Friday, April 11, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যসন্তানদের সময় দিতে বিমানের ডেইলি প্যাসেঞ্জারি!

সন্তানদের সময় দিতে বিমানের ডেইলি প্যাসেঞ্জারি!

Daily passenger on the plane to give time to children!: ভোর ৪টেয় ঘুম থেকে ওঠেন তিনি। তৈরি হয়ে বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন ঠিক ভোর ৫টায়। এরপর ৫টা ৫৫ মিনিটের ফ্লাইট ধরে কুয়ালা লামপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সকাল ৭টা ৪৫-এর মধ্যেই পৌঁছে যান অফিসে। পাঁচদিন ধরে এমনই চলছে মালয়েশিয়ার পেনাংয়ের বাসিন্দা ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাচেল কৌরের। সাধারণ মানুষের কাছে যেখানে প্রতিদিন বিমানযাত্রা বিলাসিতা মনে হতে পারে, সেখানে রাচেলের কাছে এটি একমাত্র উপায় সন্তানদের কাছে থাকার।

চাকরি সামলেও দুই সন্তানকে সময় দেওয়ার জন্যই এই অভিনব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এয়ার এশিয়ার অর্থ দফতরের এই কর্মী বলছেন, ‘‘আমার দুই সন্তান খুবই ছোট, ছেলে ১২ বছরের, মেয়ে ১১-র। ওদের বড় হয়ে ওঠার সময় আমি মিস করতে চাই না। তাই এই পথটাই বেছে নিয়েছি।’’ রাচেলের অফিস কুয়ালা লামপুরে, কিন্তু বাড়ি পেনাংয়ে। দূরত্ব প্রায় সাড়ে ৩৫০ কিলোমিটার! স্বাভাবিকভাবেই, প্রতিদিন গাড়ি বা ট্রেনে যাতায়াত করা অসম্ভব। আগে তিনি অফিসের কাছেই একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন, কিন্তু সন্তানদের থেকে দূরে থাকাটা তাঁর পক্ষে কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। তখনই তিনি ঠিক করেন, প্রতিদিন বিমানে যাতায়াত করবেন।

supmom 1739358153994 1739358156765

প্রথম শুনলে বিষয়টি অবিশ্বাস্য মনে হলেও, রাচেল নিজেই জানান, এটি শুধু সময় বাঁচায় না, খরচও কম হয়। আগে কুয়ালা লামপুরে থাকার জন্য প্রতি মাসে প্রায় ৪২ হাজার টাকা খরচ হত, এখন বিমানযাত্রা মিলিয়ে তার খরচ দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার টাকা। অর্থাৎ, যাতায়াতের মাধ্যম বদলে শুধু পরিবারকে সময় দেওয়াই নয়, সঞ্চয়ও বেড়েছে তাঁর। রাচেলের প্রতিদিনের রুটিন বেশ ব্যস্ত। ভোরবেলা বাড়ি ছেড়ে তিনি যখন উড়ানে ওঠেন, তখন প্রথম কয়েক মিনিট গান শোনেন, তারপর জানালা দিয়ে আকাশ দেখেন— এই সময়টুকুই তাঁর জন্য ‘মি টাইম’। ফ্লাইট থেকে নেমেই শুরু হয় অফিসের ব্যস্ততা। আবার সন্ধ্যায় অফিস শেষ করে উড়ান ধরেন বাড়ি ফেরার জন্য। পেনাং পৌঁছতে রাত সাড়ে ৮টা হয়ে যায়, এরপর পুরো সময়টা পরিবারের জন্য বরাদ্দ। তিনি বলেন, ‘‘আমি যা-ই করি, ১০০ শতাংশ দিয়ে করি। অফিসের মধ্যে থাকলে শুধুই কাজ, আর বাড়ি এলে শুধুই পরিবার।’’ তাঁর এই সিদ্ধান্ত ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়াতেও আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছেন, চাকরি এবং পরিবার সামলানোর জন্য এটি এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তবে অন্যদিকে অনেকে এটিকে অবাস্তব বা শুধুমাত্র বিশেষ কিছু মানুষের জন্যই সম্ভব বলে মনে করছেন। তবে রাচেলের গল্প প্রমাণ করে, ইচ্ছা থাকলে উপায় বেরিয়েই আসে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments