Dadagiri of brokers in Lachipur forbidden village caught 5 আসানসোলের কুলটির নিয়ামতপুর ফাঁড়ির লছিপুর যৌনপল্লীতে দালালদের দাদাগিরি ও অবাধ দৌরাত্ম আবারও প্রকাশ্যে এলো। বুধবার রাতে মালদহ জেলার ফারাক্কা থেকে আসা তিন গ্রাহককে মারধর করে প্রায় ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা লুট করার অভিযোগে পাঁচজন দালালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় পুলিশের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে কিছু অর্থ উদ্ধার হলেও যৌনপল্লীর এই ধরণের ঘটনা আবারও সমাজের এক অন্ধকার দিককে সামনে এনেছে।মালদহের ফারাক্কা থেকে আসা তিনজন ব্যক্তি লছিপুর যৌনপল্লীতে যান। তাদের একটি এসি ঘরে নিয়ে যায় দালালরা। রাত গভীর হলে তাদের কাছে ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা দাবি করে দালালরা। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাদের বেধড়ক মারধর করা হয় এবং জামাকাপড় ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এমনকি তাদের ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইলের হুমকিও দেওয়া হয়। প্রায় ২ লাখ ৬৩ হাজার টাকা বিভিন্ন ডিজিটাল পদ্ধতিতে আদায় করে দালালরা।
এই সময় সুযোগ বুঝে এক ব্যক্তি পালিয়ে গিয়ে জিটি রোডে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের কাছে সাহায্য চান। এরপর নিয়ামতপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ অখিল মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশ যৌনপল্লীতে অভিযান চালিয়ে পাঁচজন দালালকে গ্রেফতার করে এবং ২ লাখ ৭ হাজার টাকা উদ্ধার করে।বৃহস্পতিবার ধৃত পাঁচজনকে আসানসোল আদালতে তোলা হয়। বিচারক শাহওয়াজ আলম, লাছু সরকার এবং আফরোজ আনসারিকে চারদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। বাকি দুই অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা হবে এই চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত।পুলিশের এক আধিকারিক জানান, এই যৌনপল্লীতে গ্রাহকদের হেনস্থা করা বা মারধরের ঘটনা নতুন নয়। আগেও এই ধরণের অভিযোগ এসেছে। তবে পুলিশি তৎপরতা সত্ত্বেও এই চক্র থামানো সম্ভব হচ্ছে না। দালালদের প্রভাব এতটাই বেশি যে এখানকার বাসিন্দারাও অনেক সময় মুখ খুলতে সাহস পান না।লছিপুর এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “এই যৌনপল্লী দীর্ঘদিন ধরে চললেও এখানে দালালদের অত্যাচার দিন দিন বাড়ছে। বাইরে থেকে যারা এখানে আসে, তাদের নিরাপত্তা নেই। পুলিশ ব্যবস্থা নিলেও কিছুদিন পর আবার একই ঘটনা ঘটে।”
অন্য একজন বলেন, “পুলিশ যদি নিয়মিত টহলদারি করে এবং দালালদের গ্রেফতার করে, তবে এই সমস্যা কিছুটা কমতে পারে। কিন্তু দালালদের সঙ্গে অনেক বড় চক্র জড়িত। তাদের ধরা না গেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না।”এই ধরণের ঘটনা রোধে পুলিশি টহল বাড়ানো এবং কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। যৌনপল্লীর দালালদের চক্র ভাঙতে গোয়েন্দা বিভাগকে আরও সক্রিয় হতে হবে। পাশাপাশি, স্থানীয় প্রশাসন এবং সমাজসেবী সংগঠনগুলোর যৌথ উদ্যোগে সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং যারা এই চক্রের শিকার, তাদের সাহায্যের হাত বাড়াতে হবে।আসানসোলের কুলটি যৌনপল্লীর এই ঘটনা সমাজের এক গভীর সমস্যার প্রতিফলন। পুলিশি হস্তক্ষেপ এবং কিছু অর্থ উদ্ধার হওয়া ইতিবাচক দিক, তবে এই ধরণের অপরাধ বন্ধ করতে হলে প্রশাসনকে আরও কড়া এবং সক্রিয় হতে হবে। যৌনপল্লীর এই অন্ধকার দিকের সমাধানে প্রয়োজন আইন, প্রশাসন এবং সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টা।