয়ে গেছে।
মেলার স্টলগুলির মধ্যে স্থানীয় ছোট ব্যবসায়ীরা তাঁদের জিনিসপত্র প্রদর্শন এবং বিক্রির সুযোগ পেয়েছেন। এ ধরনের উদ্যোগ স্থানীয় অর্থনীতিকেও চাঙ্গা করে। স্টল মালিকরা জানালেন, “এখানে ব্যবসা করতে এসে আমরা যেমন আনন্দ পাই, তেমনই আমাদের পণ্যগুলিও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ পাই।”মেলার একটি বিশেষ আকর্ষণ ছিল আদিবাসী নাচ এবং স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনা। এ ধরনের আয়োজন মানুষের সংস্কৃতিকে তুলে ধরে এবং নতুন প্রজন্মকে এর সঙ্গে পরিচিত হতে সাহায্য করে। মেলার দর্শনার্থীরা বললেন, “এমন আনন্দমেলা আমাদের জীবনের একঘেয়েমি দূর করে। এখানকার পরিবেশ একেবারে ঘরের মতো লাগে।”এই মেলা শুধু বিনোদনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি একটি সামাজিক দায়িত্ব পালন করে। এখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, এবং স্থানীয় উন্নয়নের বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও তুলে ধরা হয়। এলাকার মানুষের একত্রিত হওয়ার এই মঞ্চ, তাঁদের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করার এবং সমাধানের পথে এগোনোর একটি বড় সুযোগ।

সুকান্ত সেনশর্মা বললেন, “এই মেলার মাধ্যমে আমরা শুধু আনন্দ নয়, এলাকার মানুষের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতার বার্তা ছড়াতে চাই। ভবিষ্যতে এমন আরও আয়োজনের মাধ্যমে আমরা দমদমকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।” তাঁর এই কথা যেন এলাকার মানুষের মধ্যে নতুন আশা জাগায়।এই আনন্দমেলা দমদমের মানুষের জীবনে নতুন উচ্ছ্বাস যোগ করেছে। এখানকার মানুষজনের সরল হাসি, তাঁদের ঐক্য, এবং সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা এই মেলাকে বিশেষ করে তুলেছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের আয়োজন আরও বেশি মানুষের অংশগ্রহণ এবং সহযোগিতা পাবে বলে আশা করা যায়।