Dilip Ghosh faces new dangers as he faces family: বৈশাখের গোধূলি বেলায় যখন চারপাশ আলো আর সাজে ভরে উঠছে, তখনই নতুন জীবনের পথে পা রাখলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় নেতা দিলীপ ঘোষ। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের পর এবার তিনি পা রাখলেন ব্যক্তিগত জীবনের এক নতুন অধ্যায়ে। বিজেপি মহিলা মোর্চার নেত্রী রিঙ্কু মজুমদারের সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়লেন দিলীপবাবু। নিউটাউনের তার নিজস্ব বাংলোতেই সারা দিনজুড়ে চলল বিয়ের প্রস্তুতি, সাজসজ্জা, খাওয়া-দাওয়া, আত্মীয়-পরিজনদের আনাগোনা আর সাংবাদিকদের ক্যামেরার ঝলকানিতে এক অন্যরকম রাজনীতিকের ব্যক্তিগত মুহূর্তের সাক্ষী থাকল গোটা বঙ্গ। তবে এই আনন্দঘন মুহূর্তেই হঠাৎ ঘটে গেল এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা—বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়ল একটি সাপ! ঠিক তখনই বাড়ির বাইরে দেখা গেল এক ব্যক্তি লাঠিতে সাপটি পেঁচিয়ে বাইরে বের করে আনছেন আর সেটিকে রাস্তার ধারের এক ঝোপে ছেড়ে দিচ্ছেন। মুহূর্তেই সেই দৃশ্য ভিডিওর মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক মাধ্যমে, আর শুরু হয় তুমুল আলোচনা—দিলীপ ঘোষের নতুন সংসার শুরুতেই এমন ‘শুভ’ ইঙ্গিত কি ভবিষ্যতের জন্য ভালো না খারাপ? যদিও জ্যোতিষ মতে বাড়িতে সাপ ঢোকা শুভ লক্ষণ, এতে বাড়ির সম্পদ ও ঐশ্বর্য বৃদ্ধি হয়, তবে ঘটনাটির সময়ে উপস্থিত বহু মানুষই কিছুটা হলেও বিচলিত হয়েছিলেন। সূত্রের খবর, যেখানে সাপটি দেখা গিয়েছিল, সেটি দিলীপবাবুর মূল বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে, মূল অনুষ্ঠানস্থলের বাইরেই। ফলে সরাসরি অতিথি বা বর-কনের মধ্যে কেউ বিপদে পড়েননি, এবং অনুষ্ঠানের ছন্দও খুব একটা বিঘ্নিত হয়নি।
এই ঘটনার পরে অবশ্য স্থানীয় কয়েকজন জানিয়ে দিয়েছেন, “এই নিউটাউন এলাকায় মাঝে মধ্যেই এমন সাপ দেখা যায়, বর্ষা আসার মুখে ওরা নীড় খুঁজতে বাড়ির চারপাশে চলে আসে। তবে শুভক্ষণে এমন কিছু ঘটলে মনটা একটু দুলে ওঠে বটে।” আর এক আত্মীয়ের বক্তব্য, “এটা ঈশ্বরের কৃপা, যেন সংসার শুরু হতেই বাড়ির উপর স্বয়ং বাসুকি আশীর্বাদ দিয়েছেন।” অন্যদিকে দিলীপ ঘোষ নিজেও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হালকা হাসি মুখে বলেন, “জীবনে অনেক ঝড়-ঝঞ্ঝা পার করে এসেছি, একটা সাপ আসায় ভয় পাব? এখন সংসারেও লড়াই থাকবে, তবে এবার একসঙ্গে লড়ব আমরা।” উল্লেখ্য, দিলীপ ঘোষ এর আগেও বিভিন্ন সময়ে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনায় এসেছেন, তবে বিয়ের সিদ্ধান্ত যেন এক নতুন দিকচক্রবাল খুলে দিল। রাজনৈতিক জীবনে যে তিনি একরকম অনমনীয় ও স্পষ্টভাষী হিসেবে পরিচিত, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি যে এতটা সাধারণ ও আবেগপ্রবণ হতে পারেন তা এই বিয়েতে চোখে পড়ল। তৃণমূল কংগ্রেসের বহু নেতাও দিলীপবাবুকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, কেউ কেউ আবার ঠাট্টা করে বলেছেন, “সাপকে ভয় নেই বলেই বিজেপিতে ছিলেন, এখন সংসারেও সাহস দেখাচ্ছেন।” এই বিয়ের একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্যও আছে—রাজনীতিকদের সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মনোভাব অনেক সময় কৃত্রিম বা রুক্ষ হয়ে থাকে, কিন্তু এমন ব্যক্তিগত মুহূর্ত তাদের মানুষ হিসেবে চিনে নেওয়ার সুযোগ দেয়। পাশাপাশি বিজেপি শিবিরও এই ঘটনাকে ঘিরে প্রচারের সুযোগ নিয়েছে, কারণ দিলীপ ঘোষ দীর্ঘদিন দলের গুরুত্বপূর্ণ মুখ ছিলেন এবং এখনো তিনি দলের ভাবমূর্তি ও মিডিয়া ব্যবস্থাপনার বড় অংশ। রিঙ্কু মজুমদারও বিজেপির মহিলা মোর্চায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন, ফলে এই যুগলের মিলন যেন দলের অভ্যন্তরেও এক নতুন বার্তা বয়ে আনল—সামগ্রিকভাবে এটা যেন রাজনীতির বাইরেও এক মানবিক দিক তুলে ধরল। যাই হোক, একটি বিয়েতে সাপের প্রবেশ শুনলেই অনেকেই আঁতকে উঠবেন, কিন্তু ভারতীয় সংস্কৃতিতে সাপ সবসময়ই শক্তি, সুরক্ষা ও ঐশ্বর্যের প্রতীক—বিশেষ করে বাসুকি নাগ বা মনসা দেবীর উপমায়। সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেকেই মন্তব্য করছেন, “সাপ এসেছে মানেই সংসারে হবে গ্যাঁড়াকল! আবার অনেকে লিখছেন, এটা শুভ সংকেত—নতুন দাম্পত্য জীবনের সূচনায় ঈশ্বরের আশীর্বাদ।”
)
সবমিলিয়ে দিলীপ ঘোষের এই সংসার মুখী পদক্ষেপ যেন রাজনীতির কোলাহলে এক শান্ত, নরম মুহূর্ত এনে দিল। অপ্রত্যাশিত সাপ কাণ্ড সেই মুহূর্তকে আরও রঙিন করে তুলল। তবে শেষ কথা একটাই—এটা তো কেবল শুরু, নতুন জীবনের প্রথম অধ্যায়। সামনে কী অপেক্ষা করছে তা সময়ই বলবে, তবে এই ‘সাপ-সঙ্গী সংসারযাত্রা’ এখন নেটদুনিয়ার হট টপিক! বাংলার রাজনীতিতে এই বিয়ে যে আরও অনেক গল্প, অনেক হাসি, অনেক ট্রোল আর ভালোবাসার জন্ম দেবে, তা বলাই যায়।