Cooch Behar is getting dressed up for Christmas:কোচবিহার জেলার বড়দিনের আয়োজন প্রতিবছরই চোখ জুড়ানো। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নেই। কোচবিহারের বাবুরহাট এলাকার ঐতিহ্যবাহী চার্চটি এবং তার আশপাশের এলাকা বড়দিন উপলক্ষে কেমন যেন এক রূপকথার দেশে পরিণত হয়। এই চার্চটি ১৮৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর দুই পাশে রয়েছে দৃষ্টিহীনদের জন্য বিদ্যালয় ও ছাত্রাবাস। চার্চ এবং এর চারপাশের এলাকা সুন্দর করে সাজানো হয় প্রতি বছর। করোনা পরবর্তী সময়ে এই উৎসব আরও বেশি প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। প্রতিবছরের মতো এই বছরও হাজার হাজার মানুষ চার্চে জড়ো হয়েছেন উৎসব উপভোগ করতে। চার্চের ক্যাম্পাসে একটি খড়ের ঘরও বানানো হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা হয়।

এই উৎসবের প্রভাব কোচবিহারের স্থানীয় সম্প্রদায়ের উপর অত্যন্ত ইতিবাচক। উৎসবের সময় স্থানীয় ব্যবসা ও হাতের তৈরি পণ্যের বাজার প্রসারিত হয়, যা অর্থনৈতিকভাবে অনেক সুবিধা যোগায়। পর্যটনও বেড়ে যায় এই সময়ে, যেহেতু বহু মানুষ দূর দূরান্ত থেকে এই চার্চ দেখতে আসেন। চার্চের ফাদার জর্জ মার্টিন বলেন, “বড়দিন আমাদের সম্প্রদায়ের জন্য শুধু উৎসব নয়, এটি একতা ও শান্তির প্রতীক। প্রতি বছর আমরা একে অপরকে সাহায্য করে থাকি এবং সবাই মিলে একসঙ্গে উদযাপন করি।”
ভবিষ্যতের দিক থেকে দেখলে, এই উৎসব কোচবিহারের জন্য একটি স্থায়ী পর্যটন আকর্ষণ হয়ে উঠতে পারে, যা সারা বছর ধরে অর্থনৈতিক সুবিধা এনে দিতে পারে। স্থানীয় প্রশাসন এবং চার্চ কমিটি ইতিমধ্যেই উৎসবকে আরও বড় করে তোলার কথা ভাবছে, যাতে কোচবিহারের সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতিক ধারাকে পুরো দেশের সামনে তুলে ধরা যায়। এমন একটি পরিকল্পনা স্থানীয় সম্প্রদায়কে আরও বেশি সংহত করে তুলবে এবং সবাইকে এক ছাতার নিচে আনবে।কোচবিহার জেলা প্রতি বছর বড়দিনে এক অনন্য সাজে সেজে ওঠে, যা দেখতে দেখতে পুরো এলাকায় এক উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। কোচবিহারের বাবুরহাট এলাকার প্রাচীন চার্চটি এবং এর আশপাশের এলাকা এই সময়টিতে বিশেষভাবে সাজসজ্জায় মোড়ানো হয়। ১৮৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই চার্চটির ইতিহাস ও ঐতিহ্য স্থানীয় মানুষের হৃদয়ে গভীরভাবে গেঁথে আছে। চার্চের দু’পাশে অবস্থিত দৃষ্টিহীনদের জন্য বিদ্যালয় ও ছাত্রাবাসও এই সাজের অংশ হয়ে ওঠে।
বড়দিনের আগে থেকেই চার্চটি এবং এর আশপাশের এলাকা বিভিন্ন আলোকসজ্জা, ফুল এবং অন্যান্য সজ্জাদ্রব্য দিয়ে সাজানো হয়। এই সাজসজ্জা করতে গোটা সম্প্রদায়ের মানুষ একত্রিত হয়, যা সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও সহযোগিতার এক অনুপম নিদর্শন তৈরি করে। প্রতিবছর বড়দিনের উদযাপন দিনটিতে প্রায় এক হাজারেরও বেশি মানুষ চার্চে জড়ো হন, যারা প্রার্থনা, গান, এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এই বছর করোনা পরবর্তী পরিস্থিতির উন্নতির পর এই উৎসবের আয়োজন আরও বিশেষ মাত্রা পেয়েছে।
উৎসবের সময় চার্চের ক্যাম্পাসে বিশেষ একটি আকর্ষণ থাকে যা হল খড়ের ঘর। এই খড়ের ঘরটি ঐতিহাসিক যীশুর জন্মের দৃশ্যাবলীকে পুনরুজ্জীবিত করে তোলে, যা উৎসবের মূল থিমকে বহন করে। স্থানীয় শিল্পীরা ও স্বেচ্ছাসেবীরা এই খড়ের ঘরের সাজসজ্জা ও মূর্তিগুলি তৈরি করে থাকেন।

এই উৎসব কোচবিহারের অর্থনীতির উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। উৎসবের দিনগুলিতে স্থানীয় বাজারগুলোতে ব্যবসা বেড়ে যায়, পর্যটকদের আগমনে হোটেল ও রেস্তোরাঁর চাহিদা বৃদ্ধি পায়। স্থানীয় শিল্প ও হস্তশিল্পের পণ্য বিক্রি হয় বেশি, যা অনেক স্থানীয় পরিবারের জীবনমান উন্নয়নে সাহায্য করে।
চার্চের ফাদার জর্জ মার্টিন এবং অন্যান্য ধর্মীয় নেতারা বড়দিনের এই আয়োজনকে শুধুমাত্র একটি উৎসব হিসেবেই দেখেন না, বরং একে তারা সম্প্রদায়ের সংহতি ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে দেখেন। এই উৎসব প্রতি বছর স্থানীয় মানুষদের মধ্যে নতুন করে সামাজিক বন্ধন সৃষ্টি করে