Saturday, April 12, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যসিভিক ভলেন্টিয়ারের দাদাগিরি

সিভিক ভলেন্টিয়ারের দাদাগিরি

Dadagiri of Civic Volunteers:গতকাল রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পাথরপ্রতিমা এলাকায় সিভিক ভলেন্টিয়ার শিব প্রসাদ নায়েক ও তার গাড়িচালক ব্রজ গোপাল মাইতির বিরুদ্ধে গাড়ি চালানোর পাওনা টাকা নিয়ে বচসার জেরে মারামারির ঘটনায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এই ঘটনা ঘিরে কাকদ্বীপ থানার পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। ঘটনাটি ঘটে পাথরপ্রতিমা ব্লকের দূর্বাচটি গ্রাম পঞ্চায়েতের সপ্তমুখী নদীর গঙ্গাধরপুর ব্রিজে। জানা যায়, নির্দিষ্ট আইনের ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে কাকদ্বীপ মহাকুমা আদালতে পাঠানো হয়েছে।

সিভিক ভলেন্টিয়ার হিসেবে শিব প্রসাদ নায়েকের দায়িত্ব ছিল এলাকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা। তবে এই দায়িত্ব পালনের বদলে তিনি নিজেই ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থে অন্যদের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, সিভিক ভলেন্টিয়ারদের এমন আচরণে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন যে, যাদের উপর নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা যদি এই ধরনের আচরণ করেন তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কে নিশ্চিত করবে?

16797230831640136045 civic volunteer

এই ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং তারা দাবি করছেন, “আমরা এভাবে থাকতে পারি না। পুলিশ প্রশাসনের এই ধরনের পদক্ষেপ আমাদের জন্য উদ্বেগজনক। আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব।” আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “সিভিক ভলেন্টিয়ারদের এই ধরনের আচরণ আমাদের আশঙ্কিত করে তুলেছে। আমরা চাই তারা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার না করেন এবং পুলিশ প্রশাসনও যেন কড়া নজরদারি চালায়।”

এই ঘটনার ফলে প্রশ্ন উঠছে যে, সিভিক ভলেন্টিয়ারদের নিয়োগ এবং তাদের প্রশিক্ষণ পদ্ধতি কতটা সঠিক? অনেকেই মনে করছেন, শুধুমাত্র চাকরির প্রয়োজনীয়তা মেটাতে অপ্রশিক্ষিত এবং অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সিভিক ভলেন্টিয়ার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এই অপ্রশিক্ষিত এবং অবহেলিত আচরণই জনমনে প্রশ্ন তুলছে। এ ধরনের ঘটনা সমাজে প্রশাসনের প্রতি আস্থা কমিয়ে দিচ্ছে। প্রশাসনের দায়িত্ববান ব্যক্তিত্বরা বলছেন, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে তার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এবং কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।

স্থানীয় সমাজকর্মী বিমল রায় বলেন, “সিভিক ভলেন্টিয়ারদের নির্দিষ্ট ভূমিকা আছে, যা নিরাপত্তার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে পালন করা উচিত। তবে তাদের নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার বা দাদাগিরি সাধারণ মানুষের জীবনে সংকট তৈরি করছে। আমরা চাই এই বিষয়ে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিক এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য নজরদারি বাড়ানো হোক।”

এই ধরনের ঘটনা একটি প্রভাবশালী বার্তা বহন করে নিয়ে আসছে যে, প্রশাসনিক কাজে যে ব্যক্তিরাই নিযুক্ত হন, তাদের আচরণে দায়িত্ববোধ এবং পেশাদারিত্ব থাকা অত্যন্ত জরুরি। সিভিক ভলেন্টিয়ারদের নিয়োগে এই মূল্যবোধগুলির প্রতি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন যাতে সমাজে নিরাপত্তার পরিবেশ বজায় থাকে এবং জনমনে আস্থা সৃষ্টি হয়।

এই ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের কাজকর্মের ওপর আরও কড়া নজরদারি চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, “এই ধরনের আচরণ আমরা কোনোভাবেই বরদাস্ত করবো না। যারা দায়িত্বে রয়েছেন তাদের কাছে আমরা জনকল্যাণের প্রত্যাশা করি। আইনকে যারা অপব্যবহার করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

image 123650291 4 scaled.jpg?compress=true&quality=80&w=480&dpr=2

এবার দেখার বিষয়, এই ঘটনার পর প্রশাসন এবং সিভিক ভলেন্টিয়ারদের কর্মকাণ্ডে কী ধরনের পরিবর্তন আসে এবং কিভাবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। সাধারণ মানুষ আশা করছেন, প্রশাসন তাদের নিরাপত্তা রক্ষায় আরো কড়া পদক্ষেপ নেবে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনা বন্ধ হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments